২০২৪ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘটনাবহুল বছর। এই বছরটি ইতিহাসে জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং স্বৈরাচারের পতনের বছর হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ১৫ বছরের স্বৈরাচার হটানোর এটি ছিল চূড়ান্ত পর্ব। জুলাইয়ে শুরু হওয়া কোটা বিরোধী আন্দোলন ধাপে ধাপে আগস্টে গিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার উৎখাতের একদফার আন্দোলনে পরিণত হয়।
আবু সাঈদ ছিলেন বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের একজন কর্মী। আবু সাঈদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসাবে এই আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও রংপুর অঞ্চলে কোটা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। এই আন্দোলনে ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ শহিদ হন। এর পরেই দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
২০ জুলাই শেখ হাসিনা সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করে সারাদেশে কারফিউ জারি করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে ২২ জুলাই রাতে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
৩ আগস্ট সরকার পতনের একদফায় গোটা দেশ আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে। শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ ও বিভিন্ন বাহিনীর গুলিতে শতাধিক শহিদ হন, আহত আন্দোলনকারীর সংখ্যা কয়েক হাজার। আন্দোলন দমনে স্নাইপার রাইফেল ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়।
৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমাবেশে পুলিশের হামলায় ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুলসংখ্যক ছাত্র–জনতার মৃত্যু এবং কয়েক হাজার আহত হয়। এদিন ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ নামে অবরোধের ঘোষণা করা হয়।
৫ আগস্ট লাখ লাখ মানুষ পুরো ঢাকার রাজপথে নেমে আসে। গণভবন অভিমুখে মিছিলে মিছিলে সব রাজপথ একাকার হয়ে যায়। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।