এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট দল ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে তারা সেটা দেখাতে পারলনা। ভারতের কাছে নিজেদের প্রথম ভারতের কাছে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে হারে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। যদিও তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলংকাকে হারিয়ে প্রথম জয়ের দেখা যায় অসিরা। বিশ্বকাপে এমন দশা আগে কখনো দেখেনি পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার। অপরদিকে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা পাকিস্তান দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে রেকর্ড গড়ে জিতেছিল। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সামনে একরকম উড়েই গেল বাবর আজমের দল। তাই বিশ্বকাপে টিকে থাকতে আজ কঠিন এক লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। এবারের বিশ্বকাপে দু’দলের জন্যই এই ম্যাচটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। কারণ দু’দলই কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে। তাই পাকিস্তান যেমন আজকের ম্যাচে জয়ের ধারায় ফিরতে চাইবে তেমনি দুই ম্যাচে হারের পর পাওয়া জয়টাকে ধরে রাখতে চাইবে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাঙ্গালুরুর চিন্বাস্বামী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায়।
এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংটা কেমন যেন ঠিকঠাক মত কাজ করছে না। প্রথম দুই ম্যাচে দুইশ রানও করতে পারেনি। তৃতীয় ম্যাচে অবশ্য শ্রীলংকাকে স্বল্প রানে বেধে ফেলার পর ৮৮ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। আর দলের ব্যাটাররা যেন ছন্দে ফেরার ইঙ্গিতও দিয়েছিল। অপরদিকে প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তানের যেন সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে এসে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে খেই হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। ভারতের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে শুরুর দিকে বেশ ভাল করলেও শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারিয়ে দুইশর নিচে অল আউট হয়। আর ভারত সেটা একেবারে হেসেখেলে টপকে যায়। আর তাতে বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বির বিপক্ষে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখে। আজ তাই পাকিস্কতানের জন্যও অস্ট্রেলিার বিপক্ষে ম্যাচটি কঠিন এক পরীক্ষা। কারন বিশ্বকাপের শেষ চারে থাকতে হলে এই ম্যাচে জয়ের কোন বিকল্প নেই। টানা দুই ম্যাচে হেরে গেলে সেখান থেকে ফিরে আসা কঠিন হয়ে পড়বে পাকিস্তানের জন্য। আর সেটা ভালই টের পাচ্ছেন পাকিস্তান শিবির।
বিশ্বকাপে দু’দলের লড়াই মোটেও অসম নয়। যদিও পরিসংখ্যানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। দু দলের দশবারের বিশ্্বকাপ মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়ার জয় ৬টি আর পাকিস্তানের জয় চারটি। এরই মধ্যে দুদল ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলেছিল। গত বিশ্বকাপে দু দলের শেষ দেখায় অবশ্য জয়টা অস্ট্রেলিয়ারই। শক্তি মত্তায় দু দল প্রায় সমানে সমান। পাকিস্তানের টপ অর্ডারে যেমন রয়েছে বাবর আজম, ফখর জামান, রিজওয়ান, শাকিল সৌদ কিংবা ইমাম উল হক তেমনি অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারে রয়েছে ওয়ার্নার, স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল, মার্শ, লাবুশানে। বোলিংয়েও বিশেষ করে পেস বোলিংয়েও যেন দু’দল সমানে সমান। পাকিস্তানের যেমন আছে শাহীন আফ্রিদি, হাসান আলি, হারিস রউফ, ওয়াসিম জুনিয়র তেমনি অস্ট্রেলিয়ার রয়েছে মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্সরা। তবে স্পিনে পাকিস্তান খানিকটা এগিয়ে থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার এডাম জাম্পা কিংবা মার্কাস স্টয়নিসরা মাথা ব্যাথার কারন হতে পারে পাকিস্তানের জন্য। তবে এতসব হিসেব নিকেশ আর শক্তির বিচার করতে নারাজ পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। তার মতে মাঠেই খেলতে হবে সেরাটা। আর অস্ট্রেলিয়া দারুন পেশাদার একটি দল। তারা যেকোন মুহূর্তে স্বরূপে আবির্ভূত হতে পারে। কাজেই প্রতিপক্ষ নিয়ে চিন্তার কিছু নাই। চিন্তার আসল কারনটা হচ্ছে মাঠে কিভাবে নিজেদের সেরাটা দিতে পারি। কারন অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে জিততে হলে শতভাগেরও বেশি দিতে হবে। আর সেটাই দিতে যেন প্রস্তুত পাকিস্তান।