জেলখানায় বন্ধুত্ব জামিনে বেরিয়ে চুরি

নগরীতে ৩২ ভরি স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার ৪

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ

কারাগারে পাঠানো হয় অপরাধীদের সংশোধিত হয়ে ফিরে আসার জন্য। কিন্তু সেখানে এক মামলায় শাস্তি ভোগ করতে গিয়ে বের হয়ে আরো বড়ো অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটছে হরহামেশা। নগরীতে একটি চুরির মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সাড়ে তিনমাস পর কোতোয়ালী থানা পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এমন একটি ঘটনা। স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় কারাভোগ করেছিলেন স্বর্ণের কারিগর সুমন ধর, সেখানে পরিচয় হয় তিন সিঁধেল চোরের সঙ্গে। কারাগারে বসেই তারা পরিকল্পনা করেন স্বর্ণ চুরির। কিছুদিন পর জামিনে বের হয়ে পরস্পর যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। সুমন ধর তাদের নিয়মিত হাত খরচ দিতেন এবং তার কথাতেই গত বছরের ১ অক্টোবর নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার জেএম সেন স্কুল গলির একটি ভবনে চুরি করে বিভিন্ন ধরনের ৩২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায় চোরের দল। কোতোয়ালী থানা পুলিশ একে একে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার চারজন হলেন- আব্দুল আজিজ (৩৩), মো. বশির ওরফে বশর (৪৮), সুমন ধর (৩৬) ও সুমন সাহা (৩৩)। উদ্ধার করা হয় গলানো ৩২ ভরি স্বর্ণ।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, আজিজ ও বশর পেশাদার চোর। ২০১৮ সালে তারা দুজন এবং তাদের সহযোগী ওসমান চুরির মামলায় কারাগারে যান। ওই সময়ে স্ত্রীর করা নারী নির্যাতনের মামলায় কারাগারে ছিলেন সুমন ধর। কারাগারে পরিচয়ের সূত্র ধরে সুমন ধর তাদের চুরি করা মালামাল কিনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে সবাই কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। এসময় সুমন তাদের টাকা দিতেন এবং স্বর্ণ চুরির জন্য নিয়মিত প্রলুব্ধ করতেন। তিনি বলেন, মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চোরদের বহনকারী সিএনজি টেক্সিটি শনাক্ত করে প্রথমে চালক মো. মুছাকে আটক করে। মুছার কাছে চোরদের শারীরিক গঠন সম্পর্কে জানা যায়। কিন্তু তাদের নাম-ঠিকানা চালক জানাতে পারেননি। শারীরিক গঠনের বিবরণ দিয়ে আমরা সোর্স নিয়োগ করি। শনাক্ত করা হয় আজিজকে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার কর্ণফুলী থানার দক্ষিণ কূল এলাকা থেকে আজিজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার তথ্য মতে ইছানগর থেকে বশিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আজিজ ও বশির জানান, স্বর্ণ কারিগর সুমন ধরের কাছে তারা স্বর্ণগুলো বিক্রি করেছেন। বিভিন্ন সময়ে সুমনই তাদের টাকা দিয়ে চুরির জন্য সহায়তা করতেন। এরপর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা থেকে সুমন ধরকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন ধর জানান, তিনি স্বর্ণ গলিয়ে হাজারি গলিতে সুমন সাহা নামে একজনের কাছে বিক্রি করেছেন। বুধবার রাতেই সুমন সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, বশর, আজিজ, ওসমান বিভিন্ন এলাকায় রেকি করে বাসা শনাক্ত করতেন এবং সুযোগ বুঝে চুরি করে স্বর্ণগুলো সুমন ধরের কাছে বিক্রি করতেন। জিজ্ঞাসাবাদ তারা জানান, জেএম সেন স্কুল গলির ওই বাসা থেকে একটি সিন্দুক ও একটি আই ফোন চুরি করেন তারা। নদী পথে তারা নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে সিন্দুকটি কাটেন এবং কাটা অংশ ও মোবাইল ফোনটি নদীতে ফেলে দেন। সিন্দুক থেকে স্বর্ণগুলো নিয়ে ইছানগরে বশরের বাসায় রেখে সুমন ধরকে ফোন করেন। সুমন এসে তার বাসা থেকে স্বর্ণালঙ্কারগুলো নিয়ে যান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিকায় বেড়েছে আগ্রহ, ভিড় সামাল দিতে হিমশিম
পরবর্তী নিবন্ধনগরীর কোথাও বিক্ষোভ কোথাও আনন্দ মিছিল