কোরআন খতমের জন্য কিছু টাকা দান করার কথা বলে এক মাজারের খাদেমকে অপহরণ করা হয়েছে। পরে মুক্তিপণের টাকা নিতে এসে ধরা পড়লেন এক অপহরণকারী। সেই সাথে উদ্ধার করা হয় ওই খাদেমকে। ঘটনাটি ঘটেছে লোহাগাড়ায়। পশ্চিম কলাউজান মান্নান মিয়াজী গায়েবী কোরআন মাজার শরীফের ওই খাদেমের নাম মো. নুরুল আলম (৫৮)। তিনি উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের পশ্চিম কলাউজান মান্নান মিয়াজী বাড়ির মৃত গুরা মিয়ার পুত্র।
পুলিশ জানায়, মাজারে আসা-যাওয়ার সুবাদে অপহরণকারী আকতার হোসেনের সাথে খাদেম মো. নুরুল আলমের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে ২২ এপ্রিল দুপুরে আকতার হোসেন খাদেম নুরুল আলমের মোবাইল ফোনে চরম্বা ইউনিয়নের কালোয়ার পাড়ায় তার এক আত্মীয়ের বাড়ির লোকজন মাজারে কোরআন খতম করার জন্য কিছু টাকা দান করবে বলে জানায়। টাকা নেয়ার জন্য ইউনিয়নের নাফারটিলা বাজারে যেতে বলেন ভিকটিমকে। অপহরণকারী পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ভিকটিম সরল বিশ্বাসে একইদিন বিকেলে সেখানে যান। এরপর অপহরণকারী আকতার হোসেন মোটরসাইকেল যোগে ভিকটিমকে চরম্বা ইউনিয়নের কালোয়ার পাড়ায় এক অপরিচিত লোকের বাড়িতে নিয়ে যান।
সেখানে ইফতার করার পর কোরআন খতমের টাকা দেয়ার কথা বলে দুই অপহরণকারী ভিকটিমকে মোটরসাইকেলের মাঝখানে বসিয়ে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। এরপর ২৩ এপ্রিল রাত ১টার দিকে অপহরণকারীরা জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ভিকটিমের স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান খাদেম মো. নুরুল আলমের স্ত্রী। পুলিশের পরামর্শ মতে, ভিকটিমের স্ত্রী এতো রাতে বিকাশের দোকান কোথায় পাবো বলে জানায় ও সরাসরি এসে টাকা নিতে বলেন। এতে অপহরণকারীরা রাজি হয়ে যায়। তারা মুক্তিপণের টাকা নিতে ভিকটিমকে সাথে নিয়ে লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের কাজির পুকুর পাড় এলাকায় আসার কথা জানায়। তখন আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং মো. রাজা মিয়া নামে এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এ সময় অন্যজন কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে রাজা মিয়ার তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গ্রেপ্তার অপহরণকারী মো. রাজা মিয়া (২৮) উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাইয়ার পাড়ার আবদুল আলমের পুত্র। ঘটনার সাথে জড়িত আকতার হোসেন (৪০) লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের সওদাগর পাড়ার আবুল হোসেনের পুত্র বলে জানিয়েছে পুলিশ।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, ভিকটিমের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দুই অপহরণকারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার অপহরণকারীকে রোববার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পলাতক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।