জুম্‌’আর খুতবা

কুরআন ও হাদীসের আলোকে ইসলাম প্রসঙ্গ

অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি | শুক্রবার , ২২ নভেম্বর, ২০২৪ at ৭:০৯ পূর্বাহ্ণ

প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা, আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করুন, তাঁর প্রিয় রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র আনুগত্য করুন। জেনে রাখুন ইসলাম পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ জীবন বিধান, ইসলামী আদর্শ অনুসরণ ও বাস্তবায়নে রয়েছে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি। পক্ষান্তরে ইসলামের বিরোধীতায় রয়েছে লাঞ্চনা বঞ্চনা ও পরকালীন কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

ইসলাম অর্থ: ইসলাম শব্দটি সিলমুন ধাতু থেকে উদ্ভূত। বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রস্থ উমদাতুল কারী প্রণেতা আল্লামা বদরুদ্দীন আয়নী আল হানফী (.) (মৃ:৮৫৫হি.) এর মতে এর অর্থ আনুগত্য করা, আত্ন সমর্পন করা, বশ্যতা স্বীকার করা, শান্তির পথে চলা, শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, হযরত ইমাম আবু হানিফা (রা.)’র বর্ণনা মতে শরয়ী পরিভাষায় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ সমূহ মেনে নেওয়া ও মেনে চলাই হলো ইসলাম। ইমাম গাযালী (.) বর্ণনা করেন, আনুগত্য স্বীকার করা, অস্বীকৃতি ও হটকারিতা বর্জন করার নাম ইসলাম। (এহইয়াউ উলুমিদ্দিন ১ম খন্ড, পৃ: ২৩৭)

পবিত্র কুরআনের আলোকে ইসলামই আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ও পূর্ণাঙ্গ ধর্ম: ইসলাম বিশ্ব মানবজাতির শাশ্বত চিরন্তন ধর্ম। ইসলামের শাশ্বত বাণী ও উদাত্ত আহ্বান বিশ্বজনীন সার্বজনীন। জীবনের সকল অবস্থায় যুগোপযোগী আধুনিক ও পূর্ণাঙ্গ, যে ধর্মে রয়েছে ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের সার্বিক নির্দেশনা। যে ধর্মের আবেদন পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এটি মানুষের সৃষ্ট কোনো মতবাদ নয়, যিনি সমগ্র পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা পালনকর্তা রিযিকদাতা, বিধানদাতা, তাঁরই মনোনীত একমাত্র ধর্ম ইসলাম। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, ইসলামই আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত দ্বীন। (সূরা: আল ইমরান, আয়াত: ১৯)

আরবি ভাষায় “দ্বীন” শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে, এর বহুল ব্যবহৃত অর্থ হচ্ছে রীতি ও পদ্ধতি। আল কুরআনের মূলনীতি ও বিধি বিধানকে দ্বীন বলা হয়। পূর্ববর্তী নবী রাসূলগণের ইসলাম নির্দিষ্ট জাতি গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ কাল যুগের জন্য নির্দিষ্ট ছিলো। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রদত্ত সর্ব শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম কর্তৃক প্রচারিত ইসলাম নির্দিষ্ট কোন জাতি বা সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, নবীজির আনীত ইসলাম কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে। মহান আল্লাহ ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এরশাদ হয়েছে, “আজকের দিনে তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের উপর আমার নিয়ামত পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম। (সূরা: মায়েদা, আয়াত: )

মহান আল্লাহ কর্তৃক ইসলাম পূর্ণাঙ্গ দ্বীন হিসেবে বিঘোষিত হয়েছে, ইসলামকে আংশিক বা খন্ডিতভাবে গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই। ইসলামী জীবন বিধানে মানব জাতির জীবন ধারার সাথে সম্পর্কিত কোন বিষয় বাদ দেয়া হয়নি সমাজনীতি অর্থনীতি সমরনীতি রাষ্ট্রনীতি পররাষ্ট্রনীতি আমদানী নীতি রপ্তানী নীতি, বানিজ্য নীতি, স্বাস্থ্য নীতি, প্রতিটি দিক ও বিভাগের পরিচালনা ব্যবস্থাপনার ও কার্য প্রণালী আলোকপাত হয়েছে। মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার প্রদত্ত বিধানের বাইরে কখনো শান্তি মুক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত হতে পারেনা।

কাফির মুশরিকদের প্রবর্তিত মতবাদে বিশ্বময় অশান্তি বিরাজ করছে: কাফির মুশরিক ইয়াহুদী খৃষ্টানদের মুসলিম নিধন পরিকল্পনা থেমে নাই। পৃথিবীর বুক থেকে মুসলমানদের অস্তিত্ব নির্মূল করতে তারা সূদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। জালিম অত্যাচারী ইসরায়েলীদের বর্বোরোচিত হত্যাযজ্ঞে জাতিসংঘ, ওআইসি, আরবলীগ, অকার্যকর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা আজ দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট। ফিলিস্তিন লেবাননসহ পৃথিবীর অসংখ্য মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিটি জনপদ আজ রক্তে রঞ্জিত। মুসলিম বিশ্বের তাবেদার পদলেহী নেতৃত্ব ইসলামের ছদ্মাবরণে ইসলামের শত্রুদের নীল নকশা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মুসলিম উম্মাহর মেরুদন্ডহীন দূর্বল নেতৃত্ব আজ খোদাদ্রোহীদের মুকাবিলা দূরে থাক। নিজেদের অনৈক্য বিভক্তি বিভাজন ও মুনাফিকী চরিত্র ইসলাম বিদ্বেষীদের কর্মসূচিকে শক্তিশালী করছে। এমতাবস্থায় আল্লাহর নির্দেশিত রাসূলুল্লাহর প্রদর্শিত, সাহাবায়ে কেরামের অনুসৃত, ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদা বিশ্বাস চিন্তা চেতনা থেকে বিচ্যূৎ হয়ে বিকৃত মতবাদ প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা ইসলামকে কলুষিত ও কলংকিত করবে বৈ কি? আল্লাহ তা’আয়ালা এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য দ্বীন গ্রহণ করবে তার কাছ থেকে তা গ্রহণ করা হবে না। সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত। (সূরা: আলে ইমরান: আয়াত: ৮৫)

হাদীস শরীফের আলোকে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ: পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের উপর ইসলামের সুবিশাল ইমারত বিনির্মিত পঞ্চ বুনিয়াদের উপর ইসলামের ভিত্তি সুপ্রতিষ্ঠিত। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত। এ মর্মে সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনও মাবুদ নেই, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম তাঁর প্রিয় বান্দা ও প্রিয় রাসূল। নামায কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা, হজ্বব্রত পালন করা, রমজানের রোযা পালন করা। (বুখারী ও মুসলিম)

তিনটি বিষয়ে সন্তুষ্ট হলে ঈমানের স্বাদ পাবে: ঈমান মু’মিনের চেতনার বাতিঘর যা মুমিনের জীবনকে ধন্য করে, অন্তরাত্নাকে আলোকিত করে। তিনটি বিষয় অর্জিত হওয়ার পর নিজকে সৌভাগ্যবান মনে করতে পারলে তিনি ঈমানের স্বাদ অনুভব করতে সক্ষম হবে। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে, হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম এরশাদ করেছেন, ওই ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ উপভোগ করেছে, যে আল্লাহ কে রব, ইসলামকে দ্বীন এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লামকে রাসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছে। (মুসলিম শরীফ)

বর্ণিত হাদীসের ব্যাখ্যায় হাকীমুল উম্মত মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী (.) বর্ণনা করেন, আল্লাহকে রব হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট থাকার তাৎপর্য হলো তাকদীরের ফায়সালার ভাল মন্দ সুস্থতা অসুস্থতা সব বিষয়ে আল্লাহর চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের উপর সন্তুষ্ট থাকা, অসুস্থ ব্যক্তি অনিচ্ছা সত্ত্ব্বেও চিকিৎসকের তিক্ত ঔষধ গ্রহণ, সেবন এমনকি অপারেশনের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত মেনে নিতেও সন্তুষ্ট থাকেন কোন প্রকার আপত্তি করেন না। ইসলামকে দ্বীন হিসেবে সন্তুষ্ট থাকার অর্থ হলো, ইসলামের বিধিবিধান সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেওয়া। ইসলামী বিধিবিধান পালন অনুসরণ ও বাস্তবায়নে কোন প্রকার অভিযোগ আপত্তি ও সমালোচনা না করা। কোন বিষয়ে নিজ ধারণায় অকল্যাণকর ও ক্ষতিকর মনে হলেও প্রকৃত পক্ষে সেটাতে বান্দার কল্যাণ ও সাফল্য নিহিত রয়েছে মর্মে বিশ্বাস করা ও এতে সন্তুষ্ট থাকা। রাসূলুল্লাহর নবুওয়ত ও রিসালতের উপর সন্তুষ্ট থাকার মমার্থ হলো প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ অনুসরণ করা, তাঁর সুন্নাতগুলো আকড়িয়ে ধরা, তাঁর প্রতি সর্বোচ্চ ভালবাসা নিবেদন করা, তাঁর পবিত্র বংশধরগন ও তাঁর নুরানী পদধূলিতে ধন্য মদীনা মুনাওয়ারাহ কে ভালোবাসা এবং রাসূলুল্লাহর প্রতি সম্পর্কিত স্থান ও বস্তু সমূহকে বরকতময় মনে করা ও এ সবগুলোর প্রতি আদব সম্মান ও ভালোবাসা নিবেদন করা। (মিরাআতুল মানাজীহ ১ম খন্ড, পৃ:২৭)

পরস্পর সালাম বিনিময় করা ইসলামের উত্তম আমল: পারস্পরিক সালাম বিনিময় ইসলামের উত্তম শিষ্টাচারিতা। মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতির পরিচায়ক। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আরজ করলেন ইসলামে কোন কাজটি উত্তম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম বললেন, অপরকে খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত অপরিচিত সকলকে সালাম দিবে। (সহীহ বুখারী)

ইসলামে উত্তম পন্থা হলো মধ্যপন্থা: ইসলামের অনুসারী মুসলিম জাতিকে আল্লাহ তা’আলা মধ্য পন্থী জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন, “এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী জাতি করেছি।” (আল কুরআন, সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৬৪)

আরবি “আদল” ও “ইনসাফ” শব্দদ্বয়ের মধ্যেই ভারসাম্য ও মধ্যমপন্থার ধারণা বিদ্যমান। আদল অর্থ: ন্যায় বিচার, কোন কিছুকে যথাস্থানে রাখার নাম আদল বা সুবিচার। ইনসাফ অর্থ অর্ধেক করা অর্থাৎ সমান সমান। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচার কার্য পরিচালনা করবে তখন ন্যায় পরায়নতার সাথে বিচার করবে। (আল কুরআন, :৫৮)

নামাযের সময় ইমামের মধ্যপন্থা অবলম্বন: মধ্যপন্থা অবলম্বনের দৃষ্টান্ত নামাযেই বিদ্যমান। ইমাম নামাযে মধ্যখানে দাঁড়াবে। যাতে উভয়দিকে সমানভাবে আওয়াজ গুনতে পায়, সর্বোপরি ইমাম হলেন সমাজে ধর্মীয় নেতা তিনি সমাজের মধ্যমণি।

কিবলা স্থাপনে মধ্যপন্থা অবলম্বন: মহান আল্লাহর নির্দেশে মুসলামানদের কিবলা বায়তুল্লাহ শরীফ পৃথিবীর ঠিক মধ্যখানে স্থাপিত হয়েছে।

ইসলাম সহজ সরল উদার জীবনাদর্শ: উগ্রতা, রুষ্টতা, উত্তেজনা, বাড়াবাড়ি, অতিরঞ্জন, সীমালংঘন, ইসলামে গ্রাহ্য নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “সহজ করো” কঠিন করো না। ইসলাম প্রতিটি পর্যায়ে মধ্যপন্থা অবলম্বনের উপর গুরুত্বারোপ করেছে। এ প্রসঙ্গে কয়েকটি উদাহরণ উপস্থাপন করা সঙ্গ:ত মনে করি। ইয়াহুদী ধর্মে কাপড়ে পোশাকে ময়লা স্পর্শ হলে পবিত্রতার জন্য ময়লাযুক্ত কাপড়ের অংশ কেটে ফেলার বিধান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইসলামী বিধান হলো পবিত্র পানি দ্বারা ধৌত করলে ময়লাযুক্ত অপবিত্র কাপড় পবিত্র হয়ে যায়। এটা সহজ পন্থা ও মধ্য পন্থা। ইয়াহুদীদের ধর্ম মতে উপাসনালয় ব্যাতীত অন্য কোথাও তাদের উপাসনা গ্রহণযোগ্য হয় না, ইসলামে ইবাদতের জন্য মসজিদ শর্ত করা হয়নি, বরং মসজিদে আদায় অধিক ফযীলতের বর্ণনা রয়েছে, ভূপৃষ্টের যে কোন পবিত্র স্থানেই নামায আদায় করা যায় রাসূলুল্লাহ এরশাদ করেছেন, ভূপৃষ্টকে আমার জন্য মসজিদ ও পবিত্র করে দেয়া হয়েছে। (মুসলিম শরীফ)

ইসলামে যা কিছু পবিত্র ও হালাল তা খাদ্য বস্তু হিসেবে গ্রহণের অনুমতি রয়েছে। ইয়াহুদী ধর্ম মতে অনেক খাদ্য ও পানীয় হারাম। যেমন উটের মাংস, ইয়াহুদীরা আল্লাহ কর্তৃক হারামকৃত অনেক বিষয়কে নিজেদের জন্য হালাল করে নিয়েছে। ইসলামে আল্লাহ যা হারাম ঘোষণা করেছেন তা হারাম হিসেবে সাব্যস্ত, এটাকে হালাল ঘোষণার অধিকার কারো নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ইস্তিখারা করে সে ব্যর্থ হয় না, যে পরামর্শ করে সে লজ্জিত হয় না। আর যে মধ্য পন্থা অবলম্বন করে সে অভাবী হয় না। (মুসনাদু আহমদ, ১ম খন্ড, পৃ: ৪৪৭)

লেখক : অধ্যক্ষ, মাদরাসাএ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রি), বন্দর, চট্টগ্রাম; খতীব, কদম মোবারক শাহী মসজিদ।

 

মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন

অক্সিজেন, পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম।

প্রশ্ন: তিলাওয়াতে সিজদার নিয়ম ও বিধান সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে শরয়ী সমাধান জানালে উপকৃত হব।

উত্তর: পবিত্র কুরআনে চৌদ্দটি স্থানে সিজদার আয়াত রয়েছে। যা পড়লে বা শুনলে সিজদা ওয়াজিব হবে। সিজদার আয়াত লিখলে বা আয়াতের দিকে দেখলে সিজদাহ ওয়াজিব হবেনা। (আলমগীরি)

তিলাওয়াতে সিজদার জন্য শর্ত হলো পবিত্রতা অর্জন করা, কিবলা মুখী হওয়া, নিয়ত করা, সতর ঢাকা, পানি ব্যবহারে সক্ষম হলে তায়াম্মুম করে তিলাওয়াতে সিজদাহ করলে জায়েজ হবেনা। (দুরুল মোখতার, বাহারে শরীয়ত, ৪র্থ খন্ড, পৃ: ৯১), তিলাওয়াতে সিজদায় “আল্লাহ আকবর” বলার সময় হাত উঠাবেনা। তাশাহুদও পড়বেনা, সালামও ফিরাবে না। (তানভীরুল আবছার), নামাযে সিজদার আয়াত পড়লে নামাযেই সিজদা ওয়াজিব হবে। ইচ্ছাকৃত সিজদা না করলে গুনাহগার হবে। তাওবা অপরিহার্য। (বাহারে শরীয়ত, ৪র্থ খন্ড, পৃ: ৯৪)

পূর্ববর্তী নিবন্ধইসলামে আত্মশুদ্ধির ধারণা এবং তা চর্চার গুরুত্ব
পরবর্তী নিবন্ধস্মৃতির দর্পণে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী