জয়ে চোখ বাংলাদেশের

শেষ বিকেলের রোমাঞ্চের পর স্মরণীয় সকালের অপেক্ষা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

 

মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলের রোমাঞ্চ নিয়ে চতুর্থ দিনে স্মরণীয় সকালের অপেক্ষায় আছেন সাকিবরা। এই হাতছানিতে শুরু হবে টেস্টের চতুর্থ সকাল। তৃতীয় দিন শেষে যে সমীকরণ তাতে ভারতের জিততে লাগবে ১০০, আর বাংলাদেশের প্রয়োজন ৬ উইকেট। তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে মিরপুরের উইকেট যেমন আচরণ করছে, তাতে কিন্তু সাকিবমিরাজরা স্বপ্ন দেখতেই পারেন। ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের চোখ তাই জয়ের দিকেই স্থির আছে। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে লিটন দাসও জোরালো কণ্ঠে বলেছেন, এই মুহূর্তে এগিয়ে তারাই।

সমীকরণে সাধারণ দৃষ্টিতে হয়তো এগিয়ে ভারত। কিন্তু এই ম্যাচের যে বাস্তবতা, উইকেটের যে অবস্থা, চতুর্থ ইনিংসের চাপ আর পারিপার্শ্বিকতা, সব মিলিয়ে সম্ভাবনায় সমান কিংবা এগিয়ে হয়তো বাংলাদেশই। অথচ এই ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশ পড়ে থেকেছে পেছনে। প্রথম দুই দিন তো বটেই,

ভারতের দাপট ছিল তৃতীয় দিনের দুই সেশন, এমনকি তৃতীয় সেশনের শুরুর ভাগেও। কিন্তু সেশনের শেষ ঘণ্টায় মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ দাঁড়িয়ে এখন এমন মোড়ে, যেখান থেকে বাংলাদেশের জয় খুবই সম্ভব। তৃতীয় দিনে মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের দেওয়া ১৪৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারায় ভারত। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ২২৭ রানের জবাবে ৮৭ রানের লিড নেয় তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২৩১ রানে অল আউট হলে ১৪৫ রানের টার্গেট পায় ভারত। তৃতীয় দিনের শেষ দিকে ব্যাট করতে নামলে ভারতের চার ব্যাটারকে দ্রুতই সাজঘরে ফেরায় বাংলাদেশ।

১৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় ভারত। দলীয় ৩ রানে ওপেনার লোকেশ রাহুলকে আউট করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এরপর দলীয় ১২ রানে চেতেশ্বর পূজারাকে সাজঘরে ফেরান মেহেদী মিরাজ। ১২ বলে মাত্র ৬ রান করে আউট হন পূজারা। এরপর শুবমন গিল ও অক্ষর প্যাটেল মিলে শুরুর চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। দলীয় ২৯ বলে ফের উইকেট হারায় ভারত। ইনিংসের ১৪তম ওভারের মিরাজকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফিরে যান গিল। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন কোহলি। এরপর দলীয় ৩৭ রানে কোহলিকে আউট করেন মিরাজ। ২২ বলে মাত্র ১ রান করে আউট হন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান সংগ্রহ করে তৃতীয় দিন শেষ করে ভারত। জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ১০০ রান। অক্ষর প্যাটেল ৫৪ বলে ২৬ ও উনাদকাত ৮ বলে ৩ রান করে অপরাজিত আছেন।

এর আগে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেই ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটে বাংলাদেশের। ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ৫, মোমিনুল হক ৫, অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ১৩ ও মুশফিকুর রহিম ৯ রান করে আউট হন। আরেক ওপেনার জাকির হাসান ৩৭ ও লিটন দাস শূন্য হাতে অপরাজিত থেকে প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ। লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে নিজের অর্ধশতকের দেখা পান জাকির হোসেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশকে লিড পাইয়ে দেন তিনি। তবে নিজের অর্ধশতক পূরণের পরেই আউট হয়ে যান জাকির। ১৩৫ বলে ৫১ রান করে উমেশ যাদবের বলে আউট হন তিনি। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন মেহেদী মিরাজ। তবে ক্রিজে এসেই আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান মেহেদী। দলীয় ১১৩ রানে রানের খাতা না খুলেই আউট হন মেহেদী মিরাজ। এরপর ক্রিজে আসা নূরুল হাসান সোহানকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন লিটন দাস। তবে দলীয় ১৫৯ রানে আউট হন দারুণ ব্যাটিং করতে থাকে সোহান। ২৯ বলে ৩১ রান করে আউট হন তিনি। এরপর তাসকিনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন লিটন দাস। লিটনকে ভালো সঙ্গ দেন তাসকিন আহমেদ। লিটনের সঙ্গে ৬০ রানের মহামূল্য জুটি গড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৫ রান সংগ্রহ করে চা পানের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরে ব্যাটিং চালিয়ে যান লিটন দাস। তবে দলীয় ২১৯ রানে আউট হন লিটন। ৯৮ বলে ৭৩ রান করে পেসার সিরাজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন তাইজুল ইসলাম। তবে এসেই আউট হন তিনি। দলীয় ২২০ রানে ৫ বলে মাত্র ১ রান করে আউট হন তাইজুল। এরপর শেষ ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে আসেন খালেদ আহমেদ। দলীয় ২৩১ রানে খালেদ রান আউট হলে ২৩১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদ ৪৬ বলে ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন। ভারতের পক্ষে অক্ষর প্যাটেল ৩টি, অশ্বিন ও সিরাজ নেন ২টি করে উইকেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসারের আমদানি বাড়ছে
পরবর্তী নিবন্ধকারা আছেন কমিটিতে