রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনায় অংশ নিতে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যের সমাজ বিষয়ক ও অভিবাসন প্রতিমন্ত্রী অং মিয়ো’র নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে। আর এদের সাথে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং ক্যা মো। প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সাথে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনায় মিলিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় টেকনাফ শালবাগান ২৬ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে প্রতিনিধি দলটি। এরপর রোহিঙ্গা ক্যাম্প–২৬ এ রোহিঙ্গাদের সাথে আলোচনা সভায় অংশ নেন। উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রোহিঙ্গা ক্যাম্প–২৪, ২৬ এবং ২৭ এর পাইলট প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত ২২৩টি রোহিঙ্গা পরিবারের ২২৩ জন রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বৈঠকে আলোচনা হয়।
আলোচনা সভায় মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মিয়ানমারের সেনা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ১৫টি গ্রাম, যেখানে প্রত্যাবাসন পরবর্তী রোহিঙ্গাদেরকে রাখা হবে এবং সেই সকল গ্রামে সেনা সরকারের দেওয়া অন্যান্য সুযোগ–সুবিধা সম্পর্কে উপস্থাপন করেন। এ সময় উপস্থিত রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে উল্লিখিত দাবিসমূহ উপস্থাপন করেন রোহিঙ্গা নেতা বজলুল ইসলাম, রহিম উল্লাহ ও আবু সুফিয়ান। তারা জানান, রোহিঙ্গাদেরকে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (NVC) না দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র (NID) দেওয়া, সেনা সরকারের নির্ধারিত ক্যাম্পে না রেখে নিজ ভিটে–বাড়িতে যাওয়ার ব্যবস্থা, মিয়ানমারের অন্যান্য ১৩৫ সম্প্রদায়ের মানুষের মতো চলাফেরার স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়গুলো মেনে নিলেই তারা দেশে ফিরে যাবেন। এ সময় কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ ও পূনর্বাসন কমিশনার (আরআরআরসি) অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, ১৬ এপিবিএন অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি হাসান বারী নূর, অতিরিক্ত আরআরআরসি উপ–সচিব শামসুদ্দৌজা, উপ–সচিব মো. খালিদ হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রতিনিধি দলটি সকাল সোয়া ৯টার সময় মিয়ানমার থেকে কাঠের বোটযোগে টেকনাফ পৌরসভা সংলগ্ন বাংলাদেশ–মিয়ানমার ট্রানজিট জেটিতে পৌঁছেন এবং বিকেলে একই জেটি দিয়ে মিয়ানমারে ফিরে যান বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত আরআরআরসি উপ–সচিব শামসুদ্দৌজা।
উল্লেখ্য, গত ৫ মে ২০ জন রোহিঙ্গা ও ৭ জন বাংলাদেশি অফিসিয়ালসহ মিয়ানমার মংডু এলাকায় প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত স্থাপনা পরিদর্শন করে আসেন।