আগামী জুনেই চালু হচ্ছে বহুল প্রত্যাশার পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল বা পিসিটি। চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই টার্মিনালটি চালু হলে বছরে সাড়ে চার লাখ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং করা যাবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান গতকাল উপরোক্ত তথ্য প্রকাশ করে বলেছেন, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের বাড়তি চাহিদা মোকাবেলা করতে পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি গতকাল (রোববার) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত, ইতালির রাষ্ট্রদূত ও বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ভয়াল করোনা মহামারীর সংকটময় সময়ের মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর শতভাগ কাজ চালিয়ে গেছে। আমাদের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী
করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তারপরও নানা প্রতিকূলতার মধ্যে শতভাগ কাজ চালিয়ে যেতে বন্দর বদ্ধ পরিকর। বর্তমানে বন্দরে ৫০ হাজার টিইইউএস কন্টেনার রাখার ধারণক্ষমতা আছে। তবে আজ ইয়ার্ডে ৩৯ হাজার টিইইউএস কন্টেনার রয়েছে। অর্থাৎ বন্দরে এখন কোনো কন্টেনার জট নেই।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে-টার্মিনাল ও পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল চালু হলে বন্দরে কন্টেনার রাখার ধারণক্ষমতার পাশাপাশি কাজের সক্ষমতা আরো বাড়বে।
মতবিনিময় সভায় ইতালির রাষ্ট্রদূত এইচ ই এনরিকো নানজিয়াটা বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের জনপ্রিয়তা রয়েছে। চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে জাহাজ চালু হয়েছে, এটা দু’দেশেরই বাণিজ্যিক প্রসারতার বড় সুযোগ। আমি মনে করি বাণিজ্যের পাশাপাশি দু’দেশের সুসম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এইচ ই চার্লস স্টুয়ার্ড হুইটলে বলেন, প্রথমবারের মত চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে পোশাক পণ্য নিয়ে জাহাজ চলাচল করবে, এর মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি হবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রশংসা রয়েছে। করোনার কারণে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, পোশাক খাতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনীতির উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার অনেকগুলো মেগাপ্রকল্প হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে, অর্থনৈতিকভাবে আরো শক্তিশালী হবে। আমরা বাণিজ্যিকভাবে এর অংশীদার হতে পেরে আনন্দিত ও গর্বিত।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক খাতের অগ্রগতিতে বিজিএমইএ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কাজের মান, নকশাসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের তৈরি পোশাকের চাহিদা রয়েছে। এটি ধরে রাখতেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশিয় জিডিপি বৃদ্ধিতে গার্মেন্টস সেক্টর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা আশা করি আমাদের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে পোশাক খাত আরো এগিয়ে যাবে।
মতবিনিময় সভায় বিজিএমইএর প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক মো. এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী, এএম শফিউল করিম (খোকন), মো. হাসান (জ্যাকি), এম এহসানুল হক ও মোহাম্মদ মিরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার) প্রমুখ।