টাইটানিক দেখতে গিয়ে পাঁচ পর্যটকসহ উধাও সাবমেরিন

মজুত অক্সিজেন ৭০ ঘণ্টার, খোঁজ চলছে আটলান্টিকের জলে

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ২১ জুন, ২০২৩ at ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পর্যটকবাহী একটি সাবমেরিন নিখোঁজ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সাবমেরিনটির কোনো খোঁজ মেলেনি। টাইটান সাবমার্সিবল নামের সাবমেরিনটিতে পাঁচজন পর্যটক ছিলেন। এতে ৭০ ঘণ্টা চলার মত অঙিজেন মজুদ আছে। সেটির সন্ধানে এখন ব্যাপক উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, গত রোববার সাগরে ডুব দেয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরে ছোট আকারের ওই ডুবোজাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পানির নীচে যাওয়ার সময় ডুবোজাহাজটিতে সাধারণত চারদিন চলার মতো জরুরি অক্সিজেন থাকে। এই ট্যুরের আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান ওশেনগেট জানিয়েছে, সাবমেরিনে থাকা পাঁচ পর্যটককে উদ্ধার করতে সবগুলো বিকল্প যাচাই করে দেখা হচ্ছে। সরকারি সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার নৌবাহিনী এবং গভীর সাগরে কাজ করে, এমন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জনস থেকে যাত্রা শুরু করা নিখোঁজ সাবমেরিনের যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ৫৮ বছর বয়সী ব্রিটিশ ধনকুবের ব্যবসায়ী এবং অভিযাত্রী হ্যামিশ হার্ডিং, পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান। ফরাসি অভিযাত্রী পলহেনরি নার্গেওলে এবং ওশেনগেটের প্রধান নির্বাহী স্টকটন রাশও ডুবোযানটিতে ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। এ ধরনের ছোট আকারের সাবমার্সিবল বা ডুবোজাহাজে সাধারণত একজন চালক এবং তিনজন যাত্রী থাকে। আরেকজন থাকে ‘কনটেন্ট এক্সপার্ট’ যিনি সাগরের নীচের সবকিছু পর্যটকদের কাছে ব্যাখ্যা করেন।

জানা যায়, কার্বনফাইবার দিয়ে তৈরি ক্যাপসুলটি নাসা এবং ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে ডিজাইন করা হয়েছে এবং এটি ‘পাথরের চাইতেও কঠিন’। মধ্য আটলান্টিক মহাসাগরের তিন হাজার ৮০০ মিটার বা সাড়ে ১২ হাজার ফুট গভীরে আটলান্টিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটদিনের এই ভ্রমণের জন্য আড়াই লাখ ডলার খরচ করতে হয়। মার্কিন কোস্ট গার্ড বলেছে, এমন একটি দুর্গম এলাকায় অনুসন্ধান চালানো একটি চ্যালেঞ্জ। অনুসন্ধানের দুটি দিক আছে, একটি হল সমুদ্র পৃষ্ঠে অনুসন্ধান যদি টাইটান সমুদ্রের পৃষ্ঠে ফিরে আসে এবং সেখান থেকেই কোনোভাবে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। এছাড়া পানির নিচে শব্দ তরঙ্গের সাহায্যে সোনার অনুসন্ধানও আরেকটি উপায় রয়েছে। সমুদ্র পৃষ্ঠে সাবমার্সিবল খোঁজার জন্য কোস্ট গার্ড দুটি সি১৩০ হারকিউলিস আকাশযান পাঠিয়েছে, এবং একটি কানাডিয়ান সি১৩০ এবং একটি পি৮ আকাশযানও অনুসন্ধানে কাজ করছে, যাদের পানির নিচে সোনার অনুসন্ধানের ক্ষমতা রয়েছে। জাহাজটিকে যদি পানির নিচে পাওয়া যায় তাহলে সেটি উদ্ধার করতে অতিরিক্ত দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হবে এবং মার্কিন নৌবাহিনীর সাহায্যের জন্য যোগাযোগ করা হবে। কানাডার প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, বিমানটির পাশাপাশি কানাডিয়ান কোস্ট গার্ডদের জাহাজ ‘কোপিট হপসন’ অনুসন্ধানে সাহায্য করছে। গতবছর টাইটানে চড়ে ভ্রমণ করার সুযোগ হয়েছিল সিবিএস টেলিভিশনের সাংবাদিক ডেভিড পোগের। তিনি বলেন, আরোহীদের টাইটানে বসানোর পর বাইরে থেকে বোল্ট লাগিয়ে পুরো ডুবোযান সিল করে দেওয়া হয়। ফলে ভেতরে থাকা আরোহীদের বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। এমনকি সাবমারসিবলটি যদি নিজে নিজে সমুদ্রপৃষ্ঠে উঠে আসতে পরে, বাইরের কারো সাহায্য ছাড়া আরোহীদের পক্ষে বের হওয়া সম্ভব না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধধনীদের জন্য ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় শীর্ষে সিঙ্গাপুর
পরবর্তী নিবন্ধচসিকের ১ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকার বাজেট