টি-টোয়েন্টি সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ

আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১০ জুলাই, ২০২৫ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

শ্রীলঙ্কা সফরটা মোটেও সুখকর হচ্ছে না বাংলাদেশের জন্য। টেস্ট সিরিজে হারের পর ওয়ানডে সিরিজেও হেরেছে টাইগাররা। পুরো সফরে প্রথম টেস্টের কথা বাদ দিলে বাকি ম্যাচগুলোতে চরম হতাশার ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ দল। মাঝে মাঝে বোলাররাও করেছে একেবারে সাদামাটা বোলিং। যার ফল এমন হার। টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ শেষ হয়েছে হতাশায়। এখন বাকি কেবল টিটোয়েন্টি সিরিজ। আর সে টিটোয়েন্টি সিরিজে জয়ের ধারায় ফিরে আসার লক্ষ্যে বাংলাদেশ দল পারফরমেন্সে উন্নতির আশা করছে। আজ বৃহস্পতিবার ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে টিটোয়েন্টি সিরিজ। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি। এর আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১০ এবং তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২১ ব্যবধানে হেরেছে সফরকারী বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে শেষ দুই ম্যাচে না থাকা লিটন দাস বাংলাদেশের টিটোয়েন্টি দলকে নেতৃত্ব দিবেন।

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এই ফরমেট টিটোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা সবচাইতে হতাশার। এই ফরমেটে গত পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। যদিও গত বছরের শেষের দিকে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টিটোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশ এই ফরমেটে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আশা ছিল। তবে মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২১ ব্যবধানে পরাজয়ের হতাশা পুরো দলকে ভুগিয়েছে। পরের সপ্তাহেই পাকিস্তানের কাছে তিন ম্যাচের টিটোয়েন্টি সিরিজে ৩০ ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হতে হয় লিটন দাশের দলকে। টিটোয়েন্টি ক্রিকেটের মূল সৌন্দর্য পাওয়ারহিটিং দক্ষতা সবসময়ই প্রশ্নের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের। আইসিসির সহযোগী দেশ আরব আমিরাতের বিপক্ষে হারের বিষয়টি আরো বেশি করে সামনে এসেছে। ঐ সিরিজের পর থেকে ভিন্ন ট্রেনিং সেশনে ব্যাটাররা পাওয়ারহিটিং নিয়ে কাজ করেছে। এমনকি গলফার সিদ্দিকের শরণাপন্ন হওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না।

বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ অবশ্য বলেছেন, যেকোন ফরমেটেই পার্টনারশিপ গড়ে তোলা দলকে অনেকটাই এগিয়ে দেয়। তার মতে, বড় পার্টনারশিপের অভাবেই বাংলাদেশকে ওয়ানডে সিরিজ হারতে হয়েছে। তৃতীয় ওয়ানডেতে পরাজয়ের পর মিরাজ বলেন, সেট হবার আগেই আমরা দ্রুত উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছি। খুব বেশিদূর ব্যাটাররা যেতে পারেননি। আমাদের অবশ্যই এই দিকটি নিয়ে কাজ করতে হবে। এটা যেকোন ফরমেটের ক্রিকেটের জন্য অপরিহার্য। আর টিটোয়েন্টিতে এ কাজটা বেশি দরকার।

টিটোয়েন্টি দলের সাথে যোগ দিতে এরই মধ্যে ক্যান্ডিতে পৌঁছে গেছেন সাইফুদ্দিন এবং শেখ মেহেদী হাসান। কাজেই এই সিরিজে বাংলাদেশ দলের ব্যাটারদের কাছ থেকে নিজেদের সেরাটা আশা করছে টিম ম্যানেজম্যান্ট। কারণ টিটোয়েন্টি মানেই চার আর ছক্কার ঝড়। এখন টিটোয়েন্টিতে হরহামেশাই দুইশ কিংবা আড়াইশ রান হচ্ছে। আবার সে রান টপকেও যাচ্ছে। কাজেই ব্যাটারদেরকেই এই সিরিজে দায়িত্বটা নিতে হবে বেশি।

যদিও টিটোয়েন্টি ফরমেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের বেশ কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত আছে। তারপরও পরিসংখ্যান বাংলাদেশের বিপক্ষে। দু’দলের ১৭ বারের মোকাবেলায় বাংলাদেশ জিতেছে ৬টি ম্যাচে আর হেরেছে ১১ ম্যাচে। তবে ২০১৮ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টিটোয়েন্টি ফরমেটে সর্বোচ্চ স্কোর (২১৫) গড়েছিল বাংলাদেশ। এই ফরমেটে মাত্র ৭ বার ২০০ এর বেশি রান করতে পেরেছে টাইগাররা। এর মধ্যে দুটি এসেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান খেলতে পারেননি। তবে লঙ্কানদের বিপক্ষে পূর্ণশক্তির পেস আক্রমণ নিয়েই মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজ অবশ্য আইপিএলএ যোগ দেবার আগে আরব আমিরাতের বিপক্ষে শুধুমাত্র প্রথম ম্যাচটি খেলেছিলেন। পুনরুজ্জীবিত তাসকিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ গত তিন বছর ধরে তাদের কাজ অনবদ্যভাবে করে চলেছে। কিন্তু ব্যাটারদের নিয়মিত ব্যর্থতায় পেসারদের কৃতিত্ব চাপা পড়ে যাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি দপ্তরে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফর বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে লোকসানে অনেক আড়তদার