জুম্‌’আর খুতবা

কুরআন ও হাদীসের আলোকে অলীদের মর্যাদা ও উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে সুলতানুল হিন্দ খাজা মঈনউদ্দিন চিশতি (র.)’র অবদান

অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি | শুক্রবার , ৩ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ

আল কুরআনের আলোকে অলীদের মর্যাদা: প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করুন, তাঁর রাসূলের আনুগত্য করুন, জেনে রাখুন, অলীগণ আল্লাহর প্রিয়ভাজন বান্দা। পবিত্র আল কুরআনে আল্লাহ তাঁদের মর্যাদা প্রসঙ্গে এরশাদ করেছেন, অর্থ: জেনে নাও: নিঃসন্দেহে আল্লাহর অলীদের কোন ভয় নেই, নেই কোন দুঃখ, কষ্ট, যারা ঈমান এনেছে এবং আল্লাহকে ভয় করেছে, (সূরা, ইউনুস আয়াত ৬২৬৩)

হাদীস শরীফের আলোকে অলীদের মর্যাদা :আউলিয়া কেরামের মর্যাদা, বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস শরীফ বর্ণিত হয়েছে, তাঁদের জীবনাদর্শ অনুসরণ করা আল্লাহ ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন। পক্ষান্তরে তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পোষন করা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার নামান্তর। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন, যে আমার অলীর সাথে শত্রুতা করে আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিই। (সহীহ বুখারী, হাদীস:৬৫০২)। আল্লাহর পুণ্যাত্ম বান্দা, ইনসানে কামিল খাজায়ে খাজেগান সুলতানুল হিন্দ খাজা মঈন উদ্দিন চিশতি (🙂 মহান আল্লাহর নৈকট্যধন্য অলীয়ে কামিল, উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে তাঁর ভূমিকা অবদান ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়, তাঁর জীবনকর্ম উপস্থাপনার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।

বেলায়তের উচ্চ মর্যাদায় সমাসীন আল্লাহর পুণ্যাত্ম বান্দাগণ আউলিয়ায়ে কেরাম হিসেবে স্বীকৃত। কুরআনসুন্নাহ তথা আল্লাহর রাসূলের জীবনাদর্শ যথার্থ বাস্তবায়ন, সর্বোপরি আল্লাহ ও রাসূলের সন্তষ্টি অর্জনের কারণেই তাঁরা মর্যাদার উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত । তাঁদের ব্যবহারিক জীবনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অগণিত অমুসলিমরাও স্রষ্টার শ্রেষ্ঠতম মনোনীত দ্বীন আল ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রিত। তাঁদের অক্লান্ত ত্যাগ ও শ্রমের বিনিময়ে সত্যিকার ইসলামের মর্মবাণী হেদায়তের সঞ্জীবনী ধারা পৃথিবীর দিক দিগন্তে প্রচারিত প্রসারিত। খোদা প্রদত্ত গুণাবলীর অধিকারী হয়ে কালজয়ী আদর্শ ইসলামের সুমহান সাম্য ও শান্তির বাণী প্রতিষ্ঠা করতে যারা সক্ষম হয়েছিলেন খাজায়ে খাজেগান আতায়ে রাসূল, হিন্দাল অলী গরীবে নেওয়াজ, হযরত খাজা মঈনউদ্দিন চিশতী হাসান সঞ্জরী (রহ.) তাঁদের অন্যতম। তিনি ৫৩৭ হিজরী মোতাবেক ১৪৪২ খ্রি. মধ্য এশিয়ার খোরাসানের অন্তর্গত সঞ্জর নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর পিতার নাম সৈয়দ খাজা গিয়াসউদ্দন, মাতার নাম সৈয়্যদা উম্মুল ওয়ারা মাহে নুর। পিতৃকূল ও মাতৃকূল উভয় দিক থেকে তিনি আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী বংশধারায় সম্পৃক্ততার কারণে আওলাদে রাসুলের অন্তর্গত। তাঁর মাতা প্রখ্যাত বুযুর্গ হযরত সৈয়দ দাউদ আল হাসানী (রা.)’র কন্যা। সৈয়দ দাউদ হলেন হযরত মুসা সালেহ জঙ্গী (রা.)’র ভাই ও তাঁদের পিতা হযরত আবদুল্লাহ হাম্বলী। হযরত মুসা সালেহ জঙ্গীর পুত্র হলেন হযরত গাউসুল আযম বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (.)। অতএব আত্নীয়তা সূত্রে হুযুর গাউসুল আযম দস্তগীর (রা.) এবং হুজুর খাজা গরীবে নেওয়াজ (রা.)’র মাতা পরস্পর চাচাতো ভাইবোন। এদিক থেকে হুযুর গাউসে পাক হচ্ছেন হুজুর গরীবে নেওয়াযের মামা।

শিক্ষার্জন ও মহামনীষীদের সান্নিধ্যে গমন: হুযুর গরীবে নেওয়াজ পিতার সান্নিধ্যে প্রাথমিক দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করেন। নয় বছর বয়সে তরজমাসহ কুরআন শরীফ মুখস্থ করেন। অত:পর তের বৎসর পর্যন্ত সার্বিক তত্ত্বাবধানে কুরআনহাদীস, ফিক্বহ উসুল তাফসীর, আরবী সাহিত্য, ব্যাকরণ, মানতিক, হিকমত, দর্শন প্রভৃতি বিষয়ে গভীর ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। প্রখ্যাত হাদীস বেত্তা ইমামুল হারামাইন হযরত আবুল মালী (রা.)’র নিকট শরীয়তের বিভিন্ন সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম বিষয়ে পাণ্ডিত্য লাভ করেন।

সমরকন্দের প্রখ্যাত আলেম হযরত শরফুদ্দিন ও বোখারার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত হোসামুদ্দিন এর নিকট দীর্ঘ পাঁচ বৎসর অধ্যয়ন করে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার কৃতিত্বপূর্ণ পূর্ণতা অর্জন করেন। বোখারা থেকে নিশাপুরের হারুন এলাকায় তাশরীফ আনেন। তথায় হযরত খাজা ওসমান হারুনীর খিদমতে উপস্থিত হয়ে ইলমে মারেফাত ও ইলমে তাসাউফ সহ ত্বরীকতের গভীর তত্ত্ব অনুসন্ধানে ব্রতী হন।অলীয়ে কামেল খাজা ওসমান হারুনী হযরত গরীবে নওয়াযের মধ্যে বেলায়তের ঝলক দেখতে পেয়ে তাঁকে খিলাফত ও এযাযতের শিরোবরণে ভূষিত করেন। পীর মুর্শিদের দরবারে একাধারে বিশ বৎসর অতিক্রম করে ত্বরীক্বতের বিভিন্ন স্তরে উন্নীত হয়ে কুতুবিয়তের মর্যাদায় অভিষিক্ত হন। অতঃপর গরীবে নেওয়াজ তদীয় মুর্শিদের সাথে মক্কা মুকররমা ও মদীনা মনোয়ারার জিয়ারত লাভে ধন্য হন। পবিত্র হজব্রত সম্পাদন শেষে পীর মুর্শিদ তাঁকে আরো আটাশ দিন মদীনা শরীফে নিজ তত্ত্বাবধানে ইলমে মারেফাতের তালিম দান করেন। এভাবে পীর মুর্শিদের নির্দেশক্রমে ইবাদত, রিয়াযত মোরাকাবা মুশাহাদা উলুমে এলাহীয়্যাহ ও উলুমে নববীয়্যাহ ও মারেফাতের গুপ্ত রহস্যের ভান্ডার উন্মোচন করে কামালিয়াত তথা পূর্ণতা অর্জন করেন। খাজা বাবা আপন পীর মুর্শিদের অনুমতিক্রমে বিভিন্ন দেশ ভ্রমন করে জ্ঞানীগুণী, পন্ডিত, দার্শনিক সহ অসংখ্য অলী আল্লাহদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। খাজা বাবা বাগদাদ শরীফে গাউসুল আযম দস্তগীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (.)’র সাহচর্যে ৫৭ দিন অবস্থান করেন।

এ সময় গাউসে পাক খাজা বাবাকে বলেছিলেন ইরাকের দায়িত্ব শায়খ শেহাবউদ্দিন সোহরাওয়ার্দীকে আর হিন্দুস্তানের দায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হলো। একই সংবাদ খাজা বাবা নিজ পীর মুর্শিদ খাজা ওসমান হারুনীর সাথে মদীনা শরীফে রওজায়ে আক্বদাস যিয়ারতকালে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র পক্ষ থেকে প্রাপ্ত হয়েছিলেন। বাগদাদ যাবার পথে গরীবে নওয়ায (.) সঞ্জর শহরে প্রখ্যাত ওলী হযরত নজমুদ্দিন কুবরার সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁর সান্নিধ্যে আড়াই মাস অতিবাহিত করেন। এ সময়ে তাঁর সাথে বিখ্যাত দার্শনিক শায়খুল আকবর মহিউদ্দিন ইবনুল আরবীর সাথে সাক্ষাৎ হয়। এভাবে তিনি বদখশান, সমরকন্দ, হেরকান,হামাদান, ইস্পাহান, বোখারা, ফিলিস্তিন প্রভৃতি স্থান সফর করেন। শত শত অলী আল্লাহর রূহানী ফুয়ুযাত লাভে ধন্য হন। এভাবে সুকঠিন রিয়াযত ও সাধনা বলে আধ্যাত্নিক পরিমন্ডলে দীপ্তমান সূর্যরূপে আবির্ভূত হন। নবীজির সুযোগ্য উত্তরসূরী নায়েবে রাসূল হুযুর খাজা গরীবে নেওয়াজ নবীজির নির্দেশেই সূদূর আরব হতে ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান হয়ে প্রথমে লাহোর পরে দিল্লী হয়ে আজমীকে শুভাগমন করেন। বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ১২,৬৯,৪০০ বর্গমাইলের এই দেশটিতে মহান আধ্যাত্মিক সম্রাট খাজা বাবা (রা.) চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

আজ থেকে প্রায় তিনশ বৎসর পূর্বে ব্রিটিশ শাসনের পূর্ব পর্যন্ত মুসলমান রাজা বাদশাহগণই সুদীর্ঘ সাত’শ বৎসর পর্যন্ত এ দেশটির রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। মুসলমানদের এই বিজয়ের পিছনেও ছিল হিন্দাল অলী খাজা বাবার দোয়া ও অনুপ্রেরণা। ইতিহাস পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, সুলতান মাহমুদ গজনভী ১০০০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১০২৭ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ১৭ বার ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন। প্রতিবারই তিনি বিজয়ী হন। সুলতান মাহমুদ গজনভীর পর ভারতবর্ষে মুহাম্মদ ঘুরী সফল অভিযান পরিচালনা করেন। তবে তিনি প্রথম পর্যায়ে তেরবার ভারতের বিভিন্ন এলাকা অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হন। চিন্তিত ও বিষন্নভাবে নিদ্রামগ্ন হয়ে পড়েন। স্বপ্নযোগে এক দরবেশ কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে দিল্লী আক্রমণ করেন এবং সফলভাবে বিজয় লাভ করেন। কাঙ্খিত বিজয় শেষে প্রত্যাবর্তনের পথে আজমীরের অদূরে সেই মহান সাধক পুরুষের সাক্ষাৎ হলো। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন সুলতানুল হিন্দু আতায়ে রাসূল হিন্দাল আলী খাজা গরীবে নওয়ায (রা.)। সুলতান মুহাম্মদ ঘুরী এ আধ্যাত্নিক সাধক পুরুষকে দেখামাত্রই অন্তরাত্নার গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন। মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত বিজয়ের পিছনে ছিল হিন্দাল অলী গরীবে নওয়াজের কৃপাদৃষ্টি ও নেক নজর। এ কথা ঐতিহাসিক ভাবে সত্য যে ভারত বর্ষে খাজা বাবার পূর্বে ইসলাম প্রচারে আর কেউ এতো ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে পারে নি। তাঁর বহুমাত্রিক অবদানের কারণে বিজ্ঞ গবেষকমন্ডলী অভিমত প্রকাশ করেন যে, যুগে যুগে ইসলাম প্রচারে উপমহাদেশে যতসব আউলিয়ায়ে কেরাম আগমণ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে হযরত খাজা গরীবে নওয়াযকে মানব ইতিহাসে সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম ধর্ম প্রচারকরূপে অভিহিত করা হয়। কালক্রমে মুসলিম শাসক গোষ্ঠীর অনৈসলামিক কার্যকলাপ, কলহ বিবাদ, দ্বন্দ্ব সংঘাত, বিলাসী জীবন যাপন, নৈতিক ও চারিত্রিক অধঃপতন, মুসলমানদের বিপর্যয় ত্বরান্বিত করে। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিপ্লবের পর সমগ্র ভারতবর্ষ ইংরেজদের করতলগত হয়। আজো ইসলামী তাহজীব তমুদ্দুন আদর্শ শিক্ষা সভ্যতা সংস্কৃতির অবশিষ্টাংশটুকু যা বাকী আছে এ সব কিছু মহান আউলিয়ায়ে কেরামের সুমহান আদর্শ শিক্ষা ও ত্যাগের বিনিময়ে। ইসলাম বিরোধী সকল প্রকার অপকর্ম ও অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধে কুফরি শিরক বিদয়াত ও কুসংস্কারের মূলোৎপাটনে ধর্মীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণে সুফী সাধক ও আউলিয়ায়ে কেরামের ভূমিকা ছিল অসাধারণ। খাজা বাবার ভূমিকা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি রাজা পৃথ্বিরাজের সকল প্রকার চক্রান্ত ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে তৌহিদ ও রিসালতের আওয়াজ বুলন্দ করেন।

কালক্রমে গরীবে নওয়াযের ভাবাদর্শে উজ্জীবিত সৈনিকদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে ইসলামের বিজয় নিশান উড্ডীন হয়। সুলতান আলতামাশের যুগে বিখ্যাত সুফী সাধক গরীবে নওয়াযের প্রধান খলীফা খাজা কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী (রহ.), সুলতান আলাউদ্দীনের যুগে হযরত খাজা নিযামউদ্দীন আউলিয়া (রহ.) ফিরোজ শাহ তুঘলকের শাসনামলে বিখ্যাত আধ্যাত্নিক সাধক হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানী (রহ.) সম্রাট আওরঙ্গজেবের যুগে বিশ্ববিখ্যাত আলেমে দ্বীন মোল্লা জুয়ুন উদ্দীন প্রমুখ জাতির ক্রান্তিকালে বিভ্রান্ত দিশেহারা মুক্তিকামী মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দানে যে নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ইতিহাসে তা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

ওফাত: অবশেষে বিশাল কর্মময় জীবনের অবসান ঘটিয়ে হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ (রহ.) হিজরী ৬৩৩ সন মোতাবেক ১২৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ রজব দিবাগত রাত অর্থাৎ ৬ রজব সোমবার সুবহি সাদিকের সময় তাঁর মওলায়ে হাকিকী রফিকে আলার সান্নিধ্যে গমন করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৯৭ বছর। তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র হযরত খাজা ফখরুদ্দীন চিশতী তাঁর নামাযে জানাযার ইমামতি করেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি হযরত খাজা কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি’কে খিলাফতের গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেন। ১ রজব হতে ৬ রজব পর্যন্ত আজমীর শরীফে মহা সমারোহে পালিত হয় এ মহান আধ্যাত্মিক সাধক পুরুষের সালানা ওরছ মোবারক। মহান আল্লাহর দরবারে আমরা তাঁর রূহানী ফুয়ুজাত কামনা করি। সত্যমিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ হোক আমাদের মুক্তির পাথেয়। হে আল্লাহ: আমাদের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আউলিয়ায়ে কেরামের জীবনাদর্শ অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন।

লেখক : মাদরাসাএ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী), বন্দর, চট্টগ্রাম;

খতীব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ।

 

মুহাম্মদ আবদুর রশীদ চিশতি

দোহাজারী, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।

প্রশ্ন: কাযা নামায পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানালে কৃতার্থ হব

উত্তর: নামায নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পালন করাকে আদায় বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের পর পড়াকে কাযা বলা হয়। (দুররুল মোখতার)

নিদ্রার কারনে বা ভুলক্রমে নামায কাযা হয়ে গেলে তখন কাযা পড়াও ফরজ। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে, নিদ্রা বা ভুলবশত: যার নামায চলে গেছে স্মরন হওয়া মাত্র পড়ে নেবে। এটাই তার সময় (আলমগীরি) ফরজের কাযা ফরজ, ওয়াজিবের কাযা ওয়াজিব, সুন্নাতের কাযা সুন্নাত, অর্থাৎ যে সব সুন্নতের কাযা রয়েছে, যেমন ফজরের সুন্নাত এবং জোহরের পূর্বের সুন্নাত, যখন জোহরের সময় বাকী থাকে। (দুরুল মোখতার, রদ্দুল মোখতার, বাহারে শরীয়ত ৪র্থ খন্ড) কাযার নির্দিষ্ট সময় নেই, জীবনে যখনই সম্ভব,পড়ে নেবে, দায়মুক্ত হবে। কিন্তু সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও দ্বিপ্রহরের সময় পড়া জায়েজ নেই। (আলমগীরি) যদি পাঁচ ওয়াক্ত বা এর কম ওয়াক্ত নামায কাযা হয় তখন ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আবশ্যক। অর্থাৎ ওয়াক্তের নামাযের পূর্বে ধারাবাহিক ভাবে কাযা আদায় করবে। (বাহারে শরীয়ত, ৪র্থ খন্ড, পৃ.৬৪৬৫)

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলা-বাঙালির প্রাচীন লোকসংস্কৃতি : বারো মাসের প্রভাব বিশ্লেষণ
পরবর্তী নিবন্ধসেন্ট্রাল পাবলিক স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান