বই হোক নিত্য সঙ্গী। জাতির সখ্যতা গড়ে উঠুক পড়ার সাথে। বই কিংবা পত্রিকা হোক যে কোন পড়া। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে ছোট–বড় স্ক্রিনে ছবি দেখে শেখার চেয়েও মুদ্রিত প্রকাশনা পাঠের শিক্ষাকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা হোক জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে। বড়দের পড়া দেখে উৎসাহিত হোক ছোটরা। বেশি বেশি পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ুক জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের।
আগেকার দিনে আমাদের শিশুকালে পাঠ্য বই পড়ার পাশাপাশি আমরা সহশিক্ষামূলক অনেক কিছু পড়েছি। অর্থাৎ যখন থেকে একটু জানতে বা বুঝতে শিখেছি ঠিক সেই ৮০ এর দশক থেকে। যেমনটি আমি তৃতীয় শ্রেণি থেকে পত্রিকা পড়ার প্রতি অভ্যস্ত হয়েছি পরিবার থেকে। কারণ আমাদের পরিবারের বড় ভাই প্রতিদিন দুইটা করে পত্রিকা পড়তেন। একটি চট্টগ্রামের এবং অন্যটি ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক। তখন থেকে আমি বিদ্যালয়ের নিয়মিত পাঠ শেষ করে অবসরে মনযোগ সহকারে পত্রিকা পড়তাম। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তো আরো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বেশি করে মনযোগ দিয়ে পড়তাম। পড়ার প্রতি আমার এই আসক্তি পরিবারের বড়জনেরা দেখত। কিন্তু তাঁরা আমাকে কিছু বলতেন না! অবশ্য তাঁদের বলারও ছিল না। কারণ আমি নিত্যনৈমত্তিক পাঠের পড়ালেখা ও প্রয়োজনীয় সব কাজকর্ম শেষ করে পত্রিকা পড়াতে মনযোগী হতাম। তখন পত্রিকা ও গল্পের বই পড়া আমার রীতিমতো শখ ছিল। এই পড়ার মাঝে তখন অনেক মজা ও আনন্দ উপভোগ করতাম। ২০০০ সাল থেকে আমার লেখালেখির প্রতি আগ্রহ জাগে এবং এক পর্যায়ে লেখালেখি শুরু করি। এভাবে আঞ্চলিক থেকে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের নানা মাধ্যমে আজ পর্যন্ত আমার লেখালেখি করা ও প্রকাশ হওয়ার সুযোগ হয়েছে। মূলত পড়ার প্রতি মনযোগী হওয়ার কারণে আজ আমার লেখালেখির অদম্য আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কিন্তু বর্তমান স্মার্ট বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার চেয়ে দেখার প্রতি বেশি আগ্রহী। তারা স্মার্ট তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে গ্রহণ করছে বেশি। তাই পড়ে শেখার চেয়ে দেখে শেখার প্রতি প্রবল জোক ছাত্র ছাত্রীদের। এইতো সেদিন কথা প্রসঙ্গে আমার এক ব্যাংকার বন্ধু বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির যুগে ব্যস্ত সময়ে এতো বই ও পত্রিকা পড়ার সময় কোথায় মানুষের! মুদ্রণকৃত প্রকাশনার পাঠ করার এতো সময় কার আছে! বন্ধুর মুখের এই অপ্রিয় ভাষা শুনে সেদিন আমি খুবই ব্যথিত হয়েছি, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। কোন পাঠক শ্রেণির মানুষের মুখ থেকে পড়ার প্রতি অবজ্ঞার কথা শুনলে লেখকশ্রেণির যে কারও হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হবে বলে সত্যিকার অর্থে আমি বিশ্বাস করি! আনন্দময় পাঠে পড়ার মাঝে মজা উপভোগ করুক জাতির ভবিষ্যত প্রজন্ম। সভ্য ও সুশিক্ষিত জাতিতে সমৃদ্ধ হোক আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।












