কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তদের হাতে অপহৃত এক চাকমা যুবক কৌশলে পালিয়ে এসে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে অপহরণকারীদের কবল থেকে পালিয়ে তিনি স্থানীয়দের সহায়তায় নিরাপদ স্থানে পৌঁছান।
পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ১০টার দিকে ওই যুবক অপহরণকারীদের হাত থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনি নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, “অপহৃত যুবক পালিয়ে আসার ঘটনায় আমরা বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি। পাহাড়ি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”
পালিয়ে আসা যুবকের নাম সংকুচিং চাকমা (৩৫)। তিনি জানান, পাহাড়ে কৃষিকাজ করার সময় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে বিভিন্নভাবে তার কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছিল।
সংকুচিং বলেন, “আমি গরিব মানুষ, কৃষিকাজ করে জীবন চালাই—এ কথা বারবার বলেছি। আজ ভোরে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে সুযোগ বুঝে আমি পালিয়ে আসি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে বাহারছড়া ইউনিয়নের চৌকিদারপাড়া সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় কৃষিকাজ করার সময় ২০ থেকে ৩০ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল সংকুচিং চাকমাকে অপহরণ করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অপর ব্যক্তি বৃদ্ধ এবাদুল্লাহ (৬০) অপহরণের শিকার হলেও তিনি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
এবাদুল্লাহ জানান, সন্ত্রাসীরা হঠাৎ হামলা চালিয়ে সংকুচিংকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তাকেও অপহরণের চেষ্টা করা হলে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান। পালানোর সময় দুর্বৃত্তরা তার দিকে গুলি ছোড়ে বলেও তিনি দাবি করেন।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের উদ্দেশ্যেই এই অপহরণ করা হয়েছিল। অপহৃত ব্যক্তি পালিয়ে আসায় ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। পাহাড়ি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান জোরদার করা হয়েছে।”
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৭৫ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই মুক্তিপণের বিনিময়ে ফিরে এসেছেন বলে জানা গেছে।












