কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় নিমন্ত্রণে গিয়ে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের শিকার পাঁচজনকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয় বলে জানান টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) দুর্জয় বিশ্বাস।
উদ্ধাররা হলেন উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর সোনার পাড়ার শফিউল আলমের ছেলে মো. আদনান (২১), একই এলাকার মো. শফিকের ছেলে মো. হাশেম (২২), টেকনাফের শামলাপুর এলাকার বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী আবু তাহেরের স্ত্রী রাফিয়া বেগম (৩০), তার মেয়ে আজমা আক্তার (১৪) ও ছেলে সাইফুল ইসলাম (১০)।
গ্রেপ্তাররা হলেন টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকার আব্দুল হকের ছেলে মো. ফয়সাল (৩০) এবং একই ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ কামরুল। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে ওই পাঁচজন নিখোঁজ ছিলেন বলে জানায় পুলিশ। খবর বিডিনিউজের।
পুলিশ পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, আদনানের চাচার ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন রাফিয়া বেগম। ২ সেপ্টেম্বর আদনান ও তার বন্ধু হাশেমকে নিয়ে রাফিয়া টেকনাফের শামলাপুর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান। পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে আদনান ও হাশেমের সঙ্গে তাদের পরিবারের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পরদিন রাতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাদের জিম্মি করা হয়েছে বলে মোবাইল ফোনে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে রাফিয়া বেগম ও তার দুই সন্তানও নিখোঁজ ছিলেন বলে জানান পুলিশ পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস।
ঘটনার তিন দিন পর রোববার রাতে আদনানের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বেলাল (৩০) বাদী হয়ে তিনজনের নামসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে নিখোঁজদের উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত অপহরণপ্রবণ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকা থেকে আসামি মো. ফয়সাল এবং বড় ডেইল এলাকা থেকে মোহাম্মদ কামরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার ভোররাতে বড়ডেইল পাহাড়ি এলাকায় পুলিশের অভিযানের মুখে অপহরণকারীরা আদনান, হাশেম, রাফিয়া ও তার দুই সন্তানকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়। এর আগে সোমবার বিকালে গ্রেপ্তার দুইজনকে কঙবাজার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এই কর্মকর্তা।