টানা ৯ জয়ে ফাইনালের অপেক্ষায় ভারত

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

এবারের বিশ্বকাপে স্বাগতিক ভারত একেবারে অজেয় এবং অপ্রতিরোধ্য। কোনো প্রতিপক্ষই রোহিত শর্মার দলের গায়ে আঁচড় লাগাতে পারেনি। অনেক আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা ভারতের জন্য গতকালের ম্যাচটি ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতার। আর সে আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে একেবারে খড়কুটোর মত উড়ে গেল নেদারল্যান্ডস। ভারতের টপ পাঁচ ব্যাটারের দুজন তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। তিনজন তুলে নিয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। আর তাতেই রানের পাহাড়ে রোহিতরা। এরপর বলতে গেলে ডাচদের নিয়ে ছেলেখেলা করেছে ভারত। বল করেছেন কোহলি, গিল, সুরিয়া কুমার যাদব এবং রোহিত শর্মাও। উইকেটও নিয়েছেন কোহলি এবং রোহিত। তবে শেষ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসকে হারতে হয়েছে ১৬০ রানের বিশাল ব্যবধানে। টানা ৯ ম্যাচে ৯ জয় নিয়ে এখন সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ভারত। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামা শুরুটা ছিল বরাবরের মতই দারুণ। উদ্বোধনী জুটিতে ১০০ রান যোগ করেন রোহিত শর্মা এবং শুভমান গিল। গিল ৫১ রান করে ফিরলে ভাঙে এই জুটি। ৩২ বল খেলেন গিল। নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করার পর ফিরেন রোহিতও। ৫৪ বলে ৬১ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বিরাট কোহলিও। ভারতের এই রান মেশিন ফিরেছেন ৫৬ বলে ৫১ রান করে। নিজের মাঠে অন্যদের চাইতে কম মারমুখি ছিলেন কোহলি। এই তিনজন আউট হওয়ার পর শুরু হয় শ্রেয়াশ আইয়ার এবং লোকেশ রাহুলের তাণ্ডব। এ দুজন ডাচ বোলারদের তুলোধুনো করেন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ২০৮ রান যোগ করেন তারা। দুজনেই তুলে নেন সেঞ্চুরি। তবে আইয়ারের মতো রাহুল অপরাজিত থাকতে পারেননি শেষ পর্যন্ত।

৬৪ বলে ১১ চার ও ৪ ছক্কায় ১০২ রান করে ফিরেন রাহুল। এটি তার ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি। অপরদিকে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া শ্রেয়াশ আইয়ার অপরাজিত থাকেন ৯৪ বলে ১০ চার ও ৫ ছক্কায় ১২৮ রান করে। যা এবারের বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। আর তাতেই ভারতের স্কোর পৌঁছে যায় ৪১০ রানের পাহাড়ে। ওয়ানডে ইতিহাসে এবারই প্রথম ভারতের উপরের সারির পাঁচ ব্যাটার পেলেন পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসের দেখা।

৪১১ রানের পাহাড় ডিঙ্গানো যে নেদারল্যান্ডসের পক্ষে সম্ভব না সেটা তারা বেশ ভাল করেই জানতো। তাই কতটা টেনে নিয়ে যাওয়া যায় নিজেদের ইনিংসটাকে সেটাই যেন চেষ্টা করছিল ডাচরা। আর সে পথে ওয়েসলি বারেসিকে হারায় ডাচরা। দ্বিতীয় উইকেটে ওডাউড এবং একারম্যান মিলে যোগ করেন ৬১ রান। ৬ রানের ব্যবধানে ফিরেন দুজন। ৩২ বলে ৩৫ রান করা একারম্যানকে ফেরান কুলদিপ যাদব। আর ৪২ বলে ৩০ রান করা ও ডাউডকে ফেরান জাদেজা। এরপর অধিনায়ক এডওয়ার্ড এবং সাইব্রান্ড মিলে যোগ করেন ৩৯ রান। বিরাট কোহলি ভাঙ্গেন এ জুটি। তিনি ফেরান ১৭ রান করা এডওয়ার্ডকে। এই উইকেট পাওয়ার পর কোহলির উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মত। প্রতিরোধ গড়ে তোলা সাইব্রান্ড এঙ্গেলবাচকে ফেরান মোহাম্মদ সিরাজ। ৪৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর বুমরার শিকার হয়ে ফিরেন বাস ডি লিড। এরপর তেজা নিদামানুরু এবং লগান ভেন ভিক মিলে যোগ করেছিলেন ৩৬ রান। এ জুটি ভাঙ্গেন কুলদিপ যাদব ১৬ রান করা ভেন ভিককে ফিরিয়ে। শেষ দিকে ভেন ডার মারউই মারমুখি হয়ে উঠেছিলেন। তবে তাকে বেশি মারতে দেননি রবীন্দ্র জাদেজা। একটি চার আর দুইটি ছক্কায় ৮ বলে ১৬ রান করার পর তাকে ফেরান জাদেজা। এরপর বুমরাহ এসে নেদারল্যান্ডসের লেজটা ছেঁটে দিলে ২৫০ রানে থামে ডাচরা। আর তাতে নিশ্চিত হয়ে যায় ১৬০ রানের পরাজয়। নিদামানুরু ফিরেন ৫৪ রান করে। ভারতের পক্ষে বুমরাহ, সিরাজ, কুলদিপ এবং রবীন্দ্র জাদেজা প্রত্যেকে নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। আগামী ১৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ে প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মোকাবেলা করবে ভারত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজার উপকূলে এবার বিষধর জেলিফিশ শনাক্ত