জেলখানায় হবে বিয়ে

আদালতের আদেশে খুশি সেলিনা শিশুও পাবে পিতৃ পরিচয়

চকরিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২০ জুলাই, ২০২১ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের একটি আদেশের ফলে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি সংসার। গতকাল সোমবার বিচারক রাজীব কুমার দেব এই আদেশ দেন। এরফলে সেলিনা বেগম নামে অসহায় এক মহিলা স্ত্রীর স্বীকৃতির পাশাপাশি শারীরিক সম্পর্কের ফলে জন্ম নেওয়া তার তিনমাসের সন্তানও পেতে যাচ্ছে পিতৃ পরিচয়। বিচারক তাঁর আদেশে আসামি দিদারুলকে জামিন দিয়ে মামলার বাদী সেলিনা বেগমকে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী কারাগারে তার সাথে বিয়ে পড়াতে কঙবাজার জেল সুপারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এরপর দিদারুলকে মুক্তি দিয়ে আদালতকে তা অবহিত করতে বলেছেন।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী সেলিনা বেগমের আইনজীবী মো. মিজবাহ উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত জানান, চকরিয়ার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঢেমুশিয়া বাজার পাড়ার আকতার আহমদের কন্যা সেলিনা বেগমকে (২৫) বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে পালিয়ে যায় একই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খাসপাড়ার মোহাম্মদ কালুর ছেলে দিদারুল ইসলাম প্রকাশ শকু (৩৫)। এর পর চকরিয়ার বাটাখালী এলাকায় জনৈক গিয়াস উদ্দিনের ভাড়া বাসায় তুলে পাঁচমাস ধরে শারিরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। এইসময়ে সেলিনা বিয়ের কাবিননামা সম্পাদন করতে চাপ দেয় দিদারুলকে। কিন্তু সুচতুর দিদারুল ভাড়া বাসায় সেলিনাকে ফেলে নিরুদ্দেশ হয়ে পড়ে।
এই অবস্থায় সেলিনা স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ২০২০ সালে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ মামলা করেন (সিআর-৮১৯/২০২০, দণ্ডবিধি- ৪৯৩) উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে। বিচারক সেলিনার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। প্রতিবেদনে উঠে আসে সেলিনা এবং দিদারুলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে শারিরিক সম্পর্ক হয়। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন সেলিনা বেগম। বিষয়টি আদালত আমলে নিয়ে আসামি দিদারুল ইসলাম প্রকাশ শকুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। বর্তমানে দিদারুল ইসলাম কঙবাজার কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম আদালতের এই আদেশের ফলে খুশি এখন। তিনি গতরাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘আমি আদালত এবং বিচারকের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি কল্পনাও করিনি অল্প সময়ের মধ্যে এই ধরণের আদেশ পেয়ে যাবো। আদালতের আদেশের ফলে আমি স্ত্রীর স্বীকৃতি এবং আমার তিনমাসের পুত্র মো. তামিম পিতৃ পরিচয় পেয়ে গেছে। এজন্য আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে দুই হাত তুলে দোয়া করেছি বিচারকের জন্য।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধশ্বশুরবাড়ি থেকে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধসিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ বন্ধে মামলা