বঙ্গবন্ধু টানেল চালুর পর ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও ৬ লেন সংযোগ সড়ক প্রকল্পের ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, ক্ষতিপূরণের ১১৪ কোটি ছাড়ের জন্য এর মধ্যে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই টাকা ছাড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে দীর্ঘ সময়েও ছাড়ের টাকা না পেয়ে হতাশায় আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বঙ্গবন্ধু টানেল ৬ লেইন সংযোগ সড়ক প্রকল্পের পরিচালক সুমন সিংহ জানান, ইতোমধ্যে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণে দুই দফায় ১১৪ কোটি টাকা ছাড়ের জন্য একনেকে অনুমোদন হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আমরা চিঠি প্রেরণ করেছি। আশা করছি, আগামী এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন ক্ষতিগ্রস্তরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৪০৭ কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু টানেল ৬ লেন প্রকল্পটি শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে কালাবিবি দিঘির মোড় পর্যন্ত ৮.১ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের মূল অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারিতে কাজ শুরু আর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এক বছর পিছিয়ে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারিতে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এরপর বিদ্যুতের খুঁটি সরানো, ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণসহ নানা জটিলতার কারণে এক বছর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ৩১ অক্টোবর একনেক সভায় সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ আরো ১ বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এ প্রকল্পের ব্যয় আরো ৭৪ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৮১ কোটি টাকা।
টানেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য মোট ৩.১৮ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। যথাসময়ে অধিগ্রহণ ও স্থাপনার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এই প্রকল্পের কালাবিবি মোড়, চাতরি চৌমুহনী বাজার, বড় উঠান, দৌলতপুর ও ফকিরনীরহাটসহ বিভিন্ন অংশে ৬ লেনের কাজ আটকে যায়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যে সড়ক বিভাগ গত বছরের ডিসেম্বরে ক্ষতিগ্রস্তের টাকা পরিশোধ করে সব জটিলতা নিরসন করার ঘোষণা দিলেও এখনো পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা। ফলে তাদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
চাতরি চৌমুহনী বাজারের ইকবাল মার্কেটের মালিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী হোসেন মো. ইকবাল বলেন, দুই বছর ধরে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণের টাকা না পেয়ে হতাশায় আছি। একাধিকবার টাকা পাওয়ার কথা শোনা গেলেও এখনো আমরা ৮ ধারা নোটিশ পাইনি।
ক্ষতিগ্রস্ত এয়াকুব হার্ডওয়ারের মালিক জয়নাল আবেদীন শিবলু বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণে পড়েছে। দুই বছর ধরে ক্ষতিপূরণের টাকার আশায় বসে আছি। অন্যত্র একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাড়ায় নিয়ে বিপাকে পড়েছি। কতদিন পর ক্ষতিপূরণের টাকা পাব জানি না। মনে করছিলাম, টানেল চালুর আগেই আমরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাব। কিন্তু ৪ মাস হলো টানেল চালু হয়েছে। এখনো টাকা পেলাম না।