টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন বিনিয়োগকারীরা হতাশ

স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন : সিএসই

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২১ at ৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ

টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন হয়েছে দেশের অন্যতম পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। এ সময়ে বাজারটির প্রধান সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৯৩ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট। কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দামও। বাজারের মূলধন কমেছে ১১ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। অবশ্য একই সময়ে দরপতন হয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জেও (ডিএসই)। টানা এ দরপতনে হতাশ হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে বিনিয়োগকারীদের আতংকিত হওয়ার কারণ নেই বলছেন সিএসইর দায়িত্বশীলরা। স্বাভাবিক মূল্য সংশোধনের প্রভাবে সূচক কিছুটা কমছে বলে মনে করেন তারা। বাজার আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
সিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস ১১ অক্টোবর সোমবার থেকে দরপতন শুরু হয়। এদিন সিএএসপিআই সূচক ২৭ দশমিক ১১ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ২১ হাজার ৪৮৮ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে। এরপর সপ্তাহটির পরবর্তী তিন কার্যদিবস মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবারও টানা দরপতন ঘটে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিল, চলতি সপ্তাহে ঘুরে দাঁড়াবে বাজার। কিন্তু চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকালও দরপতন হয়। গতকাল সিএএসপিআই সূচক ৯৪ দশমিক ১৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ২১ হাজার ২২ দশমিক ৫২ পয়েন্টে।
উল্লেখ্য, সিএএসপিআই সূচকটি গত ১১ অক্টোবর ২৭ দশমিক ১১ পয়েন্ট, ১২ অক্টোবর ১২৮ দশমিক ০৩ পয়েন্ট, ১৩ অক্টোবর ১৭৬ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট এবং ১৪ অক্টোবর ৬৭ দশমিক ১৫ পয়েন্ট কমেছে। এদিকে পয়েন্ট কমলেও গতকাল ৬৩ কোটি ৮২ লাখ ৫৮ হাজার ২১১ টাকা লেনদেন হয়েছে সিএসইতে, যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ছিল ৪৬ কোটি ২২ লাখ ১৪ হাজার ৫৪০ টাকা।
গতকাল সিএসইতে ৩১০টি কোম্পানির শেয়ারে মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৮টির, কমেছে ২০৬টির। অপরিবর্তিত ছিল ২৬টির। গতকাল ২২ হাজার ৫৩২টি লেনদের মাধ্যমে হাতবদল হয়েছে ২ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার ৩২০টি শেয়ারের। সিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে গতকাল সিএসই-৫০ সূচক ৩ দশমিক ৬১ পয়েন্ট এবং সিএসই শরিয়াহ ইনডেঙ ১৪ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমেছে।
বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত পাঁচ কার্যদিবসে সিএসইর বাজারের মূলধনও কমেছে। গত ১১ অক্টোবর দিন শেষে বাজারের মূলধন ছিল ৫ লাখ ৬ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, যা গতকাল দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা। এর আগে বৃহস্পতিবার বাজারের মূলধন ছিল ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা।
এদিকে টানা দরপতনে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের মনিটরিং জোরালো করার দাবি করেছেন তারা। সৈকত নামে এক বিনিয়োগকারী আজাদীকে বলেন, ২০১০ সালে শেয়ার বাজার ধসের পর থেকে স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন হলেও আতংক লাগে। বিশেষ করে টানা মূল্য সংশোধন হলে। বিনিয়োগকারীদের আতংক দূর করার জন্য পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে উদ্যোগ নিতে হবে।
সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম ফারুক আজাদীকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। কারেকশনের জন্য এমন হচ্ছে। সাধারণত পুঁজিবাজারে এই কারেকশন হয়ে থাকে। এটা নরমাল বিষয়। অনেক দিন ধরে যেভাবে বেড়েছে তাতে একটা সময় কারেকশন হবে সেটা সবাই জানত। কিন্তু কখন এই কারেকশন হবে সেটা জানত না। এখন সেই কারেকশন হচ্ছে। আমার বিশ্বাস কারেকশনটা সাময়িক এবং সেটা ঠিক হয়ে যাবে। কারণ সব ইনডিকেটর তো ভালো। দেশের কোনো ইনডিকেটরই এখন খারাপ না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধম্যাপ ইন্টারন্যাশনালের মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে প্রতীকী মেয়র হলেন জবা ত্রিপুরা