নগরে চলতি মাসের প্রতিদিন রেকর্ড হওয়া তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। অতিরিক্ত তাপমাত্রার প্রভাবে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে জনজীবন। দিনের কড়া রোদে হাঁসফাঁস করে সবাই। এ অবস্থায় গতকাল কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসে বৃষ্টি। এদিন দুপুরে ঝড়ো হওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হয়েছে শহরে। এতে কমে আসে গরমের তীব্রতা। বৃষ্টির আগে দুপুর ১২টার পর কালো মেঘে ছেয়ে যায় শহর। অন্ধকার হয়ে ওঠে চারদিক। দুপুরেই নেমে আসে সন্ধ্যা। এতে সড়কে চলাচল করার সময় যানবাহনে হেডলাইট জ্বালাতে দেখা গেছে। অবশ্য হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় ভিজে যাওয়া পথচারীদের কিছুটা দুর্ভোগও হয়েছে। তারা বিভিন্ন শপিং সেন্টার ও দোকানপাটে আশ্রয় নেন। ভাসমান ব্যবসায়ী ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বেকায়দায় পড়েন বেশি।
এদিকে ঝড়ো হাওয়া হলেও শহরের কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল ৫টার দিকে আগ্রাবাদ ফায়ার ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করলে ঝড়ের প্রভাবে শহরের কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর ফায়ার স্টেশনে আসেনি বলে জানান অপারেটর।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত এপ্রিল মাসে আবহাওয়ায় যে উত্তাপ থাকে তা বৃষ্টি হলে কমে যায়। কিন্তু গত শনিবার পর্যন্ত টানা ৬ দিন নগরে কোনো বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেনি আবহাওয়া অফিস। যা ‘ট্রেস’ পর্যায়েও ছিল না। বৃষ্টিপাত না হলেও এ সময়ে প্রতিদিন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এর মধ্যে ৫ এপ্রিল ও ৬ এপ্রিল রেকর্ড হয়েছে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ দশমিক ২ ডিগ্রি বেশি। ফলে বাড়তে থাকে গরমের অনুভূতি। গতকালের বৃষ্টি গরম কিছুটা কমিয়েছে।
এর আগে ১ এপ্রিল ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২ এপ্রিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩ এপ্রিল ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ৪ এপ্রিল ৩২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পতেঙ্গা কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গতকাল দুপুরে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়। এটি মূলত ছিল কালবৈশাখী। গতকাল চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকাল ৩টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পূর্বাভাস কর্মকর্তা এম এইচ এম মোছাদ্দেক জানান, আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পশ্চিম/দক্ষিণ–পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। এদিকে আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রামে নদী বন্দরের জন্য ১ নং নৌ সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।