কক্সবাজারের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জাফরুল ইসলাম বাবুল মেম্বার (৪২)কে মাদক ও অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব–১৫। আমাদের টেকনাফ প্রতিনিধি জানান, গ্রেপ্তার বাবুল উখিয়া উপজেলার আব্দুর রশিদের ছেলে এবং পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরবেলায় টেকনাফের কাটাখালী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৫৫ হাজার পিস ইয়াবা, দুটি অস্ত্র ও গোলাবারুদ। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব–১৫ কক্সবাজার অফিসের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী। তিনি জানান, র্যাব–১৫ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাটাখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবা ও অস্ত্রসহ বাবুল মেম্বারকে গ্রেপ্তার করে।
বাংলানিউজ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে কক্সবাজারের টেকনাফে পালংখালি ইউনিয়নে ইউপি পরিষদ নির্বাচনে ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার নির্বাচিত হন জাফরুল ইসলাম ওরফে বাবুল। তার নেতৃত্বেই টেকনাফে গড়ে উঠে শীর্ষ মাদক সিন্ডিকেট। মাসে মিয়ানমার থেকে প্রায় ৪০–৪৫ লাখ ইয়াবা নিয়ে আসতো এ সিন্ডিকেট। এরপর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সেসব ইয়াবা ছড়িয়ে দেওয়া হতো। শুধু মাদক কারবারিই নয়, অস্ত্র ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালানসহ এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসা এ বাবুল মেম্বারের নামে হত্যাসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার বাবুল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকার একজন অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী। টেকনাফে তিনি পার্শ্ববর্তীদেশ থেকে মাদক চোরাচালানের গডফাদার হিসেবে পরিচিত। বাবুল মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এলাকায় ২০–২৫ জনের একটি চক্র গড়ে তোলে। তিনি মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি, স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, অবৈধ বালু উত্তোলন, অবৈধভাবে চোরাই পথে গবাদি পশু চোরাচালান, অবৈধভাবে পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, বাবুল ২০০৫ সালের পরবর্তীতে টেকনাফ এলাকায় মাদক ও অন্যান্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে যান। ২০১৭ সালে এলাকার অপর এক মাদক ব্যবসায়ী লুৎফুর রহমানের মাধ্যমে ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নবী হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নবীর সঙ্গে পরিচয়ের পর থেকে গ্রেপ্তার বাবুল বৃহৎ আকারে মাদক সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়ে। তিনি নবী হোসেনের সঙ্গে চুক্তি করে চিংড়ি ব্যবসার আড়ালে নাফ নদী দিয়ে মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালান করে আসছিলেন। মাদকসহ অন্যান্য চোরাকারবারির সময় তার দলের ২০–২৫ জন সশস্ত্র সদস্য পাহাড়া দিয়ে চালান বাংলাদেশে পৌঁছাতো। বাবুল মিয়ানমার থেকে সপ্তাহে ৪–৫টি ইয়াবার চালান এনে বালুখালী ক্যাম্প সংলগ্ন তার নিয়ন্ত্রিত বেশকিছু চিংড়ির খামারের ভেতরে রাখতেন।