জয়ের স্বস্তি বাংলাদেশ শিবিরে

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ৮ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

যে টেস্ট আড়াই দিনে শেষ হওয়ার কথা সে টেস্ট চলে গেল চতুর্থ দিনে। অবশ্য চতুর্থ দিনে চলে গেছে বললে ভুল হবে। বলতে হবে চতুর্থ দিনে নিয়ে গেল আইরিশ ব্যাটাররা। যদিও চতুর্থ দিনে গিয়ে আর সুবিধা করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশকে মোটেও পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি আইরিশরা। স্বস্তির জয় তুলে নিয়েছে সাকিবের দল। আগের দিন শেষে শঙ্কার কালো মেঘ একটু হলেও দানা বেঁধেছিল।

চতুর্থ দিন সকালে ঝলমলে রোদের মতোই তেজোদীপ্ত বোলিংয়ে ইবাদত হোসেন চৌধুরী। গুড়িয়ে দিলেন আইরিশদের লেজ। এরপর রান তাড়া খুব মসৃণ না হলেও প্রত্যাশিত জয়কে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়তে পারল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন দারুণ প্রতিরোধ গড়া আয়ারল্যান্ড বেশিক্ষণ টিকতে পারল না চতুর্থ দিনে।

মিরপুর টেস্ট ৭ উইকেটে জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে ১৮০ রানের পাশে কোনো লক্ষ্য দিতে চেয়েছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু শেষ দুই উইকেট দ্রুত তুলে নিয়ে তত দূর যেতে দেননি ইবাদত। আগের দিনের সঙ্গে ৬ রান যোগ করেই আইরিশদের ইনিংস থামে ২৯২ রানে। ১৩৮ রানের লক্ষ্য পৌঁছে যেতে বাংলাদেশকে খেলতে হয় ২৭.১ ওভার। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম খেলা শেষ করেন আরেকটি হাফ সেঞ্চুরি করে। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিনি একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি করলেন। আর সে সুবাধে ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও জিতলেন মুশফিক। দেশের মাঠে ৮ টেস্ট পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। সবশেষ জয়টি ছিল ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামেই। চতুর্থ দিন সকালে পঞ্চম ওভারে সাকিব আক্রমণে আনেন এবাদত হোসেন চৌধুরীকে। দ্বিতীয় বলেই এই পেসার ফিরিয়ে দেন মূল বাধা অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে। দুর্দান্ত ডেলিভারিতে স্টাম্প উপড়ে যায় তার। আটে নেমে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের লড়াকু ইনিংসটি থামে ৭২ রানে। এরপর ইনিংস শেষের অপেক্ষা। সেটিও হয় এবাদতের হাত ধরেই। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন গ্রাহাম হিউম। এবাদত শেষ করেন তিন উইকেট নিয়ে। তাইজুলের এক উইকেটের আক্ষেপ রয়েই যায়। ম্যাচ শেষ করেন তিনি ৯ উইকেট নিয়ে। বাংলাদেশের সামনে ১৩৮ রানের লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য তাড়া করতে ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী হিসেবে পাঠানো হয় লিটন দাশকে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে তামিমের বাউন্ডারিতে শুরু হয় বাংলাদেশের রান তাড়া। আর লিটন ছিলেন সাবলিল এবং আক্রমনাত্মক। দুই ওপেনার ৩২ রানে বিচ্ছিন্ন হরেও সেখানে লিটনের অবদান ২৩। ১৯ বলে ২৩ রান করেন লিটন। লিটনের ছোট্ট বিনোদন শেষ হয় অ্যাডায়ারের বলেই অদ্ভুতভাবে। শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে একটু আগেই ব্যাট চালিয়ে দেন তিনি। বল তার হেলমেটে লেগে হাতে লেগে পেছনে গিয়ে গড়িয়ে লাগে স্টাম্পে। তিনে নেমে শান্ত ভাল শুরুর ইঙ্গিত দিলেও ফিরেন মাত্র ৪ রান করে। দুই ইনিংসেই ব্যর্থ শান্ত। তবে দ্রুত দুই উইকেট হারালেও বাংলাদেশকে চাপে পড়তে দেননি মুশফিকুর রহিম। ক্রিজে গিয়েই আক্রমন শানাতে থাকেন মুশফিক। দ্রুত রানের চাকা ঘুরাচ্ছিলেন মুশফিক। আর তামিম তাকে বেশ ভাল সঙ্গ দিচ্ছিলেন। এই জুটি অবশ্য খেলা শেষ করতে পারেনি। লাঞ্চের পর লেগ স্পিনার বেন হোয়াইটের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন তামিম। তার ইনিংস থামে ৬৫ বলে ৩১ রান করে। পরে মুশফিককে নিয়ে দলকে জিতিয়ে তবে মাঠ ছাড়েন মোমিনুল হক। জয়সূচক রানটি আসে ম্যাচের সেরা মুশফিকের ব্যাট থেকেই। ৪৮ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৫১ রান করেন অপরাজিত থাকেন মুশফিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বিএনপি অপরাজনীতি করছে : কাদের
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা