টানা তৃতীয় জয়ে দ্বিতীয় স্থানে চিটাগাং কিংস

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ

হার দিয়ে বিপিএল শুরু করা চিটাগাং কিংস দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে আর পেছনে ফিরে তাকায়নি। দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে চিটাগাং। এরই মধ্যে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে চিটাগাং। গতকাল সিলেট পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক সিলেটকে ৩০ রানে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে চিটাগাং কিংস। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চিটাগাং ২০ ওভারে সংগ্রহ করে ২০৩ রান। এবারের বিপিএলে দ্বিতীয়বারের মত দুইশর বেশি রান করল চিটাগাং। ফর্মে থাকা উসমান খান ও গ্রাহাম ক্লার্কের ব্যাট থেকে আসে ফিফটি। শেষ দিকে ঝড়ো ইনিংস খেলেন হায়দার আলি। জবাবে সিলেট থামে ১৭৩ রানে। ঘরের মাঠে টানা দুই ম্যাচে জয়ের পর আবার হারের বৃত্তে বন্দী হয়ে গেল সিলেট স্ট্রাইকার্স। সিলেট ভেন্যুতে শতভাগ জয় নিয়ে নিজেদের মাঠে খেলতে আসছে চিটাগাং কিংস।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে চিটাগাং কিংস শুরুটা বেশি ভাল করতে পারেনি। ৩২ রানে প্রথশ উইকেট হারালেও সেখানে আউট হওয়া ইমনের সংযোজন মাত্র ৭ রান। তবে দুর্দান্ত ছিলেন ওসমান খান। আগের দুই ম্যাচে ১২৩ ও ৫৫ রানের ইনিংস খেলা উসমান খানের ব্যাট থেকে এবার আসে ৩৫ বলে ৫৫ রান। পাওয়ার প্লেতে বলতে গেলে তিনিই এগিয়ে নেন চিটাগাংকে। পরে তার সঙ্গী হন তিনে নামা গ্রাহাম ক্লার্ক। ছয় ওভারে চিটাগাংয়ের রান ছিল ৪৬। পরের চার ওভারে উসমান ও ক্লার্কের দাপটে রান আসে ৫৩ রান। অধিনায়ক আরিফুল হক বল হাতে নিয়ে প্রথম ওভারেই ফেরান উসমানকে। জুটি ভাঙে ৩৯ বলে ৬৮ রানের। আর ওসমানের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ বলে ৫৩ রান। যেখানে তিনি ৮টি চার এবং একটি ছক্কা মেরেছেন। তবে ক্লার্ক এগিয়ে যান আরেকটু দূর। আগের দুই ম্যাচে ৩৯ ও ৪০ রানে আউট হয়েছিলেন ইংলিশ এই ব্যাটসম্যান। সেখান থেকে এবার বিপিএলে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি ২৮ বলে। আরিফুলের বলে চার মেরে ফিফটিতে পৌঁছানোর পর ওই ওভারেই ছক্কা মারেন ক্লার্ক। পরের ওভারে আরিফুলের হাতেই ধরা পড়েন তিনি নাহিদুলের বলে। পাঁচ ছক্কায় তিনি করেন ৩৩ বলে ৬০ রান। এরপর চিটাগাং কিংসের রানকে আরো এগিয়ে নেন মোহাম্মদ মিঠুন। দুই ছক্কায় ১৯ বলে ২৮ রান কনে চিটাগাং অধিনায়ক। ক্লার্কের সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৩০ বলে ৪৮ রান। এরপর ঝড়ো ব্যাটিং এর অনুপম প্রদর্শনী দেখান হায়দার আলি। মুলত তার ব্যাটে চড়ে দুইশ রান পার করে কিংস। দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকা হায়দার আলির হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৮ রান দুরে থাকতে থামেন বলের অভাবে। ১৮ বলে ৪টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন হায়দার। আর তার দল পৌছে যায় ২০৩ রানে। সিলেটের পক্ষে তানজিম সাকিব ২ উইকেট নিয়েছেন ৩৮ রানে।

২০৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় সিলেট। রাকিম কর্নওয়ালের কুঁচকির ইনজুরির কারণে সুযোগ পাওয়া পল স্টার্লিং আউট হয়ে যান ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই। এবারের আসরে প্রথম খেলতে নেমে শুরুতেই উইকেটের স্বাদ পেয়ে যান অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা জাকির হাসান নেমেই শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ। নাবিলের ওই ওভারেই বাউন্ডারিতে বল পাঠান তিনি তিনবার। পরে ছক্কা মারেন আলিস আল ইসলামকে। তবে সিলেটের আগের দুই ম্যাচের নায়ক এবার আর বড় করতে পারেননি ইনিংস। আলিসের শিকারে পরিণত হন তিনি ১৯ বলে ২৫ রান করে। দুই রানে আলিসের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া রনি তালুকদার থেমে যান সাত রান করে। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৪৬ রান তোলে সিলেট। পাওয়ার প্লে শেষে অ্যারন জোন্স ও জর্জ মানজি পরের পাঁচ ওভারে মাত্র একটি বাউন্ডারিতে সংগ্রহ করতে পারে মাত্র ২০ রান। আর তাতেই পিছিয়ে পড়ে সিলেট। ১১ ওভারে সিলেটে রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৬৬ রান। ১৮ বলে ১৫ রান করে আউট হন জোন্স। মানজির সঙ্গে তার জুটির ২২ রান আসে ৩১ বলে। যা টিটোয়েন্টির সাথে বড়ই বেমানান। শেষ ৯ ওভারে সিলেটের দরকার ছিল ১৩৮ রান। জাকের আলি ক্রিজে গিয়ে টানা দুটি বাউন্ডারি মারার পর ঝড় তুলতে থাকেন মানজিও। সৈয়দ খালেদ আহমেদের টানা দুই বলে বিশাল ছক্কার পর আরেকটি চার মেরে পৌঁছে যান তিনি ফিফটিতে। এক পর্যায়ে তার রান ছিল ২২ বলে ১৩। পরের ১৪ বলে করেন ৩৯ রান। শেষ পর্যন্ত খালেদের ওই ওভারেই আউট হয়ে যান স্কটিশ এই ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে ৩৭ বলে করেন ৫২ রান। এরপর অধিনায়ক আরিফুল হক গিয়ে দুটি ছক্কা মেরে আউট হয়ে যান। জাকের আলি দারুণ কয়েকটি শট খেলেন পরে। শেষ পর্যন্ত ২৩ বলে ৪৭ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি জাকের। তার দল থামে ১৭৩ রানে। চিটাগাং কিংসের পক্ষে ৩টি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ২টি উইকেট নিয়েছেন আলিস আল ইসলাম। দুর্দান্ত ব্যাটিং এর জন্য ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন গ্রাহাম ক্লার্ক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় প্রিমিয়ার ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
পরবর্তী নিবন্ধপিএসএলে পেশাওয়ার জালমিতে নাহিদ রানা করাচি কিংসে বাবরের সাথে আছেন লিটন