জীর্ণ নাজিরহাট পুরাতন হালদা সেতু নির্মাণ কবে

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলার দুঃখখ্যাত ৯২ বছরের পুরনো হালদা নদীর উপর নির্মিত নাজিরহাট পুরাতন সেতু। ১৯৩০ সালে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে লক্ষ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা সেতুটি দ্রুত পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি পুনঃনির্মাণের নথি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিইিডি) প্রধান কার্যালয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রাম শহর থেকে নাজিরহাট হয়ে খাগড়াছড়ি পৌঁছার অন্যতম মাধ্যম ছিল সেতুটি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী সেতুটির পশ্চিম অংশ বোমায় গুঁড়িয়ে দেয়। স্বাধীনতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোগিতায় সেতুটি সংস্কার করা হয়।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, একসময় চট্টগ্রামখাগড়াছড়ি সড়কের সব যানবাহন পুরাতন হালদা সেতু দিয়ে চলাচল করত। তবে এর পৌনে এক কিলোমিটার দূরে ১৯৮৯ সালে নতুন হালদা সেতু তৈরি হওয়ায় ভারী যানবাহন ওই সেতু দিয়ে চলাচল করে। বর্তমানে হাটহাজারী উপজেলা ও ফটিকছড়ির সুয়াবিল এলাকার মানুষ এই সেতু দিয়ে নাজিরহাট বাজারে আসে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এ সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল করে না। শুধু মোটরসাইকেল ও সাইকেল চলে। ১৯৯৪ সালে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। প্রায় ১৪ বছর আগে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে সর্বশেষ এটি মেরামত করা হয়। বর্তমানে সেতুর মুখে সাইনবোর্ড দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসন।

নাজিরহাট পৌরসভার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ও আলী নেওয়াজসহ কয়েকজন জানান, কয়েক বছর আগে এলজিইডির ঊর্ধ্বতনরা পরিদর্শন ও মাটি পরীক্ষা করে গেলেও সেতু নির্মাণে কোনো অগ্রগতি দেখছি না।

নাজিরহাট পৌরসভা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাজিরহাট বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, নাজিরহাট জেএম আহমদিয়া কামিল মাদ্রাসা, নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা, নাজিরহাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, নাজিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ছাড়াও নাজিরহাটে আসাযাওয়া করে হাজারো মানুষ। সেতুটিতে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, নাজিরহাট বাজারের অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতা হালদার পশ্চিম পাড়ের বাসিন্দা। পুরাতন সেতুটির মাঝখানে তিন ফুটের মতো দুই বছর আগে দেবে যায়। তখন প্রশাসন এটি বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে আবার চালু করে। সেতুটি দ্রুত পুনঃনির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

ফটিকছড়ি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, নাজিরহাট পুরাতন হালদা সেতুটি বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এটি ভেঙে ৯৬ মিটার দীর্ঘ নতুন সেতু তৈরির জন্য আমরা সয়েল টেস্ট সম্পন্ন করেছি। এলজিইডির সেতু প্রকল্পের একটি টিম এটি পরিদর্শন করেছে। এই সেতুর নথিটি এখন আমাদের প্রধান কার্যালয়ে আছে বলে জানি।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, ব্রিটিশপাকিস্তানবাংলাদেশ তিন আমলের নাজিরহাট পুরাতন হালদা সেতু। দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুই পাড়ের মানুষ। সেতুটির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সময় খোঁজ নিয়েছি। আবারও খোঁজ নেব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআর্জেন্টিনা আসতে পারে জুনে আলোচনা চলছে
পরবর্তী নিবন্ধ৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় ব্যবসায়ী কারাগারে