তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দুটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল। শেষ ম্যাচটিতে হেরে বসেছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এবার টি–টোয়েন্টিতে জয় দিয়ে শুরু করল টাইগার নারীরা। অধিনায়ক নিগার সুলতানার দুর্দান্ত ব্যাটিং ৯ বছর পর শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম জয় পেল বাংলার নারীরা। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে অধিনায়কের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ। লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম দুই টি–টোয়েন্টিতেই জিতেছিল বাংলাদেশ ২০১২ ও ২০১৪ সালে। এরপর টানা সাত ম্যাচ জিতেছে লঙ্কানরা। সেই ধারায় এবার ছেদ টানতে পারলেন নিগাররা। শুধু তাই নয় টি–টোয়েন্টিতে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১৪২ রান তাড়া করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদরা। এবার জিতল ১৪৬ রান তাড়া করে। যে জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা। এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজে ১–০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারেই ভিশ্মি গুনারত্নের উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ফারিহা তৃষ্ণার বলে রাবেয়া খানের হাতে ক্যাচ দেন ১১ রান করা এই ওপেনার। শুরুর ধাক্কা সামাল দেন আতাপাত্তু। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে খেলেন ২৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। তাকে থামান নাহিদা আক্তার। ডিপ মিড উইকেটে সোবহানার হাতে ক্যাচ দেন লঙ্কান অধিনায়ক। এরপর দলের ইনিংস এগিয়ে নেন হার্শিথা সামারাবিক্রমা ও নিলাকশি ডি সিলভা। হাফ সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও ৪৫ রানে থামেন হার্শিথা। এরপর হাসিনি পেরেরা, কাভিশা দিলহারি, আনুশকা সাঞ্জিবানিদের বেশি কিছু করতে দেননি ফাহিমা খাতুন, রাবেয়া খানরা। এক প্রান্ত আগলে রেখে ২৮ বলে ২৯ রানের ইনিংসে শ্রীলঙ্কাকে ১৪৫ রানের পুজি এনে দেন নিলাকশি। বাংলাদেশের পক্ষে ২টি উইকেট নিয়েছেন ফাহিমা। এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন ফারিহা, সুলতানা, নাহিদা এবং রাবেয়া ।
১৪৬ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। পাঁচ ওভারের মধ্যে ফিরে যান দুই ওপেনার। শামিমা সুলতানা করেন ৫ রান। অভিষিক্ত রুবাইয়া হায়দার ফিরেন ৯ রান করে। সাবহানা মুস্তারিকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন নিগার সুলতানা। দুজন মিলে ৪০ বলে ৫১ রান যোগ করেন। যেখানে বড় অবদান রাখেন অধিনায়ক নিগারই। দ্বাদশ ওভারে সোবহানা ফিরেন ২৪ বলে ১৭ রান করে । তখনও জয়ের জন্য ৫৩ বলে প্রয়োজন ছিল ৭২ রান। এরপরই রিতুকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান নিগার। ৩৮ বলে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েন দুজন। এর মধ্যে ৩৬ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নিগার। শেষ তিন ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ৩৫ রানের। ১৮ তম ওভার থেকে আসে ১০ রান। শেষ দুই ওভারে ২৫ রানের সমীকরণে বল হাতে আসেন লঙ্কান অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু। তবে নিগার সুলতানা ও রিতু মনি মিলে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যান। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। প্রথম বলটি ফুল টস পেয়ে সীমানা ছাড়া করেন রিতু মনি। পরের বলে নেন এক রান। পরের বলে নিগার নেন ২ রান। চতুর্থ বলে রান আউট হয়ে যান রিতু মনি। পঞাচম বলে এক রান নিয়ে জয়ের উল্লাসে মাতেন নিগার সুলতানা। নিগার এবং রিতু মনি মিলে গড়েন ৫০ বলে ৭১ রানের জুটি। যা পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি। ৫১ বলে ৭টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৭৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন নিগার সুলতানা। আর রিতু মনি করেন ২৩ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৩০ রান। আগামীকাল একই মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।