কোনমতেই থামানো যাচ্ছেনা সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। এবারের বিপিএলে অপ্রতিরোধ্য এক দলে পরিণত হয়েছে সিলেট। এরই টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফি–মুশফিকের দল। এবারের বিপিএলের প্রথম ম্যাচেই চট্টগ্রামকে হারিয়ে জয় রথ শুরু করেছিল সিলেট। এরপর শক্তিশালী বরিশালকে হারানোর পর গতকাল চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে পরাজিত করে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। আর চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা পরাজিত হলো টানা দ্বিতীয় ম্যাচে। গতকাল অপরাজেয় পথচলায় এবার সিলেট ৫ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লাকে। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স নির্ধারিত ২০ ওভারে সংগ্রহ করেছিল ১৪৯ রান। সিলেট তা অনায়াসে পেরিয়ে যায় ৫ উইকেট এবং ১৪ বল বাকি রেখে। আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়েছিলেন তৌহিদ হৃদয়। এবার টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে আরো একটি জয় উপহার দিলেন এই তরুন তার দলকে।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স শুরুটা ভাল করতে পারেনি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই থিসারা পেরেরাকে দুটি চার মারেন লিটন দাশ। কিন্তু কে জানতো সেখানেই শেষ তার পথ চলা। সে ওভারেই ফিরেন লিটন। করেছেন ৪ বলে ৮ রান। মাশরাফি আক্রমণে আসেন চতুর্থ ওভারে। ওই ওভারে টানা তিন বলে চার মারেন মারেন তিনে নামা সৈকত আলি। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনিও। ইমাদ ওয়াসিমের বলে বোল্ড হয়ে যান সৈকত ১২ বলে ২০ রান করে। দলকে আরও বিপদে ঠেলে পরের ওভারে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস মাত্র ২ রান করে। তবে ওপেনার ডেভিড চেষ্টা করছিলেন একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নেওয়ার। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন জাকের আলি। দুজনে ৫৩ রানের জুটিও গড়েছিলেন। কিন্তু পেরেরার বলে আকবর আলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মালান। ৩৯ বলে ৩৭ রান করেন ডেভিড মালান। এরপর দলের ত্রাতার ভুমিকায় জাকের আলি। কিন্তু অপর প্রান্তে মোসাদ্দেক হোসেন এবং মোহাম্মদ নবী ব্যর্থ হলেন। ফলে নিজে হাফ সেঞ্চুরি পুরন করলেও দলকে বড় স্কোর এনে দিতে পারেননি জাকের আলি। ৪৩ বলে ২টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৫৭ রান করে অপরাজিত থাকেন জাকের আলি। আর তার দলের সংগ্রহ দাড়ায় ১৪৯ রান। শেষ দিকে ঝড় তুলতে পারেননি মোসাদ্দেক হোসেন। ৮ বলে ৫ রান করেন তিনি। আর মোহাম্মদ নবী ফিরেন ৭ বলে ৮ রান করে মাশরাফির বলে বোল্ড হয়ে। সিলেটের পক্ষে থিসারা পেরেরা এবং মোহাম্মদ আমির নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি এবং ইমাদ ওয়াসিম।
আগের ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে ১৯৪ রান তাড়া করে জিতেছিল সিলেট। সে ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন তৌহিদ হৃদয়। গতকাল আরো একটি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেন হৃদয়। এবার ১৪৯ রান তাড়া করতে নেমে ১২ রানে মোহাম্মদ হারিসকে হারায় সিলেট। তবে শান্ত এবং তৌহিদ হৃদয় মিলে ৪৩ রান যোগ করেন। ২১ বলে ১৯ রান করে ফিরেন শান্ত। এরপর জাকির হাসানকে নিয়ে আরো ৩০ রান যোগ করেন হৃদয়। মাত্র ৪.৫ ওভারে হাফ সেঞ্চুরি পুরন করে সিলেট। ১০ বলে ২০ রান করে জাকির হাসান ফিরলেও মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ৪২ রান যোগ করেন তৌহিদ হৃদয়। শেষ পর্যন্ত খুশদিল শাহ এর দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হয়ে হৃদয় ফিরেন ৩৭ বলে ৫৬ রান করে। যেখানে তিনি ৩টি চার এবং ৪টি ছক্কার মার মেরেছেন। এরপর থিসারা পেরেরা ৬ বলে ৮ রানের একটি ঝড় তুলে ফিরলেও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে চড়ে ১৪ বল হাতে রেখে জয়েল বন্দরে পৌছে যায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। ২৫ বলে অপরাজিত ২৮ করে দলকে জয়ের ঠিকানা নিয়ে যান মুশফিকুর রহিম। কিছুটা ব্যাটিং অনুশীলন সেরে নেন আকবর আলি। তিনি ৪ বলে করেন অপরাজিত ৬ রান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পক্ষে মোহাম্মদ নবী এবং খুশদিল শাহ নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। তবে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন তৌহিদ হৃদয়।












