টপ অর্ডারের ব্যর্থতা, ফের ভরসায় মুশফিক-লিটন

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ২৭ মে, ২০২২ at ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা টেস্টের প্রথম দুদিন মুশফিক এবং লিটনের কল্যাণে দারুণ খেলেও শেষ দিনে এসে হারের মুখে পড়েছে টাইগাররা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ভয়াবহ ব্যর্থতার পরিচয় দিলো বাংলাদেশের টপ অর্ডার। এবার ২৩ রানে সাজঘরে ফিরেছেন প্রথম চার ব্যাটার। ফলে দেখা দিয়েছে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা। আবারও মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের কাধে পড়লো সব দায়িত্ব। প্রথম ইনিংসে লিটনের আগে ব্যাটিংয়ে নামা সাকিব এই ইনিংসে এখনো নামেননি। তারপরও লিটন-মুশফিক কি দ্বিতীয় ইনিংসেও দলকে টানতে পারবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন বৃষ্টিতে পুরো এক সেশন ভেসে যাওয়ায় গতকাল নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা আগে শুরু হয় চতুর্থ দিনের খেলা।

চতুর্থ দিনে বলতে গেলে প্রায় পুরো দিনই বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে খেলেছেন শ্রীলংকার দুই ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস এবং দিনেশ চন্ডিমাল। ১৯৯ রানের জুটি গড়েন দুজন। দুজনই তুলে নেন সেঞ্চুরি। ফলে প্রথম ইনিংসে শ্রীলংকা সংগ্রহ করে ৫০৬ রান। আর তাতে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের চাইতে লংকানরা এগিয়ে যায় ১৪১ রানে। আজ শেষ দিনে ইনিংস পরাজয় এড়াতে স্বাগতিকদের দরকার এখনো ১০৭ রান। আর সেটা তুলতে পারে কিনা টাইগাররা সেটাই এখন দেখার বিষয়।

দ্বিতীয় ইনিংসেও বদলায়নি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারের হতাশার চিত্র। এবার ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলায় ছয় নম্বরে নামানো হয়েছে লিটন দাসকে। প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিয়ে মুশফিকের সঙ্গে ৩.৫ ওভারে ১১ রান যোগ করেছেন লিটন। মুশফিক ১৪ ও লিটন ১ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করবেন। ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের মত এই ইনিংসেও রানের খাতা খোলার আগেই ফিরলেন তামিম। জোড়া শূন্য নিয়ে ফিরলেন এই ওপেনার। ৪ রান পর নেই নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি করেন ২ রান।

যে অধিনায়ক রানে ফেরার জন্য দোয়া করছিলেন বোর্ড সভাপতি সেই অধিনায়ক মোমিনুল হক ফিরলেন জোড়া শূন্য মেরে। প্রথম ইনিংসের মত এই ইনিংসেও রানের দেখা পাননি টাইগার দলপতি। ব্যর্থতার ষোলকলা পূরণ করে ফিরলেন তিনি। ২৩ রানের মাথায় মাহমুদুল হাসান জয় ফিরেন ১৫ রান করে। ২৩ রানে ৪ উইকেট নেই। আগের ইনিংসে ২৪ রানে ছিল না ৫ উইকেট। তবে আগের ইনিংসের মত এই ইনিংসেও হাল ধরেন মুশফিক এবং লিটন। এ দুজন ৩৪ রানে গিয়ে দিন শেষ করেন।

আগের দিনের ৫ উইকেটে ২৮২ রান নিয়ে গতকাল চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেন ম্যাথিউস এবং চন্ডিমাল। গতকাল আরো ৬৫.১ ওভার ব্যাটিং করে ২২৪ রান যোগ করে শ্রীলঙ্কা। টানা দুই সেশনের বেশি ব্যাট করেন ম্যাথিউস এবং চন্ডিমাল। গড়েন ১৯৯ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত এবাদত এসে ভাঙ্গেন এ জুটি। তিনি ফেরান চন্ডিমালকে। ফেরার আগে ২১৯ বলে ১১টি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ১২৪ রান করেন চন্ডিমাল। প্রায় চার বছর পর সেঞ্চুরি করলেন চন্ডিমাল। এরপর পর অবশ্য লংকানরা আর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি খুব একটা। তবে লড়াই করে গেছেন ম্যাথিউস একাই।

একপ্রান্তে ম্যাথিউস দাঁড়িয়ে থাকলেও অপরপ্রান্তে উইকেট পড়ছিল নিয়মিত বিরতিতে। শেষ পর্যন্ত ৫০৬ রানে অল আউট হয় শ্রীলংকা। ক্যারিয়ারের ১৩ তম সেঞ্চুরি তুলে নেন ম্যাথিউস। ১৪৫ রানে অপরাজিত ছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তার ৩১২ বলের ইনিংসটিতে ১২টি চার এবং দুটি ছক্কার মার ছিল। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সাকিব এবং এবাদতের মধ্যে প্রতিযোগীতা চলছিল ৫ উইকেট নেওয়ার। শেষ পর্যন্ত এবাদতকে পেছনে ফেলে সাকিব তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৯ তম ৫ উইকেট। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কিংস্টন টেস্টের পর ফের পাঁচ উইকেট পেলেন সাকিব। ১৪৮ রানে ৪টি উইকেট নিয়েছেন এবাদত। ঘরের মাঠে টেস্টে এটিই এবাদতের সেরা বোলিং ফিগার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিজার নয়, ১২ ঘণ্টায় ৬ প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি
পরবর্তী নিবন্ধস্বর্গ পেতে বন্ধুকে কুপিয়ে হত্যা একজনের মৃত্যুদণ্ড