কাপ্তাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ (কপাবিকে) গত এক মাস ধরে পূর্ণদ্যোমে সচল রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি জেনারেটরের সবগুলো বর্তমানে সচল আছে। এই ৫টি জেনারেটর থেকে দৈনিক ২২০ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, এ বছর কাপ্তাই এবং রাঙ্গামাটিতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে। অধিক বৃষ্টির কারণে কাপ্তাই লেকে পানি অনবরত বৃদ্ধি পায়। আর লেকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বেড়ে যায়।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার সময় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এই মুহুর্তে কাপ্তাই লেকে ১০৩ ফুট মিন সি লেভেল পানি রয়েছে। অনবরত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি জোনারেটরের সবগুলোই বর্তমানে সচল রয়েছে। আর এই ৫টি জেনারেটর থেকে শনিবার ২২১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়েছে বলেও তিনি জানান। বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বর্তমানে যে পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, বিগত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবগুলো ইউনিট একযোগে সচল রয়েছে। এবং প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। তবে বর্তমানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হচ্ছে এর চেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হলে লেকের পানি আরো বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা রয়েছে। কাপ্তাই লেকে সর্বোচ্চ ১০৯ ফুট মিন সি লেভেল পানি ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। তবে সাধারণত লেকের পানি ১০৬ ফুট মিন সি লেভেল এর কাছাকাছি পৌঁছলেই কর্তৃপক্ষ পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর ৩ ফুট পানি বাড়লেই কাপ্তাই লেকের পানি ছাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে বলেও সূত্রে জানা গেছে। অবশ্য পানি ছাড়ার অবস্থা তৈরি হলে কর্তৃপক্ষ প্রথম দিকে ২ ইঞ্চি, ৪ ইঞ্চি, ৬ ইঞ্চি হারে লেকের পানি ছেড়ে থাকে। যার ফরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবার কোন সম্ভাবনা থাকে না এবং অবস্থার প্রেক্ষিতে এই পরিমাণ পানি ছাড়া হলে বিশেষ কোন ক্ষয়ক্ষতিরও সম্ভাবনা থাকবে না। তবে সব মিলিয়ে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্ট সবাই সন্তোষ প্রকাশ করছেন।