বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার যে কথা বলেছে, তার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এটা একটা বেসরকারি উদ্যোগ। এটাকে বেসরকারি উদ্যোগ হিসেবেই দেখছি। এটার সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। জুলাই ঘোষণাপত্র বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, এটা একান্তই শিক্ষার্থীদের বিষয়। এ বিষয়ে সরকার অবগত নয়। আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ছাত্ররা যখন ঘোষণা দেবেন তখন আমরা দেখব তারা কী ঘোষণা দিল। যতক্ষণ পর্যন্ত এ ঘোষণাটা না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট না। খবর বিডিনিউজের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেট্রোরেলের পিলারে আঁকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলা বিষয়ে এক প্রশ্নে আজাদ মজুমদার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের জানিয়েছে, শেখ হাসিনার গ্রাফিতি ভুল বোঝাবুঝির কারণে মুছে ফেলা হয়েছে। ঢাবি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় আইন বলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মারক সংরক্ষণ করবে। শেখ হাসিনার গ্রাফিতিটি ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেওয়া হবে বলে জানান আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি থেকে আমাদের জানানো হয়েছে তারা ইতিমধ্যে বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে কিছু আলামত দেশে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হচ্ছে এবং তারা যদি প্রয়োজন মনে করেন, কিছু আলামত বিদেশেও পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হবে বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন।
অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে কিনা জানতে চাইলে আজাদ মজুমদার বলেন, এটা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হবে।৷ প্রকাশ করার বিষয়ে তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন। তদন্ত কতদিনের মধ্যে শেষ হতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তদন্তকারী দল নির্ধারিত (তিন দিন) সময়ের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দেবেন। এরপর প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে ঠিক করবেন তদন্তটা সম্পন্ন করতে কতদিন সময় লাগবে। এটা এখনো নিশ্চিত নয়।
অগ্নিকাণ্ডের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশ সীমিত করা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে আজাদ মজুমদার বলেন, অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তির কোথাও বলা হয়নি যে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল হয়েছে। কেউ যদি ধরে নিই অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল হয়েছে তা তার নিজস্ব অজ্ঞতা হিসেবেই ধরব।
বিষয়টি আলোচনার মধ্যে গতকাল তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, অস্থায়ী পাস নিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক সাংবাদিক সোমবার থেকে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। আজাদ মজুমদার বলেন, একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামীকাল থেকেই অস্থায়ী পাস নিয়ে সাংবাদিকরা সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০০ সাংবাদিককে অস্থায়ী পাস দেওয়ার। সচিবালয়ে বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠনের ১৬০ জনের মতো সদস্য রয়েছে। তাদের পাশাপাশি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ৪০ জন ক্যামেরাম্যানকে অস্থায়ী পাস দেওয়া হবে। এই পাস ছাড়াও আরও কোনো সাংবাদিক, মনে করেন তাদের সচিবালয়ে যাওয়ার প্রয়োজন আছে, তারা প্রয়োজনমাফিক অস্থায়ী পাস নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। এজন্য ডিএমপির একটি সেল গঠন করা হয়েছে। সাধারণ নাগরিকরাও যাদের বিভিন্ন কারণে সচিবালয়ে যাওয়া প্রয়োজন তারও এই সেল থেকে পাস পাবেন।