অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেছেন, উপকূলীয় মানুষের জানমাল রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে সকলের সহযোগিতা চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনোয়ারার উপকূলবাসীকে রক্ষার জন্য নতুন করে বেড়িবাঁধের অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। চলতি অর্থবছরে বেড়িবাঁধ নির্মাণে ৩৩৬ কোটি টাকার নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পের কাজে যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম না হয় সে ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটায় আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর উপকূলীয় বাইঘ্যের ঘাট এলাকার বেড়িবাঁধ পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সদ্য বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময়ে আমি সার্বক্ষণিক আনোয়ারার উপকূলের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে খোঁজ–খবর নিয়েছি। এলাকার মানুষ আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিওসহ নানা তথ্য দিয়ে সার্বক্ষণিক আপডেট দিয়েছিলেন। এতে দেখা যায়–বিভিন্ন জায়গায় ঢেউয়ের কারণে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের শঙ্কা ছিল। সেসময় সরেজমিনে বিষয়টি পরিদর্শন করতে বর্তমান নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজাম্মেল হক ভাইকে পাঠিয়েছিলাম। গত কিছুদিন আগেও আমি পড়ুয়া পাড়া এলাকার বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে এসেছিলাম। তখন পরিস্থিতি বিবেচনায় ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে যেখানে বেড়িবাঁধ অরক্ষিত রয়েছে সেসব জায়গায় জিও ব্যাগ বসানো হয়। ইনশাআল্লাহ চলতি বছরে নতুন বরাদ্দের কাজ শুরু হবে। আশা করি চলমান বেড়িবাঁধের ভাঙন সমস্যা বেশি দিন থাকবে না।
স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বেড়িবাঁধ আপনাদের সম্পদ। আপনারা বেড়িবাঁধের কাজের বিষয়ে তদারকি করবেন। কাজে কোনো ধরনের অনিয়ম সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চায় না, বাংলাদেশের কোনো জনগণ অরক্ষিত থাকুক, ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে কোনো জনগণ আতংকে থাকুক। তাই এলাকার উন্নয়ন ও বেড়িবাঁধের কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার যায় সে ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ, আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজাম্মেল হক, যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ছাবের আহমদ চৌধুরী–সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর অর্থ প্রতিমন্ত্রী রায়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপজেলা তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন। আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলমগী হোসেন ও মোহাম্মদ ইসহাকের যৌথ সঞ্চালনায় ও সৈয়দ নুরের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শিখেছি জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয় জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য এবং সেবার মাধ্যমে জনগণের মন জয় করা হচ্ছে জনপ্রতিনিধির কাজ। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সদ্য ঘোষিত ২৪–২৫ অর্থ বছরের বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পরিচালিত হবে। আর কয়েক মাস পর বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হবে। আপনারা স্থানীয় হিসেবে বেড়িবাঁধের কাজ তদারকি করবেন এবং কাজে সহযোগিতা করবেন। নিজেদের মধ্যে ঝামেলাকে কেন্দ্র করে যাতে বেড়িবাঁধের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সমস্যা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী, স্বাচিপের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ডা. নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন, চাতরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইয়াছিন হিরু, মাস্টার ফরিদুল কবির প্রমুখ।