লোহাগাড়ায় টাকার বিনিময়ে রিয়াল নিতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন সৈয়দ তৌহিদুর রহমান (৪২) নামে এক যুবক। তিনি বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের সৈয়দ আক্তার আহমদের ছেলে। গত বুধবার উপজেলার পুরাতন বিওসি গোলাম আলী পাড়াস্থ কালা মিয়ার ভাড়া বাসা থেকে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পৌর সদরের ৭ নাম্বার ওয়ার্ডের চৌধুরী কান্দা সদরদী গ্রামের মৃত তেহার উদ্দিন ফকিরের ছেলে মো. সরওয়ার ফকির (৫৪), একই এলাকার জমির শেখের ছেলে কামাল শেখ (৩৪), মো. খানের ছেলে শওকত খান (৬০) ও একই উপজেলার আলগী ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের ছোট খারদিয়া গ্রামের কাওসার বেগের ছেলে মো. সোহেল বেগ (৩০)। পুলিশ জানায়, কিছুদিন পূর্বে আজিজনগর এলাকায় প্রতারক সরওয়ার ফকিরের সাথে ভুক্তভোগী যুবকের পিতা সৈয়দ আক্তার আহমদের পরিচয় হয়। সেই সুবাধে সরওয়ার ফকির কিছু জায়গা ক্রয় করবে বলে জানায়। কথার মধ্যে সৈয়দ আক্তার আহমদ প্রতারককে জানায়, কিছুদিনের মধ্যে তারা স্বামী–স্ত্রী পবিত্র ওমরা হজ্ব পালন করতে যাবেন। তখন সরওয়ার ফকির জানায়, তার কাছে সৌদি রিয়াল আছে বাংলা টাকার বিনিময়ে সেগুলো বিক্রি করবেন। তখন ভুক্তভোগীর পিতা জানায়, তিনি একজন বয়োবৃদ্ধ এই বিষয়ে কিছুই জানেন না।
উক্ত বিষয়ে কিছু জানতে হলে প্রতারককে ভুক্তভোগীর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। গত ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন দিয়ে আমিরাবাদ স্টেশনে এসে দেখা করতে বলেন প্রতারক সরওয়ার ফকির। পরদিন সকালে ওই প্রতারক পুনরায় ফোন করে একই কথা বলেন। এক পর্যায়ে গত ৩০ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার দিকে আমিরাবাদ স্টেশনে এসে প্রতারককে ফোন দেয় ভুক্তভোগী সৈয়দ তৌহিদুর রহমান। প্রতারক সরওয়ার ফকির তখন ভুক্তভোগীকে আমিরাবাদ স্টেশনের উত্তর পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে আসতে বলেন। কিছুক্ষণ পর প্রতারক সরওয়ার ফকির ও সোহেল বেগ কৌশলে ভুক্তভোগীর শরীর স্পর্শ করলে তিনি প্রায় জ্ঞান–বুদ্ধিহীন হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীকে সাথে নিয়ে কথা বলতে বলতে কিছু সময় হাঁটাহাটি করেন। পরবর্তীতে প্রতারকরা কৌশলে তৌহিদুরের হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভেতর নগদ ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
সৌদি রিয়াল ভর্তি ব্যাগ আনবে বলে তৌহিদুরকে দাঁড় করে রেখে তারা কৌশলে চলে যায়। প্রতারকরা দীর্ঘ সময় ফিরে না আসায় ভুক্তভোগী যুবক তাদের মোবাইলে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে থানা পুলিশসহ স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে গত ১ জানুয়ারি দুপুরে জানতে পারেন প্রতারকরা পুরাতন বিওসিস্থ গোলাম আলী পাড়াস্থ কালা মিয়ার ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। তখন ভুক্তভোগী ও তার স্বজনরা সেখানে গিয়ে প্রতারক সরওয়ার ফকির ও সোহেল বেগকে শনাক্ত পূর্বক আটক করেন। পরবর্তীতে তাদের সহযোগিতায় প্রতারক কামাল শেখ ও শওকত খানকে আটক করা হয়েছে।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৪ প্রতারককে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন। উদ্ধার করা হয়েছে অবৈধভাবে আত্মসাৎকৃত নগদ ৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার প্রতারকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়। বৃহস্পতিবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।