বঙ্গোপসাগর থেকে ২০২ মণ ওজনের ২৪ লাখ টাকার নাগু মাছ ধরেছেন টেকনাফের জেলেরা। চারটি ফিশিং ট্রলারে ধরা পড়া মাছের একেকটির ওজন ৫ থেকে ১৩ কেজি। সংখ্যায় ১ হাজারের বেশি এসব মাছ পেয়ে খুশি ট্রলার মালিক ও জেলেরা। গত বুধবার বিকেল চারটার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব–দক্ষিণের কাছাকাছি বাংলাদেশ জলসীমানার ‘মৌলভীর শীল’ নামের এলাকায় জেলেদের জালে এসব মাছ ধরা পড়ে। যা রাতেই আনা হয় টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ফিশারিজ ঘাটে। ৩০০ টাকা কেজি দরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনে নেন সেসব মাছ।
টেকনাফ উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, টেকনাফের স্থানীয়ভাবে নাগুমাছ হিসেবে পরিচিত মাছগুলো ‘জায়ান্ট কিং ফিশ’ প্রকৃতির মাছ। এ মাছের ইংরেজি নাম জায়ান্ট ট্রেভেলি।
ফিশিং ট্রলার এমভি সালমানের মাঝি আছাবুল ইসলাম ও এমভি আজিজুলের মাঝি নুরুল হাসান বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব–দক্ষিণের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরের মৌলভীর শীল এলাকায় পর পর চারটি ট্রলারের জেলেরা জাল ফেলেন। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিকেলের দিকে সাগরের পানি নড়াচড়া করতে দেখে জেলেরা বুঝতে পারেন, জালে বড় যেকোনো ধরনের মাছের ঝাঁক আটকা পড়েছে। পরে আশপাশের জেলেদের খবর দিয়ে জাল টানা শুরু করলে নজরে আসে নাগুমাছের ঝাঁক। প্রতিটি মাছের ওজন ৫ থেকে ১৩ কেজি পর্যন্ত। রাত ৯টার দিকে মাছ বোঝাই চারটি ট্রলার একে একে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ফিশারিজ ঘাটে এসে পৌঁছে। মাছ ব্যবসায়ী ছৈয়দ আলম বলেন, ঢাকা–চট্টগ্রামের হাট–বাজারগুলোতে এ মাছের কদর রয়েছে। তারা কয়েকজন মিলে প্রায় ১৫০ মণ মাছ কিনেছেন। এসব মাছ তারা ঢাকা–চট্টগ্রামে সরবরাহের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে আকার ভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবেন।
টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী এম কায়সার জুয়েল বলেন, মাছগুলো দেখে লোভ সামলাতে না পেরে ৪ হাজার ৫০০ টাকায় ১৩ কেজি ওজনের একটি বড় মাছ কিনেছেন। চট্টগ্রামে পরিবারের কাছে মাছটি পাঠাবেন।
টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি অবশ্যই সুখবর। সরকারি বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা মান্য করায় বর্তমানে জেলেদের জালে ছোট–বড় প্রচুর পরিমাণে এ মাছ ধরা পড়ছে। মাছগুলো চট্টগ্রাম–ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করতে পারলে আরও ভালো দাম পাওয়া যেত।