লোহাগাড়ার চরম্বায় খালের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে সড়ক ও শতাধিক বসতঘর। ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের রাজঘাটা মাঝের পাড়ায় টংকাবতী খালে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক বসতঘর। বর্তমানে স্থানীয়রা আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছেন। জানা যায়, চরম্বা ও কলাউজান ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক রাজঘাটা মাঝের পাড়া অংশের প্রায় ১ হাজার ৫০ ফুট সড়ক ইতোমধ্যে খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যার ফলে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত ২০ বছর যাবত বর্ষা এলে খালের পানি বৃদ্ধি পেলে পাড়ে ভাঙন দেখা দেয়। এভাবে ভাঙনে খালের গর্ভে বিভিন্ন সময় বিলীন হয়েছে প্রায় ৫০টিরও অধিক বসতঘর। এরমধ্যে চলতি বছর বর্ষায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৬টি পরিবার। ভাঙন বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে খালপাড়ের আরও অর্ধশতাধিক পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। খালপাড়ের বাসিন্দাদের এমন দুর্ভোগ, দুর্দশার চিত্র দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। তারা এই সমস্যা থেকে নিস্তার চান।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, খালের পাড় ছিল চলাচলের রাস্তা। রাস্তার পাশে বহু বসতঘর। ইতোমধ্যে পানির স্রোতে বহু বসতঘর বিলীন হয়ে গেছে। খালে পানি বাড়লে আরও বহু বসতঘর বিলীন হবার আশংকা রয়েছে। খাল পাড়ে বসবাসকারীদের চোখে মুখে আতংকের চাপ দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় এনামুল হক জানান, গত ২০ বছর ধরে এমপি থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত এই এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ভাঙনের কারণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সময় প্রায় শতাধিক বসতঘর খাল পাড় থেকে বিলীন হয়েছে।
স্থানীয় শামসুন্নাহার জানান, বিগত বর্ষার তুলনায় এবার ভাঙন বেশি দেখা দিয়েছে। চলতি বর্ষার শুরুতে খালের পাড় ভেঙে অনেক বসতঘর বিলীন হয়ে গেছে। সামনে আবারও বৃষ্টি হলে কিংবা আগামী বর্ষায় আমাদের ভিটে মাটি যা অবশিষ্ট আছে সেগুলো হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হতে হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুহাম্মদ মনির উদ্দিন জানান, টংকাবতী খালের রাজঘাটা মাঝের পাড়া এলাকায় ক্রমাগত রাস্তা ভাঙনের ফলে চলতি বছর থেকে চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। বহু বছর থেকে ওই স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে শতাধিক বসতঘর বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে অর্ধশতাধিক বসতঘর। ভাঙন ঠেকাতে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্ধ থেকে সংস্কার কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু পানির স্রোতে সব বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের টিম ভাঙন এলাকায় এসে একাধিক বার পরিমাপ করে গেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দ্রুত ব্লক দিয়ে ভাঙন এলাকা সংস্কার পূর্বক চলাচলের পথ সুগম ও বসতঘর ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ–সহকারী প্রকৌশলী সতেজ দেওয়ান জানান, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।