টিকা উৎপাদন ব্যাপক হারে বাড়াবে ভারত

| রবিবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২১ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নিজেদের উদ্ভাবিত কোভ্যাঙিন টিকার উৎপাদন ১০ গুণ বাড়ানোর কথা জানিয়েছে ভারত। শুক্রবার দেশটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সেপ্টেম্বর নাগাদ ১০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জনের পরিকল্পনা করেছে। মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বর্তমানে কোভ্যাঙিন-এর উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেকের মাসিক উৎপাদন ক্ষমতা এক কোটি ডোজ। সেপ্টেম্বর নাগাদ এর উৎপাদন সক্ষমতা ১০ গুণ বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল দেশটিকে। গত কয়েক সপ্তাহে রেকর্ড পরিমাণ সংক্রমণের মধ্যেই করোনাভাইরাসের টিকার ঘাটতিতে পড়েছে ভারত। এ কারণে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে টিকাদান কার্যক্রমের গতি কমে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন টিকা আমদানিরও উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত কোভ্যাঙিন-এর বর্তমান উৎপাদন সক্ষমতা এ বছরের মে-জুন নাগাদ দ্বিগুণ করা হবে এবং জুলাই-আগস্টের মধ্যে তা ৬-৭ গুণ বাড়ানো হবে।’ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, কোভ্যাঙিনের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে সরকার এক কোটি ৭০ লাখ ডলারের তহবিলের যোগান দেবে। ভারত বায়োটেক ছাড়াও রাষ্ট্রীয় আরও দুটি প্রতিষ্ঠান হাফকিন বায়োফার্মাসিউটিক্যাল এবং ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড যাতে সামনের মাসগুলোতে সমন্বিতভাবে টিকার মাসিক উৎপাদন সক্ষমতা সাড়ে তিন কোটি ডোজ পর্যন্ত উন্নীত করতে পারে সে পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই ৫ এপ্রিল ভারতে দৈনিক টিকাদানের পরিমাণ ৪৫ লাখে পৌঁছোয়। কিন্তু এরপর থেকে সেটা কমে গড়ে ৩০ লাখে নেমে এসেছে বলে জানা গেছে টিকাদান কার্যক্রমের সমন্বয়কারী সরকারি প্রতিষ্ঠান কো-উইনের ওয়েবসাইট থেকে।
অঙফোর্ড-অ্যাট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিশিল্ড টিকার ভারতীয় উৎপাদক সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এসআইআই) এর উৎপাদিত টিকাই মূলত এ পর্যন্ত ভারতের সিংহভাগ জনগোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছে। সেদেশে যে ১১ কোটি ৫৫ লাখ ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তার ৯১ শতাংশই এসআইআইর টিকা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ-নিষেধাজ্ঞার কারণে কাঁচামালের ঘাটতি হওয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে এসআইআইর প্রধান নির্বাহী আদার পুনাওয়ালা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন টিকার কাঁচামালের ওপর থেকে সরবরাহ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য, যে সিদ্ধান্ত মূলত যুক্তরাষ্ট্রের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
টিকার উৎপাদনে টান পড়ায় ভারতের অনেক টিকাদান কেন্দ্রে রেশনিং করতে হচ্ছে, যদিও তারা শুধু ৪৫ বছরের বেশি বয়স্কদেরই টিকার আওতায় এনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর জনগণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকার ডোজ প্রয়োগ করেছে ভারত, তবে মাথাপিছু হারের বিচারে তারা অনেকটাই পিছিয়ে। শুক্রবার ভারতের সরকার জানিয়েছে, তাদের কাছে বর্তমানে দুই কোটি ৬৭ লাখ ডোজ টিকার মজুদ আছে। গত সপ্তাহে যে হারে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে, তা বিবেচনায় নিলে এই মজুদ দিয়ে নয়দিন পর্যন্ত চলতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকিউবার কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ছাড়ছেন রাউল
পরবর্তী নিবন্ধএকদিনে রেকর্ড ১ হাজার ৩৪১ মৃত্যু দেখল ভারত