জুলাই বিপ্লবের মূল্যবোধ ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে

চবিতে সেমিনারে বক্তারা

| বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ

চবিতে সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘জুলাই বিপ্লবের পূর্বাপর: বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি’ শীর্ষক এক সেমিনার গতকাল বুধবার সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও উপউপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। কীনোট স্পিকার ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. . কে.এম. মাহফুজুল হক এবং ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. তওফীকুর রহমান তারেক। রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ. জি. এম. নিয়াজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্ল্যা পাটওয়ারী। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপউপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, বাংলাদেশ ভূখন্ডে যতগুলো বিপ্লব বা গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, তার সুফল যথাযথভাবে এদেশের মানুষ পায়নি। ৭১ পরবর্তীতে যেমন কাঙ্খিত প্রত্যাশা পূরণ হয়নি, ৯০ পরবর্তীতেও হয়নি। আমাদের ছাত্রসমাজকে আন্তর্জাতিক মানের নাগরিক হিসাবে গড়ে উঠার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। একটি টেকসই দেশ গড়ার জন্য সবাইকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।

উপউপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, জুলাই বিপ্লবকে সঠিকভাবে ধারণ করে দেশে একটি গণতান্ত্রিক শাসনকাঠামো তৈরি করতে হবে। এ বিপ্লবে ছাত্র, শ্রমিক, কুলি, মজুরসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। প্রত্যাশা ছিল বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন করা। দেশকে সংস্কার ও নতুনভাবে পুনরায় সকল কাঠামো মেরামত করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐক্য। এ ঐক্যকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

কীনোট স্পিকারের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে খুবই নিষ্ঠুরতার সঙ্গে স্বৈরাচার হাসিনা এদেশে ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামো তৈরি করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্র্য বিশ্বের অন্যান্য গণঅভ্যুত্থানের চেয়ে ভিন্ন। এ গণঅভ্যুত্থানের ম্যান্ডেটকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

প্রবন্ধ উপস্থাপক প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাই আমাদেরকে এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে যেন এদেশে কেউ আর হাসিনা হয়ে উঠতে না পারে। তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের অবশ্যই নির্বাচন করতে হবে। তবে নির্বাচনের আগে দেশের যথাযথ সংস্কার করতে হবে। প্রবন্ধ উপস্থাপক রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. . কে. এম মাহফুজুল হক বলেন, অনেকেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করেছে। তবে কেউ কেউ সুবিধাবাদী চিন্তা থেকে নিজেকে জুলাই বিপ্লবের ভ্যানগার্ড হিসেবে হাজির করে। দেশকে সঠিক রাস্তায় সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে হলে জুলাইয়ের মূল্যবোধকে ধারণ করতে হবে। ভার্চুয়ালি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. তওফিকুর রহমান তারেক। স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্ল্যা পাটওয়ারী বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূল্যবোধ ধারণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের যাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। জুলাই বিপ্লবের মূল্যবোধ ধারণ করে এ দেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতিকে নির্ধারণ করতে হবে। উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ তালুকদার, প্রফেসর ড. মো. শাহাদাত হোসেন, প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমদ, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী, প্রফেসর ড. ভূঁইয়া মো. মনোয়ার কবীর, প্রফেসর ড. আনোয়ারা বেগম, . আনোয়ার হোসেন ও প্রফেসর ড. এস. এম. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। সেমিনারে প্রশ্নোত্তর পর্বের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রবন্ধ উপস্থাপকগণ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে দাঁড়িপাল্লাকে জয়যুক্ত করুন : অধ্যক্ষ হেলালী
পরবর্তী নিবন্ধচমেক হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে বৈজ্ঞানিক সেমিনার