জেলেপল্লীতে ফের মাছ ধরার প্রস্তুতি

৫ দিন পর শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আর মাত্র ৫ দিন পর। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই যাতে সাগরে রওয়ানা দেওয়া যায় সেজন্য শহর ও শহরতলীসহ জেলার সামুদ্রিক নৌঘাটগুলোতে এখন চলছে প্রস্তুতি। নিষেধাজ্ঞার সময় যতই ফুরিয়ে আসবে জেলেদের প্রস্তুতিও ততই বাড়তে থাকবে বলে জানায় ট্রলার মালিক সমিতি।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কক্সবাজারের ট্রলারগুলো পোতাশ্রয়ে, ডকে অথবা কূলে তুলে রাখা হয়েছে। ফলে কক্সবাজারের লক্ষাধিক জেলে-মৎস্যজীবী কার্যত বেকার রয়েছে। জেলার সামুদ্রিক মৎস্যঘাট ও অবতরণ কেন্দ্রগুলো নির্জন খা খা প্রান্তরে পরিণত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় কবে ফুরিয়ে আসে, সেই দিনই গুণছে মৎস্যজীবীরা। শহরের দরিয়ানগর, কলাতলী, উখিয়ার ইনানী ও টেকনাফের শামলাপুর সৈকতে দেখা যায়, সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসাবে জেলেদের কেউ জাল মেরামত করছেন। কেউবা মেরামত করছেন ট্রলারের যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক অংশ।

দরিয়ানগর ঘাটের জেলে মো. ইসমাইল বলেন, মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও প্রতিদিনই ঘাটে আসি। নৌকা ও জাল ঠিকমত আছে কিনা দেখি। আজ থেকে (গতকাল শনিবার) জাল মেরামত করছি।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, কক্সবাজারে ছোট-বড় প্রায় ৮ হাজার ফিশিং বোট রয়েছে। এর মধ্যে আকার ভেদে একেকটি বড় নৌ-যানে ৩০ থেকে ৪০ জন ও ছোট নৌ-যানে ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। এর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে ও বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে থাকে। যে কারণে ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে ও বিহিন্দি জালের বোটগুলো সাগরে মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। বিহিন্দি জালে ইলিশ ব্যতীত ছোট আকারের প্রায় পাঁচ প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়।

শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে শহরের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ছাড়াও শহরের বরফ কলগুলো বন্ধ রয়েছে। আগামী ২৯ অক্টোবর মাছ ধরা শুরু হলেও সাগর থেকে ট্রলারগুলোকে মাছ ধরে ফিরতে ্‌আরো কয়েকদিন সময় লাগবে। ফলে চলতি মাসে আর ইলিশের দেখা মিলছে না। সেসাথে বন্ধ রয়েছে শুটকি পল্লীতে শুটকি উৎপাদনও।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান জানান, কেউ করে নিষিদ্ধকালীন সময়ে সাগরে মাছ ধরতে গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী আন্দোলনমুখী বিএনপি
পরবর্তী নিবন্ধকাপ্তাইয়ে পাচারকালে লজ্জাবতী বানর উদ্ধার