অপহরণ বন্ধে এবং পাহাড়কেন্দ্রিক সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে টেকনাফ উপজেলার ভুক্তভোগী লোকজন। গতকাল বুধবার বিকালে কক্সবাজার–টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে মেজর সিনহা চত্বরে সমাবেশ করেছেন তারা। ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ প্ল্যাকার্ড–ফেস্টুন হাতে সমাবেশে অংশ নেন। সমাবেশ থেকে ইতোমধ্যে অপহৃত হয়ে জিম্মি থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধারের দাবি জানানো হয়।
জানা গেছে, সর্বশেষ গত রবিবার সন্ধ্যায় বাহারছড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শিলখালী পূর্বপাড়ায় খেলার সময় ছয় শিশু–কিশোরকে অপহরণ করে পাহাড়কেন্দ্রিক সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। পরে তাদের মধ্যে দুজন কৌশলে পালিয়ে এলেও চার জন এখনও জিম্মি রয়েছে তাদের কাছে।
ভুক্তভোগী লোকজন বলেছেন, বাহারছড়া এলাকাজুড়ে সমপ্রতি অপহরণ বেড়েছে। গত রবিবার চার জনকে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা অপহরণ করেছে। গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৬৪ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন; তাদের বেশিরভাগ লোকজন মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছেন।
তবে জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৭২ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। অধিকাংশই মুক্তিপণের বিনিময়ে ফিরে এসেছেন। এখনও কতজন জিম্মি আছেন, সে তথ্য পুলিশের কাছে নেই।
সমাবেশে জয়নাল উদ্দিন বলেন, কোনোভাবে আমরা এখানে আর অপহরণের ঘটনা দেখতে চাই না। আমাদের অপহৃত ভাইদের ফেরত চাই। দিন দিন এখানে বসবাস অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। অপহরণসহ অপরাধ রোধে সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকি বসানোসহ বিশেষ অভিযানের দাবি জানাচ্ছি।’
সমাবেশে শামলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ মঞ্জুর বলেন, বাহারছড়া পর্যটন এলাকা। অপহরণের কারণে এখন পর্যটক আসতে ভয় পাচ্ছেন। আমরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি। নারী–শিশুরাও অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। আমরা এই ভয় ও আতঙ্ক থেকে থেকে মুক্তি চাই।
বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন বলেন, ৫০ হাজার মানুষের এই বাহারছড়া এলাকায় অপহরণকারী সর্বোচ্চ ১০০ জন। তিনি স্থানীয় লোকজনকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘অপহরণ বন্ধের দাবিতে এ কর্মসূচির যৌক্তিকতা আছে। আমরা তা সমর্থন করি। তবে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে।











