নগরীর আগ্রাবাদে পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় মারুফ চৌধুরী মিন্টু হত্যাকান্ডের ঘটনায় যুবলীগ নেতা নামধারী ক্যাডার মোস্তফা কামাল টিপুসহ চার আসামির জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আসামিরা হলেন- মোস্তফা কামাল টিপু, মো. মাহাবুব, ফয়সাল খান ও মো. রাব্বি। চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজাদীকে বলেন, আগ্রাবাদে মারুফ হত্যার ঘটনায় পাঁচ আসামি হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। হাইকোর্টের জামিনের মেয়াদ শেষে বুধবার চার আসামি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের জামিনের বিষয়ে বিরোধিতা করেন। আদালত শুনানি শেষে আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের জামিন নেয়া পাঁচজনের মধ্যে শাহেদ নামে আরেক আসামি গত ১২ জানুয়ারি আজগর আলী হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ওই হত্যাকান্ডের ঘটনার রাতেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন আসামি শাহেদ।
অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, আদালতে শুনানিতে এ
আসামির (শাহেদ) পক্ষেও জামিন চাওয়া হয়েছিল। এসময় আদালত আসামির জামিন না মঞ্জুরের আদেশ দিয়েছেন।
গত ১২ নভেম্বর রাতে আগ্রাবাদে প্রতিপক্ষের লোকজন মারুফের ওপর হামলা চালায়। পরদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। নিহত মারুফ ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ সালেহ আহমদ চেয়ারম্যান বাড়ির হাজী কামাল চৌধুরীর ছেলে। গত ১৪ নভেম্বর নিহতের বোন রোজি চৌধুরী মোস্তফা কামাল টিপুসহ সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যা মামলায়এজাহারনামীয় প্রধান আসামি রমজান আলীকে গত ১৭ নভেম্বর বি-বাড়িয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানা গেছে, পূর্ব বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। মারুফ হত্যাকান্ডের আগে আগ্রাবাদে যুবলীগ নামধারী আরেক ক্যাডার আলমগীর চৌধুরী প্রকাশ পিচ্চি আলোর লাগানো পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ উঠে রমজানসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এতে মারুফসহ কয়েকজন মিলে রমজানকে ধরে মারধর করে।
পরে রমজান প্রতিশোধ নিতে সুযোগ বুঝে মারুফের ওপর হামলা করে। কাউন্সিলর প্রার্থী কাদেরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত পিচ্চি আলোর ছোট ভাই নিহত মারুফ। আলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দখল, মারামারিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি বাবুল হত্যাকান্ডের ঘটনায় কাদেরের পাশাপাশি এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে রয়েছে আলো। অন্যদিকে যুবলীগ নেতা নামধারী ক্যাডার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা কামাল টিপুর বিরুদ্ধেও আগ্রাবাদে আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। এক সময় আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী থাকলেও পরবর্তীতে কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরের দলে ভিড়ে টিপু।
বিশেষ করে র্যাবের ক্রসফায়ারে যুবলীগ ক্যাডার খোরশেদ নিহত হওয়ার পর থেকে আগ্রাবাদে মোস্তফা কামাল টিপুর বিরুদ্ধে দখলদারিত্ব রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে।