জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করে তার ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি বাংলাদেশের বাঁচা–মরার প্রশ্ন। আমাদের সন্তানদের রক্তের ওপর ক্ষমতার মসনদে বসে আজও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে পারেননি, লজ্জা হওয়া উচিত আপনাদের। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার তোড়জোড় করছেন, আসন বিন্যস্ত করছেন, কিন্তু শহীদদের রক্তের সম্মান জানানোর রাষ্ট্রীয় নিদর্শন জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এখনো করতে পারেননি। পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করেই আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করতে হবে। এর বিকল্প কোনো চিন্তার সুযোগ বাংলাদেশের মাটিতে নেই। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে খেলাফত মজলিসের সমাবেশে এ কথা বলেন মামুনুল হক। জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে এই সমাবেশ ও পরে মিছিল হয়েছে। মামুনুল হক বলেন, দেশের মানুষ জানতে চায়, দেশ এখন বাহাত্তরের ধারায় চলবে, নাকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার ধারায়? আমি সকল রাজনৈতিক পক্ষকে বলব সবাই যার যার অবস্থান পরিষ্কার করুন। যারা চব্বিশের বিপক্ষে অবস্থান নেবে, তারাই বাহাত্তরের বাকশালপন্থী। আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করছি। আমরা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিলেও শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের কাছে ‘স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়েছেন’ বলে সমাবেশে মন্তব্য করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই। সত্তরের নির্বাচনের ফলাফল যারা ছিনতাই করেছিল, সেই ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধেই একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সেই স্বাধীনতা– মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী শেখ মুজিবুর রহমান কীভাবে ভারতের কাছে বিকিয়ে দিয়েছেন। শেখ মুজিব বাহাত্তর সালে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে গিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান তৈরির প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসেন। আমরা দেখেছি, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত যে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা আওয়ামী লীগসহ কোনো রাজনৈতিক দল বলেনি, ভারতের সংবিধানের কপি–পেস্ট করে সেই ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানের মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হল। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে প্রকারান্তরে ভারতের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হল।
মামুনুল বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের ভিত্তিতে বাংলাদেশে এক নতুন চেতনা গজিয়ে ওঠে। দুঃখজনক হল গত ৫৩ বছর ধরে একাত্তরের চেতনার নামে বাহাত্তরের ভেজাল চেতনা সরবরাহ করা হয়েছে। সেই বাহাত্তরের চেতনার বিরুদ্ধে যারা যখনই দাঁড়িয়েছে, তাদেরকেই ‘রাজাকার’ ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। সেই দেশবিরোধী খেলা খেলতে খেলতে খলনায়িকা শেখ হাসিনা যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চার কোটি মহানায়ককে রাজাকার বলে গালি দিয়েছিল, তখনই মানুষ সিদ্ধান্ত নেয়, দিল্লির এই সেবাদাসী আর দেশের মসনদে থাকতে পারবে না।











