দীর্ঘ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে সমপ্রতি ২ হাজার ৬৫ জনকে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে দেড় শতাধিক (১৫৮ জন) শিক্ষককে চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্কুলগুলোতে পদায়ন করা হয়েছে। পদায়নের পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি এসব শিক্ষক স্কুলগুলোতে যোগদানও করেছেন। তবে নতুন এ পদায়নের পরও চট্টগ্রাম অঞ্চলের সরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে সহকারী শিক্ষকের সাড়ে চারশর বেশি (৪৬৪টি) পদ এখনো শূন্য। মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক দেবব্রত দাশ আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাউশি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাতটি জেলা নিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা অঞ্চল গঠিত। এই সাত জেলায় সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা ৫২টি (সমপ্রতি জাতীয়করণকৃত স্কুল বাদ দিয়ে)। এই ৫২টি স্কুলের মধ্যে মহানগরে ৯টি, চট্টগ্রাম জেলায় ১৩টি (মহানগরের ৯টিসহ), বান্দরবানে ৮টি (নতুন একটিসহ), খাগড়াছড়িতে ৫টি, রাঙামাটিতে ৬টি ও কক্সবাজার জেলায় ৬টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। বাকি ১৪টি ফেনী ও নোয়াখালী জেলায়।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, নতুন নিয়োগ পাওয়া মোট ২ হাজার ৬৫ জনের মধ্য থেকে ১৫৮ জনকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের (৭টি জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, ফেনী ও নোয়াখালী) বিভিন্ন স্কুলে পদায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৫১ জন, কক্সবাজার জেলায় ৩০ জন, রাঙামাটি জেলায় ৭ জন, বান্দরবান জেলাধীন স্কুলগুলোতে ৩ জন এবং খাগড়াছড়ি জেলার স্কুলগুলোতে ৬ জন পদায়ন পেয়েছেন। এছাড়া ফেনী ও নোয়াখালী জেলার স্কুলগুলোতে পদায়ন করা হয় ১৪ জন ও ৪৭ জন। নতুন এ পদায়নের পরও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫২টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে সহকারী শিক্ষকের ৪৬৪টি পদ এখনো শূন্য। তবে মাউশির তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, জেলার স্কুলগুলোতে পদ শূন্য থাকলেও মহানগরের স্কুলগুলোতে সহকারী শিক্ষকের কোনো পদ খালি নেই। উল্টো পদের অতিরিক্ত ১৭ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক দেবব্রত দাশ আজাদীকে বলেন, মহানগরের সরকারি ৯টি স্কুলে সহকারী শিক্ষকের তিন শতাধিক পদ রয়েছে। মোট পদের অতিরিক্ত হিসেবে ১৭ জন শিক্ষক এসব স্কুলে কর্মরত রয়েছেন। যদিও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সব স্কুলে পদ শূন্য রয়েছে। সবাই যে কোনোভাবে শহরের স্কুলেই থাকতে চান। যার কারণে মহানগরের স্কুলগুলোতে পদের অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে। আর জেলা-উপজেলায় পদ শূন্য থাকছে বলে মনে করেন তিনি।
শিক্ষক সংখ্যা সমন্বয়ে মাউশি চিন্তা-ভাবনা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাউশি স্কুলগুলোর কাছ থেকে শূন্য পদের তালিকা চেয়েছে। আমাদের কাছেও চেয়েছে। আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। শূন্য তালিকার ভিত্তিতে শিক্ষকের সংখ্যা সমন্বয় করা হতে পারে।
মাউশির তথ্য মতে, ৫২টি স্কুলে সহকারী শিক্ষকের পদ সংখ্যা ১ হাজার ৫১৭টি। এর মধ্যে এতদিন ৯১২ জন কর্মরত ছিলেন। নতুন যোগদানকৃত ১৫৮ জনসহ কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭০ জনে। হিসেবে এ অঞ্চলে সহকারী শিক্ষকের আরো ৪৬৪টি পদ এখনো খালি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পদ খালি রয়েছে নোয়াখালী জেলায়। এই জেলার স্কুলগুলোতে সহকারী শিক্ষকের ১২১টি পদ শূন্য। এরপরই শূন্য পদের সংখ্যা বেশি বান্দরবান জেলায়। বান্দরবানের স্কুলগুলোতে ৯৪টি পদ এখনো শূন্য। খাগড়াছড়ির স্কুলগুলোতে ৮৪টি, রাঙামাটি জেলায় ৮৩টি, কক্সবাজার জেলার স্কুলগুলোতে ৪৫টি এবং ফেনী জেলায় ৩৭টি পদ শূন্য রয়েছে। এদিকে, এই ৫২ সরকারি স্কুলে প্রধান শিক্ষক ৫২ এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকের ৭০টির বেশি পদ রয়েছে বলে মাউশি সূত্রে জানা গেছে।