‘মশা নিয়ে গবেষণার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে একটি গবেষণাগার চালু করা হবে। এটি চালু হবে এপ্রিল মাসের মধ্যে’।
গত ৩০ মার্চ এ ঘোষণা দেন চসিকের তৎকালীন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এদিন হালিশহরের ফইল্যাতলী বাজার সংলগ্ন মহেশখালে মশক নিয়ন্ত্রণে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম উদ্বোধনকালে এ ঘোষণা দেন তিনি। এরপর সাড়ে ৪ মাসেরও বেশি সময় অতিক্রম হয়েছে। এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি সেই গবেষণাগারের।
জানা গেছে, টাইগারপাস নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে গবেষণাগারটি গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে লার্ভা থেকে পূর্ণাঙ্গ মশাতে রূপান্তরের জন্য স্পেশাল নেট, লার্ভা টেস্ট এর জন্য বক্স স্থাপনসহ বেশ কিছু অবকাঠামোগত অগ্রগতিও হয়েছে। কিন্তু ল্যাব পরিচালনায় বা পরীক্ষা–নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চসিকে টেকনিক্যাল পার্সন না থাকায় ল্যাবের কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।
তবে চসিকের সংশ্লিষ্ট কমকর্তারা জানিয়েছেন, গবেষণাগার চালু না হলেও মশক নিধন কার্যক্রম থেমে নেই। চলতি ডেঙ্গু মৌসুমকে কেন্দ্র করে গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মশক নিধন কার্যক্রমে জোর দেয়া হয়েছে। যা আগামী অক্টোবর মাস পর্যন্ত চলবে।
এদিকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে গতবছরের তুলনায় চলতি বছরের গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের হার অনেক কম। তাই ডেঙ্গু নিয়ে সচেতন থাকতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আজ পালিত হবে বিশ্ব মশা দিবস। গতবছর এই দিনে নগরে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এ বছর কোনো কর্মসূচি নেই চসিকের। অবশ্য গতবার মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা ছিল। এ বছর কোনো নির্দেশনা আসেনি।
এদিকে গবেষণাগারের বিষয়ে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি আজাদীকে বলেন, গবেষণাগারের অবকাঠামোগত কাজ প্রায় হয়ে গেছে। টেকনিক্যাল পার্সন না থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। গবেষণাগার চালুর পর কি সুবিধা পাওয়া যাবে জানতে চাইলে বলেন, আমরা প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখব কোন ধরনের ওষুধ কোন ধরনের মশার জন্য কার্যকর। এরপর গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে এলাকাভিত্তিক ওষুধ ছিটানো এবং কার্যক্রম গ্রহণ করব। গবেষণাগার চালু না হলেও মশক নিধন কার্যক্রম থেমে নেই জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, নিয়মিত ওষুধ ছিটাচ্ছি। মশা মারতে কার্যকর মাসকুবার নামে ভেষজ ওষুধও ব্যবহার করছি। আমাদের কার্যক্রমের ফলে সুফল আসছে। গতবারের চেয়ে এ বছর কিন্তু ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেক কম।
মশা দিবসে কোনো কার্যক্রম না থাকা প্রসঙ্গে চসিকের চসিকের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহী আজাদীকে বলেন, এ বছর মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা নেই। দিবস উপলক্ষে ক্র্যাশ প্রোগাম গ্রহণ না করলেও গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আমরা মশক নিধন কার্যক্রম জোরালো করেছি। এডাল্টিসাইড, লার্ভিসাইডের পাশাপাশি মাসকুবার ছিটাচ্ছি। এতে সাফল্য আসছে। অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ কার্যক্রম। মশক নিধন কার্যক্রমে গতি বাড়াতে স্প্রে ম্যান বৃদ্ধি করেছি।
বিশ্ব মশা দিবস আজ :
১৮৯৭ সালের ২০ আগস্ট ম্যালেরিয়ার সঙ্গে মশার সম্পর্ক আবিষ্কার হয়। এর আবিষ্কারক রোনাল্ড রস। দ্য লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের উদ্যোগে ১৯৩০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিনে বিশ্ব মশা দিবস পালন করে আসছে। মশাবাহিত রোগের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য দিবসটি পালন করা হয়।