জুলাই আন্দোলনকে মানি মেকিং মেশিন বানানো হয়েছে : উমামা

| মঙ্গলবার , ২৯ জুলাই, ২০২৫ at ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ

জুলাই আন্দোলনকে টাকা তৈরির যন্ত্র বানিয়ে ফেলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। গত রোববার রাতে ফেইসবুক লাইভে এসে তিনি বলেছেন, জুলাই অনেক বড় অভিজ্ঞতা। মানুষ অবিশ্বাস্য লড়াই করেছে। আমার মাথায় আসেইনি যে এটা দিয়ে টাকাপয়সা ইনকাম করা যায়! আমি মুখপাত্র হওয়ার পর আবিষ্কার করছি, এটা দিয়ে অনেকে অনেক কিছু করছে। টেন্ডার বাণিজ্য, তদবির বাণিজ্য করছে, ডিসি নিয়োগ করছে। এগুলো অহরহ করেছে। এর আগে এটা নিয়ে ধারণা ছিল না। জুলাই আন্দোলনকে কেন ‘মানি মেকিং মেশিন’ করব! আনফরচুনেটলি (দুঃখজনকভাবে) সেটা হয়েছে।

নানা অভিযোগ তুলে গত ২৭ জুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান উমামা ফাতেমা। ওই সময় তিনি সংগঠনটির মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন। রোববার রাতের লাইভে সেই প্রসঙ্গও টানেন। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে থাকাটা তার জীবনের একটা ট্র্যাজিক ঘটনা ছিল।

দুই ঘণ্টা ২৪ মিনিটের লাইভে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরদিন সকালবেলা থেকেই দেখি, সমন্বয়ক পরিচয়ে নাকি একেকজন একেক জায়গায় গিয়ে দখল করছে! আমি এক রকম অবাক হয়ে যাই যে গতকাল পর্যন্ত তো সমন্বয়ক পরিচয়টা দিতেই চাইছিল না আর আজ থেকে শুনছি সবাই সমন্বয়ক, এই পরিচয়ে চাঁদাবাজিদখল চলছে। আমার মনে হচ্ছিল, এখন কি রক্ষীবাহিনীর মতো সমন্বয়কবাহিনী তৈরি হচ্ছে নাকি! সে সময় আমার মনে হয়েছিল, এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটার আর দরকারটা কী, এখন তো সবাইকে অ্যাকোমোডেট করা নিয়ে ভাবা উচিত।

উমামা বলেন, আমার চিন্তা ছিল এই প্ল্যাটফর্মটা আরও ব্রড ও ডিসেন্ট্রালাইজ করে ফেলা উচিত। আমি মনে করি না এটা ভুল চিন্তা ছিল। এই প্ল্যাটফর্মটা ওই সময় থেকে যাওয়ার অনেকগুলো ডিমেরিটস আমরা এখনো ভোগ করছি। কিন্তু ওই সময় এ কথাটা বলে আমি অনেক মানুষকে শত্রু বানিয়ে ফেলেছি।

জুলাই আন্দোলনের সময় উমামা ফাতেমা ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব। অভ্যুত্থানের পর তিনি ছাত্র ফেডারেশন থেকে পদত্যাগ করেন। গত বছরের অক্টোবরে তাকে দেওয়া হয় প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্রের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, বিষয়গুলো এত অদ্ভুত ছিল যে, কোনো কিছুর কোনো ঠিকঠিকানা ছিল না। চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আসত, একেকজনের বিরুদ্ধে যে স্বজনপ্রীতি ও শেল্টারটেল্টার দেওয়ার যে অভিযোগ আসত, এগুলো আমি খুব ভালো করেই জানতাম। শুধু চট্টগ্রামের কাহিনি ‘সলভ’ করতে গেলে অনেকের প্যান্ট খুলে যেত। এ রকম আরও অনেক জেলার কাহিনি আছে। এগুলো ধরতে গিয়ে দেখেছি, এগুলো তো অনেক দূর পর্যন্ত গড়িয়ে গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২৯ জুলাই : লাল কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা
পরবর্তী নিবন্ধজোয়ারে লণ্ডভণ্ড পারকি সৈকত