ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী–এমপিদের নামে বিভিন্ন মামলার মধ্যেই এবার গ্রেপ্তার হলেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এবং সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ঢাকার খিলক্ষেত থানা এলাকার নিকুঞ্জ আবাসিক থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে তথ্য দিয়েছে পুলিশ। একই এলাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ–কমিশনার মো. ওবায়দুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা সেখানে আত্মগোপনে ছিলেন। পল্টন থানার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে সদরঘাট থেকে গ্রেপ্তার হন আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। খবর বিডিনিউজের।
ছাত্র–জনতার প্রবল গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও প্রাণহানির জন্য তিনি ও তার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা হচ্ছে। সেসব মামলায় গ্রেপ্তার শুরু হয়েছে।
৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর দিশেহারা আওয়ামী লীগের এমপি–মন্ত্রী ও বিভিন্ন পদধারী নেতাকর্মীদের কেউ কেউ দেশ ছাড়তে পারলেও বেশিরভাগ থেকে যান দেশে। তাদের অধিকাংশিই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন।
তবে ‘জীবনশঙ্কা’ থেকে অনেকে সেনাবাহিনীর কাছে আশ্রয় নিয়েছে বলেও মঙ্গলবার বলেছিলেন সেনাপ্রধান ওয়াকার–উজ–জামান। তিনি বলেছিলেন, কোনো মামলায় অভিযুক্ত হলে তাদের আইন ও বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
সরকার পতনের পরদিন ৬ অগাস্ট ‘দেশত্যাগের চেষ্টার’ সময় জুনাইদ আহমেদ পলককে ঢাকার শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেওয়ার খবর এসেছিল। তখন বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, পলককে ‘একটি বাহিনীর কাছে’ হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই ঘটনার আট দিন পর বুধবার রাতে পল্টন থানার একটি মামলায় পলককে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দফায় দফায় ইন্টারনেট বন্ধ রাখা নিয়ে তদন্তের মুখে রয়েছেন পলক। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, তার নির্দেশেই ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয় এবং সেবা থেকে বঞ্চিত হন দেশের মানুষ। তবে ইন্টারনেট বন্ধের তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে পলকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হওয়ার তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। ৫ অগাস্টের পর জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার টুকু সম্পর্কে তেমন আলোচনা ছিল না। বুধবার পলকের সঙ্গে তাকেও গ্রেপ্তার করার তথ্য দিল পুলিশ।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকতকে ৬ অগাস্ট বিমানবন্দরে আটক করার খবর এসেছিল। সেদিন তার সঙ্গে আটক হয়েছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদও। তাদের দুজন বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের হেফাজতে ছিলেন বলে সে সময় জানা গিয়েছিল। তাদের মধ্যে সৈকতের গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্য দিল ঢাকা মহানগর পুলিশ।