জোনাথন সুইফট (১৬৬৭–১৭৪৫)। একজন ইংরেজ সাহিত্যিক। ‘গ্যালিভার্স ট্রাভেলস’বইটি পড়েনি বোধ হয় এমন কিশোর পাঠক বিশ্বে কম পাওয়া যাবে। সেই যে দৈত্যের মতো গ্যালিভার্স, জাহাজ ডুবির ফলে ভাসতে ভাসতে চলে গেল লিলিপুটের দেশে। সেখানকার মানুষরা কেউই দু’ফুটের বেশি লম্বা নয়। লিলিপুটরা বিরাট আকারের মানুষ দেখে কতো কাণ্ডকীর্তিইনা করলো। দ্বিতীয়বার গ্যালিভার্স এসে পড়লো ব্রডিংনাগের দেশে সেখানকার অধিবাসীরা আকৃতিতে একেবারে দৈত্যের মতো। ‘গ্যালিভার্স ট্রাভেলস’ বিশ্ব শিশুসাহিত্যে ক্লাসিক গ্রন্থ হিসাবে স্বীকৃত। কোটি কোটি শিশু কিশোর পাঠককে মুগ্ধ করেছে বিশ্ববিখ্যাত এই চিরায়ত গ্রন্থটির লেখক জোনাথন সুইফ্রট। ইংরেজি সাহিত্যে সুইফটকে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাঙ্গাত্মক–কবিতা লেখক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তাঁর রচনার বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে অভিজাত শ্রেণীর ন্যাকামোকে ব্যাঙ্গ করা। তিনি নয়া ক্লাসিক্যাল যুগের একজন প্রতিভাবান লেখক হিসেবে সুপরিচিত। তিনি ১৬৬৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্মগ্রহণ করেন। ডাবলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ট্রিনিটি কলেজে থেকে ১৬৮৬ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৭০২ খ্রিষ্টাব্দে জোনাথন সুইফট ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ থেকে ডক্টর অব ডিভিনিটি ডিগ্রী লাভ করেন। ঐ বছরের বসন্তে ইংল্যান্ড সফরে যান। বিভিন্ন সাহিত্যিক পরিমণ্ডলে যুক্ত ছিল তাঁর পরিবার। ইংল্যান্ডে ভ্রমণকালীন সময়ে ১৭০৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশ করেন ‘এ টেল অব এ টাব’ ও‘ দ্য ব্যাটল অব দ্য বুকস’। এর ফলেতিনি লেখকরূপে মর্যাদা পেতে শুরু করেন। শুরু হয় তার সাহিত্যচর্চা তবে নামে ও ছদ্মনামে ১৭১০ খ্রিষ্টাব্দে রক্ষণশীল রাজনেতিক দল ’টোরি’র ‘দ্য একজামিনার’ নামে একটি সাময়িকপত্রের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৭২৬ খ্রিষ্টাব্দে গ্যালিভারর্স ট্রাভেলস নামের একটি ইংরেজি উপন্যাস রচনা করে তিনি সাহিত্যজগতে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। এটিকে ইংরেজি সাহিত্যের একটি ধ্রুপদি গ্রন্থ মনে করা হয়। তিনি ব্যাঙ্গাত্মক–কবিতার তুলনায় কবিতায় তিনি তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি। লেমুয়েল গ্যালিভার্স, আইজ্যাক বিকারস্টাফ, এমবি ড্রাপিয়ারসহ বিভিন্ন ছদ্মনামে তার সকল রচনাসমগ্র প্রকাশ করেছেন। সুইফট চমৎকার লেখক হিসেবে তার ব্যাঙ্গাত্মক–কবিতা রচনার জন্যে প্রসিদ্ধ ছিলেন। হার্বার্ট ডেভিসের সম্পাদনায় সাম্প্রতিককালে চৌদ্দ খণ্ডে কবিতাসমগ্র প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও, প্যাট রজেস ৯৫৩ পৃষ্ঠায় তার পূর্ণাঙ্গ কবিতা ও চিঠিপত্র নিয়ে ডেভিড ওলি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিন খণ্ডে পুস্তক প্রকাশ করেছেন। ১৭৪৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ শে অক্টোবর তিনি মুত্যৃবরণ করেন।