রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাড়ে ৭শ অস্থায়ী গেইটকিপারের চাকরি আগামী জুনে (২০২৫ সালের) স্থায়ী হচ্ছে। রেল মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে এই ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে সাড়ে ৭শ অস্থায়ী গেইট কিপারের চাকরি স্থায়ীকরণের জোর প্রক্রিয়া চলছে। আগামী জুনে তাদের চাকরি স্থায়ী হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক। বর্তমানে প্রকল্পের অধীনে পূর্বাঞ্চলের সাড়ে ৭শ অস্থায়ী গেইটকিপার বিভিন্ন ক্রসিং এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন ২০১৭ সাল থেকে। অস্থায়ী গেইটকিপারদের চাকরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় তারা এতদিন প্রকল্পের অধীনে বেতন পেয়ে আসছে। প্রতি বছর প্রকল্প একনেকের সভায় অনুমোদনের পর তারা বেতন পেয়ে থাকেন। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মাস ধরে সাড়ে ৭শ অস্থায়ী গেইটকিপারের বেতন বকেয়া রয়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর একনেক সভায় ‘রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (চতুর্থ সংশোধিত) প্রকল্পটি’ এক বছরের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একনেকে অনুমোদনের পর অস্থায়ী গেইটকিপাররা তাদের বকেয়া ৬ মাসের বেতন এক সাথে পাবেন বলে জানান লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (চতুর্থ সংশোধিত) প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শেখ নাঈমুল হক।
জানা গেছে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে স্থায়ী গেইট কিপারদের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্রসিংয়ে আরো সাড়ে ৭শ অস্থায়ী গেইট কিপার দায়িত্ব পালন করে আসছে ২০১৭ সাল থেকে। তাদের চাকরি স্থায়ী করণের জন্য দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে তারা। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করার কারণে এই অভিজ্ঞ গেইট কিপারদের চাকরি স্থায়ীকরণে রেল কর্তৃপক্ষও উদ্যোগী হয়ে উঠে।
এই ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (চতুর্থ সংশোধিত) প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শেখ নাঈমুল হক আজাদীকে বলেন, পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (চতুর্থ সংশোধিত) প্রকল্প আরও এক বছরের জন্য গত ২৩ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদন হয়েছে। পূর্বাঞ্চলে বর্তমানে সাড়ে ৭শ অস্থায়ী গেইটকিপার রয়েছে। তারা ২০১৭ সাল থেকে এই অস্থায়ী গেইট কিপাররা প্রকল্পের অধীনে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন ক্রসিংয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে নেয়ার চেষ্টা চলছে। তারা এতদিন প্রকল্পের অধীনে কাজ করে আসছে। রাজস্ব খাতে না যাওয়া পর্যন্ত প্রতি বছরের বেতন এভাবে একনেকে পাস হতে হয়। প্রকল্পের অধীনে ওদের বেতন সরকার রেল মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন খাত থেকে থোক বরাদ্দ হিসেবে দিয়ে থাকে। এক বছরে সড়ে ৭শ অস্থায়ী গেইট কিপারের বেতন বাবদ ১৪ কোটি টাকা লাগে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শেখ নাঈমুল হক। তিনি বলেন, প্রতি মাসে তাদের বেতন বাবদ ১ কোটির উপরে লাগে। সিটি এলাকায় দায়িত্ব পালনরত অস্থায়ী গেইট কিপারদের মাসিক বেতন ১৪ হাজার ৯৫০ টাকা। আর সিটির বাইরে দায়িত্ব পালনরত অস্থায়ী গেইট কিপারদের মাসিক বেতন ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা। এই অস্থায়ী সড়ে ৭শ অস্থায়ী গেইট কিপারের ৬ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এখন প্রকল্পে অনুমোদন হওয়ায় তারা ৬ মাসের বেতন এক সাথে পাবেন।
অস্থায়ী গেইট কিপারদের চাকরি এখন স্থায়ীকরণের প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শেখ নাঈমুল হক বলেন, ২০২৫ সালের জুনে তাদের চাকরি স্থায়ী হয়ে যাবে। আমরা অনেকদিন থেকে চেষ্টা করছি তাদের স্থায়ীকরণের ব্যাপারে। অস্থায়ী কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এখানে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত থাকে, তারপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত থাকে। চাকরি স্থায়ী হলে তারা ২০তম গ্রেডে বেতন ভাতা পাবেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর একনেক সভায় পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পটিও অনুমোদিত হয়।