বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের একমাত্র টেস্টের ৫ম ও শেষ দিন আজ। জয়ের জন্য শেষ দিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৭ উইকেট। জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ৩৩৭ রান। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে ভুগিয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান। সে ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে ৪র্থ দিনে চালকের আসনে থাকা বাংলাদেশ আজ ৫ম দিনে জয়ের আশা করতেই পারে।
গতকাল ছিল টেস্টের ৪র্থ দিন। আর টেস্টে এমন দিন খুব কমই পেয়েছে বাংলাদেশ। দুই ইনিংসে দাপট দেখিয়ে প্রতিপক্ষকে বিশাল লক্ষ্যের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া খুব কমই হয়েছে। হারারে টেস্টে সেটিই করলো গতকাল মোমিনুলরা। জিম্বাবুয়েকে ৪৭৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে এখন সফরকারী বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন শেষে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ করেছে ৩ উইকেটে ১৪০ রান। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামা জিম্বাবুয়ে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই কেঁপে ওঠে। ষষ্ঠ ওভারেই ভালো লেন্থের বল দিয়ে ওপেনার মিল্টন শুম্বাকে ফাঁদে ফেলেন পেসার তাসকিন আহমেদ। খোঁচা মারতে গিয়ে সরাসরি জমা পড়েন স্লিপে। শুম্বা বিদায় নেন ১১ রানে। এর পর ওপেনার কাইতানো ধীরে চলো নীতিতে থাকলেও অধিনায়ক টেলর খেলতে থাকেন আগ্রাসী ভঙ্গিমায়। এই সময়ে আবার উইকেট তুলে নেওয়ার দারুণ একটা সুযোগও তৈরি হয়েছিল। ২১তম ওভারে মেহেদী মিরাজের বলে টপ এজে ক্যাচ উঠেছিল কাইতানোর। কিন্তু শর্ট ফাইনে থাকা ইবাদত দেখে দেখেই যেন সহজ সেই ক্যাচ ছেড়ে দিলেন। এর পর অবশ্য ভুল করে বসেন টেলর। সেঞ্চুরির কাছে থাকলেও ৮ রান দূরে থাকতে মিরাজের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। টেলরের ফেরায় স্বস্তিও ফেরে বাংলাদেশ শিবিরে। টেলর ৭৩ বল খেলে ৯২ রানে ফিরলেও কাইতানো ফিরছিলেন না। বলের পর বল খেলে ক্রিজে জমে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ১০২ বল খেলা সেই কাইতানোকেই ৭ রানে ফিরিয়ে দেন সাকিব। সাত রান করতে চার মেরেছেন একটি। এখন ক্রিজে আছেন ডিয়োন মায়ার্স (১৮) ও ডোনাল্ড তিরিপানো (৭)। ফলে শেষ দিনে জয়ের জন্য আর ৭ উইকেট প্রয়োজন সফরকারী টাইগারদের।
এর আগে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে বলতে গেলে রান উৎসবই করে বাংলাদেশ। ১ উইকেটে ২৮৪ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে দেয় বাংলাদেশ। তাতে ৪৭৬ রানের লিড পেয়ে জিম্বাবুয়েকে জয়ের জন্য ৪৭৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় মোমিনুল বাহিনী। এ প্রথমবার কোনও প্রতিপক্ষকে এত বিশাল লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ। অবশ্য এ জন্য পুরো কৃতিত্ব দিতে হবে সাদমান ইসলাম ও নাজমুল শান্তকে। বিনা উইকেটে শনিবার সকালের শুরুটা দারুণ করলেও সেটা স্থায়ী হয়নি বেশি। সাদমান ইসলামের সঙ্গে জুটি দাঁড় করিয়ে নিয়েছিলেন আরেক ওপেনার সাইফ। কিন্তু বেশিদূর যাওয়া হয়নি সাইফের। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৩ রানে আউট হয়েছেন তিনি। এর পরই রান উৎসবে যোগ দেন সাদমান ও শান্ত। তাদের ব্যাটে বড় লিডের পথে এগোতে থাকে সফরকারীরা। দাপট দেখাতে দেখাতে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখাও পেয়ে যান সাদমান। অপরাজিত থাকেন ১১৫ রানে। সঙ্গী নাজমুল শান্তও তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। তিনি অপরাজিত থাকেন ১১৭ রানে। তার সেঞ্চুরির পরই ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ১৯৬ রানের জুটি গড়া সাদমান-শান্ত পুরোটা সময়ই জিম্বাবুয়েন বোলারদের উপর প্রভাব বিস্তার করে খেলেন। সাদমানের ১৯৬ বলের ইনিংসে ছিল ৯টি চার। শান্ত ছিলেন অনেকটাই ওয়ানডে মেজাজে। তার ১১৮ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি বাউন্ডারী ও ৬টি ছক্কা।