বান্দরবানে পাহাড়ে জুমের ফসল ঘরে তোলার আনন্দে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর নবান্ন উৎসব হয়েছে। বছরের বাংলা অগ্রাহায়ন মাসের শুরুতে পাহাড়ের পল্লীগুলোতে নবান্ন উৎসবের ধুম লাগে। ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ভাষায় এই উৎসবকে বলা হয় মাইক্তা চাম পান্দা। গতকাল শুক্রবার সকালে বান্দরবান সদরের হাতির দাতভাঙ্গা পাড়া কমিউনিটি সেন্টারে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউটের পরিচালক মংনু চিং, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সি অং ম্রো, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ফজলুর রহমান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার অরূপ রতন সিংহ, আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে উৎসব আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা, জুমের নতুন ফসল দেবতার নামে উৎসর্গ, সম্মলিত প্রার্থনা, ত্রিপুরা সমপ্রদায়ের জুম চাষের সরঞ্জামাদি ও জুমের নতুন ফসল প্রদর্শন, নতুন ধানের পিঠা মেলা, ত্রিপুরাদের লোক সংগীত ও লোকনৃত্য প্রদর্শন করা হয়। ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর নিজস্ব পোষাক, অলংকার সাজসজ্জায় ঐতিহ্যবাহী নাচে গানে উৎসব মাতিয়ে তোলেন ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর তরুন–তরুনী এবং শিল্পীরা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর উৎসবগুলোই পার্বত্য চট্টগ্রামের অসামপ্রদায়িক সমপ্রীতির পরিচয় বহন করে। এখানের উৎসবগুলো পাহাড়ী বাংঙ্গালী উভয়ের মধ্যে ভাতৃত্বের বন্ধন অটুট রেখে সহাবস্থান নিশ্চিত করবে আগামীতেও। নবান্নের এই উৎসবে পাহাড় জুড়ে মুগ্ধতা ও আনন্দের জোয়ার বয়ে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউটের পরিচালক মংনু চিং জানান, বছরের বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতেই পাহাড়ে জুম চাষের বিভিন্ন ধরণের ফসল গড়ে তোলার আনন্দে নবান্ন উৎসবের আয়োজন চলে পাহাড় জুড়ে। পাহাড়ের জনগোষ্ঠীদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি কৃষ্টি কালচার সংরক্ষণে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট। পাহাড়ের গ্রামীণ জনপদে বৈচিত্রময় উৎসবগুলো আয়োজনেও সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে তারা।