রংপুর–বরিশালের লড়াইয়ের আড়ালে লড়াইটা আসলে ছিল তামিম এবং সাকিবের। আর দ্বৈরথে জয়টা সাকিবেরই। দল জেতার পাশাপাশি তামিমের উইকেটটাও নিয়েছেন সাকিব। পাশাপাশি প্রথম রাউন্ডে হারের প্রতিশোধও নিল সাকিবের রংপুর। তবে ক্যাচ মিস, মিস ফিল্ডিং সব মিলিয়ে হতাশার এক ম্যাচ খেলল বরিশাল। যদিও যতই শেষের দিকে গড়াচ্ছিল ততই উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল ম্যাচটি। উত্তেজনাকর ম্যাচটি শেষ রংপুরের জয়ে।
গতকাল রংপুরের কাছে তামিমের দল ১ উইকেটে হেরেছে। আগেই প্লে অফ পর্ব নিশ্চিত করা রংপুর পয়েন্ট তালিকায় নিজেদের এক নম্বর স্থানটা আরো পোক্ত করল। অপরদিকে তামিমের বরিশালের প্লে–অপে যাওয়াটা এখনো ঝুলে থাকল। তামিমের দলের শেষ ম্যাচটা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে। সে ম্যাচের উপরই নির্ভর করছে বরিশালের প্লে–অফে যাওয়া। ১১ ম্যাচে বরিশালের পয়েন্ট ১২। চট্টগ্রমের পয়েন্টও সমান ম্যাচে ১২। আর খুলনার পয়েন্ট ১০ ম্যাচে ১০। তাই প্লে–অফ পর্বের শেষ দুটি স্থানের জন্য লড়াইটা দারুণ হচ্ছে। গতকালের ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ফরচুন বরিশাল শুরুটা দারুণ করেছিল। বিশেষ করে তামিম শুরু থেকেই ঝড় তুলছিলেন। বেন্টনের সাথে ৩৮ রানের জুটির মধ্যে তামিমের রান ৩৩। কিন্তু ঝড়টা থামিয়ে দিলেন সাকিব। তামিমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন সাকিব। মোমিনুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ২০ বলে ৩৩ রান করা তামিম। দ্বিতীয় উইকেটে শুরুর ঝড়টা ধরে রেখেছিলেন বেন্টন এবং কাইল মায়ার্স। ৭২ রানের জুটি গড়েন দুজন। ২৬ রান করা বেন্টনকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন নিশাম। এই পর্যন্ত সবকিছু ঠিক ছিল। পরেরটা আবু হায়দার রনির ইতিহাস। ইনিংসের ১৩তম ওভারের প্রথম বলে মুশফিককে ফেরালেন রনি। তৃতীয় বলে সৌম্য সরকার। পঞ্চম বলে কাই মায়ার্সকে ফিরিয়ে বরিশালকে চেপে ধরেন রনি। মায়ার্স ফিরেছেন ২৭ বলে ৪৬ রান করে। পরের ওভারে রনির শিকার মাহমুদউল্লাহ। নিজের তৃতীয় ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে ফিরিয়ে নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেওয়ার পাশাপাশি বরিশালকে স্বল্প রানে থামিয়ে দেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করে ফেলেন রনি। শেষ দিকে সাইফউদ্দিন ১০ এবং ম্যাক কয় ১২ রান না করলে দেড়শ রানও হতো না বরিশালের। শেষ পর্যন্ত ১৫১ রান তুলতে সমর্থ হয় বরিশাল। আবু হায়দার রনি নিয়েছেন ১২ রানে ৫ উইকেট।
১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিজের দ্বিতীয় বলেই বিদায় নিলেন এবারের বিপিএলে অভিষেক হওয়া মোমিনুল হক। সাকিব আল হাসানকে নিয়ে রীতিমত ঝড় তুলছিলেন ব্রেন্ডন কিং। ৫৩ রান যোগ করেন দুজন। কিংকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন মিরাজ। ২২ বলে ৪৫ রান করেন কিং। সাকিবও এগিয়ে যাচ্ছিলেন ঝড়ের বেগে। কিন্তু ব্যাট হাতে তামিমকে টপকাতে পারলেন না সাকিব। মিরাজের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাকিব ফিরেন ১৫ বলে ২৯ রান করে। পরের ওভারে সোহানকে ফেরান কেশভ মাহারাজ। দশম ওভারে মাহেদী হাসানকে ফেরান মিরাজ। নিজের পরের ওভারে ফিরতে পারতো নিশামও। কিন্তু প্রিতম কুমার সহজ ক্যাচটি ছেড়ে দেন। ১৭ রান করা মুরসকে ফিরিয়ে ম্যাচটা আবার জমিয়ে তুলেন ম্যাক কয়। দ্রুত ম্যাচ শেষ করতে চাওয়া নিশামকে ফেরান ম্যাক কয়। এই কিউই ব্যাটার করেন ১৭ বলে ২৮ রান। ১৩ রান করা প্রিটোরিয়াসকে ফেরালেন ম্যাক কয় তার তৃতীয় শিকার বানিয়ে। আবু হায়দার রনিকে ফিরিয়ে ম্যাচটাকে আবার জমিয়ে তুলেন মায়ার্স। খেলা গড়ায় শেষ ওভারে। যেখানে ৬ বলে রংপুরের জয়ের জন্য দরকার ২ রান। ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে দুই রান নিয়ে ম্যাচ জিতে আসেন শামীম এবং হাসান মাহমুদ। ৩ বল হাতে রেখে ১ উইকেটের জয় তুলে নেয় রংপুর রাইডার্স।