ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির মরদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য নেয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) মর্গে। নিয়মানুযায়ী পোস্টমর্টেম শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর হয়। কিন্তু পোস্টমর্টেম শেষে টাকা ছাড়া লাশ না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সমীরন নাথ নামে মর্গের এক স্টাফের বিরুদ্ধে।
সমীরন নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ- লাশ নিয়ে যেতে চাইলে স্বজনদের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা দাবি করেছেন তিনি। টাকা ছাড়া লাশ নিয়ে যেতে দেননি। ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম আব্দু্ন নুর। তিনি পটিয়ার হরিখাইন এলাকার আব্দুর ছবুরের ছেলে। অনেকটা ভবঘুরে প্রকৃতির আব্দুন নুর গত ২৭ ডিসেম্বর ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। দূর্ঘটনার পর পোস্টমর্টেম করার জন্য অজ্ঞাত হিসেবেই চমেক মর্গে আনা হয় লাশটি। পরে পুলিশ নিহতের পরিচয় খুঁজে বের করে। পটিয়া থানা ও রেলওয়ে থানা পুলিশ আব্দুন নুরের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে মুঠোফোনে জানান।
হরিখাইন এলাকার ইউপি সদস্য মো. শওকত অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ আমাকে ফোন করে আব্দুন নুরকে চিনি কী না জানতে চান। পরে লাশ মর্গে আছে বলে আমাকে জানানো হয়।
খবর পেয়ে আমরা মঙ্গলবার রাতে লাশ নিতে মর্গে আসি। কিন্তু সমীরন নাথ আমাদের জানায় রাতে লাশ নিতে হলে দশ হাজার টাকা লাগবে। আর দিনে হলে ৬ হাজার টাকা লাগে। আমরা পুলিশও সাথে নিয়ে আসি। কিন্তু পুলিশের সামনেও সমীরন নাথ একই কথা বলেন। লাশ নিয়ে যেতে দেন নি।
যদিও সমীরন নাথ টাকা চাওয়ার অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন সমীরন নাথ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, লাশটি প্রথমে বেওয়ারিশ ছিল। পরে ওয়ারিশ আসে। তারা লাশ নিতে রাতে যখন আসে, তখন তো পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে লাশ দেওয়ার সুযোগ ছিলনা। সে জন্য লাশ দেয়া হয়নি। টাকা দাবির অভিযোগ সত্য নয়। কারো সাথে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত কোন কথা বলেন নি বলে দাবি সমীরন নাথের।
জানতে চাইলে বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান চমেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সুমন মুৎসুদ্দী। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সমীরন নাথ জানিয়েছে আশিক নামে এক জন টাকা-পয়সা নিয়ে এটি করতে পারে। আশিক মর্গের কেউ নয়। তবে আমরা যেহেতু সন্ধ্যায় বিষয়টি জেনেছি, সেহেতু কাল (বৃহস্পতিবার) অফিস সময়ে আমরা বিষয়টি দেখবো। এমনিতে মর্গে কোন টাকা-পয়সা দিতে হয়না জানিয়ে বিভাগীয় প্রধান বলেন, তবে মর্গে যিনি ডোম আছেন। তাকে টিপস হিসেবে হয়তো কিছু দেয়।
অভিযোগ সত্য হয়ে থাকলে এটি অনেক গুরুতর বলে মনে করেন চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার। এ বিষয়ে খোঁজ নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।