জীববৈচিত্র্যের বিশ্ব পরিবেশ

ড. মুহাম্মদ ইদ্রিস আলি | মঙ্গলবার , ৬ জুলাই, ২০২১ at ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রাক্কালে বিপর্যস্ত বিশ্বে মৃত্যুময় বিভীষিকার আহাজারি বিশ্বময়। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বৃদ্ধির মানবীয় শঙ্কাগুলোকে পাশ কাটিয়ে কোভিড-১৯ নামের ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী জীবাণু তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে মানুষের প্রাণকে। উত্তর থেকে দক্ষিণে, পূর্ব থেকে পশ্চিমে, অগ্নি-ঈশান-বায়ু সব কোণে। মানুষের প্রাণ সংহার করছে, মানুষকে ঘরবদ্ধ করছে। পরিবেশের প্রতিক্রিয়ার চরম বাস্তবতা আজ মঞ্চায়ন হচ্ছে। জীবনের পৃথিবী আজ প্রাণঘাতী জীবাণুর পৃথিবী। অঙিজেনের পৃথিবী আজ কার্বন ডাই-অঙাইডের পৃথিবী। মৃদুমন্দ বাতাসের পৃথিবী আজ জীবনঘাতী গ্যাসের পৃথিবী। পানির পৃথিবী আজ অম্ল-ক্ষারক আর দূষকের পৃথিবী। প্রাণের সবুজ পৃথিবী আজ মৃত্যুময় বিভীষিকার পৃথিবী। মানুষের পৃথিবী আজ করোনা, কোভিড-১৯ এর বহুমাত্রিক উৎকণ্ঠার পৃথিবী।
মাটির পৃথিবীতে মাটির দূষণ, সবুজের পীড়ন, বাতাসে বেসাতি, রসায়ন বিষে বিষময় ট্রপোস্ফিয়ার, স্ট্রাটোস্ফিয়ার। জীবাশ্ম জ্বালানির জীবনঘাতী পদচারণা। তাপমাত্রার উষ্ণ উনুন বিশ্ব। উষ্ণায়নের বিশ্বায়ন প্রাণ-সবুজের উনুনঘর। নদী-নালা সাগরের পানিতে বিষ, অম্ল বিষ, রসায়ন বিষ। বিষণ্ন ঋতু বৈচিত্র্য- শীত-গরম বর্ষা, বসন্ত। অত্যাসন্ন পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে উদ্বিগ্ন পৃথিবীর বিষণ্ন মানুষগুলো সমৃদ্ধ, সুখী, বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য দারুণ ভাবে চিন্তিত। তারা পথ খোঁজার চেষ্টা করছে। প্রায় অর্ধশতাব্দীর পথচলা এভাবেই শিল্পবিপ্লবকে ঠিকানা ধরে তারা তুলনামূলকভাবে পথ চলে। পথিকের অমনোযোগিতা, অন্যমনস্কতা, অপরকে ডিঙিয়ে যাওয়ার বাসনা প্রভৃতি বাস্তবতাকে নিয়ে পথ চলতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছা সুদূরপ্রসারী হয়ে যায়। তারই ধারাবাহিকতা অব্যাহত, ক্রমাগতভাবে।
প্রায় অর্ধশতক যাবত বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে দেশে দেশে। পৃথিবীর প্রায় দেড়শ দেশে একযোগে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হয়। বিভিন্ন বছরের বিভিন্ন বিষয়ে মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করা হয়। মানুষের মাঝে চেতনা সৃষ্টির জন্য, পরিবেশ ভাবনা সৃষ্টির জন্য, পরিবেশ সংবেদনশীলতা সৃষ্টির জন্য।
এবারের এ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বাস্তুতান্ত্রিকতার পুনরুদ্ধার। সকল প্রকার বাস্তুতান্ত্রিকতার পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষা। বৈচিত্র্যময় জীব-উদ্ভিদের বৈচিত্র্যপূর্ণ গ্রহ পৃথিবী। বনে-বাঁদাড়ে, পাহাড়ে-পর্বতে, সাগরে-নদীতে, আকাশে-বাতাসে প্রাণের এই বৈচিত্র্য। এই বৈচিত্র্যের মাঝেই বিনাশী মানুষের বৈচিত্র্যময় বাস। জীবন চর্চা। সংরক্ষণের পরিবর্তে বিনাশ, কৃতঘ্নতা, গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যায়। গত প্রায় ৫০ বছরে পৃথিবীর শক্তি-সম্পদ-সম্ভার, প্রাণপ্রজাতি মানুষের দ্বারা যেভাবে নিঃশেষিত হয়েছে, পৃথিবীর ইতিহাসের অতীতে সামগ্রিক সময়েও তা হয়নি। অথচ গত প্রায় ৫০ বছর যাবত পৃথিবীর পরিবেশ নিয়ে মানুষ যথেষ্ট সোচ্চার।
প্রাণবায়ু বাতাসের কথাই যদি আমরা ভাবি, যে চিত্র আমাদের সামনে উঠে আসে, তা রীতিমতো জীবনের জন্য ভয়ঙ্কর। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে পৃথিবীতে প্রতি ১০ জন মানুষের ৯ জনই প্রাত্যহিক দূষিত বায়ু সেবন করে চলছে। পৃথিবীতে দেশ দেশে বিশুদ্ধ অঙিজেনের বড়ই অভাব। সবুজ বিনাশী পৃথিবীতে আশি ভাগ সবুজ বন বিভিন্ন প্রজাতিসহ নিশ্চিহ্ন হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রতি বছর ৫০ মিলিয়নের উপরে রেইন ফরেস্ট ধ্বংস করা হচ্ছে। পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন বন আর ভবিষ্যতের জন্য টিকে থাকতে পারছে না।
অথচ এমন হিসাবও আমাদের সামনে যে, আমরা যদি দৈনন্দিন ব্যবহার্য কাগজকে পুনঃচক্রায়নের মাধ্যমে পুনর্বার ব্যবহার করি, তবে খুব সহজভাবেই দিনে পঁচাত্তর হাজার সবুজ গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি। তেমনি আমাদের টিস্যু, টয়লেট কাগজের বিকল্প ব্যবহারে আমরা প্রতিদিন সাতাশ হাজার গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি। এ বাঁচিয়ে রাখার মাধ্যমে নিজেরা বিশুদ্ধ অঙিজেন পেতে পারি, বেঁচে থাকতে পারি, ভবিষ্যতকে নিরাপদ করতে পারি। আমরা কি তা ভাবছি? অঙিজেন তৈরির কারখানা ফুসফুসে করাত চালিয়ে অথবা আগুন ধরিয়ে আমরা কীভাবে নিজেদের বেঁচে থাকাকে কল্পনা করতে পারি? বাস্তুতান্ত্রিকতার উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা এখন আর পুঁথিগত জ্ঞান নয়। বাস্তুতান্ত্রিকতা ধ্বংসের মধ্য দিয়ে আমরা প্রাণের পৃথিবী থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতিকে নিশ্চিহ্ন করছি। প্রতি বছরই আমাদের প্লাস্টিক দূষণে সাগরের লক্ষাধিক কচ্ছপজাতীয় প্রাণী জীবন হারাচ্ছে। আমাদের প্রাণের পৃথিবীকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। সকল প্রকার বাস্তুতান্ত্রিকতাকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। জীব, জল, জড় এবং জেনারেশনকে পুনরুদ্ধার করতে হবে।
আমরাই আমাদের সুখ ও শখের জীবনযাত্রা নির্বাহ করতে প্রতিদিন গড়ে দুই কেজি করে বর্জ্য উৎপন্ন করছি। প্রতিটি মানুষই প্রতিদিনের বর্জ্য উৎপাদক। কঠিন, তরল, গ্যাসীয় বর্জ্যের উৎপাদক মানুষের শরীর, জীবনাচার। মানুষের একমাত্র গ্রহে মানুষ প্রতিবছর প্রায় ৮ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অঙাইড উৎপন্ন করে বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে। বাতাসকে দূষিত করছে। যে বাতাসই তার বেঁচে থাকার প্রাণ বায়ু, বেঁচে থাকার প্রাকৃতিক জ্বালানি।
একদিকে পৃথিবীতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মানুষের প্রবৃদ্ধি ঘটছে, অন্যদিকে পৃথিবী ক্রমেই জীবনের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। জন্মহারের বর্তমান প্রক্রিয়া ধারাবাহিক থাকলে ২০৫০ সালের ভিতর বর্তমান অবস্থার জীবনযাপনের জন্য আরও তিনটি পৃথিবীর প্রয়োজন। তা কি বাস্তবে সম্ভব? ব্যবহার্য পরিবেশ-প্রতিবেশ সামগ্রিকের ব্যবহারের পদ্ধতি থাকলেও আমরা তাতে অভ্যস্ত নই। অথচ আমাদের ব্যবহার্য সবকিছুর নব্বই ভাগকে রিসাইকেল করে পুনরায় ব্যবহারের জন্য উপযোগী করা যায়। এতে পরিবেশ-প্রতিবেশ যেমন সুরক্ষিত হয়, তেমনি জীবনও নিরাপদ হয়। আমরা সে পথে যাইনি।
জীবের বৈচিত্র্য পৃথিবীর বৈচিত্র্য। জীবের বৈচিত্র্য প্রাণের বৈচিত্র্য। বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে বৈচিত্র্যের বিস্তৃতি, ব্যাপকতা এবং প্রাণবন্ততা পৃথিবীর প্রাণ। প্রাণের গ্রহ পৃথিবীর প্রাণ জীববৈচিত্র্য। জীবের এই বৈচিত্র্য পৃথিবীকে অন্য গ্রহ থেকে আলাদা করেছে। পৃথিবীর জীবনের প্রাণবন্ততাকে সজীব রাখতে, জীবন্ত রাখতে পৃথিবীতে অপরাপর প্রাণগুলো, জীবনগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়ার দরকার। পৃথিবীই প্রাণের একমাত্র গ্রহ।
মহাবিশ্বের মহাবিশ্বয় গ্রহ পৃথিবী। সাগর নদী, মাটি পাহাড়, প্রাণবৈচিত্র্যের পৃথিবী। প্রাণ ও উদ্ভিদের, সবুজ ও সম্ভারের, জল ও জ্বালানির, প্রাণ ও প্রাণীর, তিয়াস ও পিয়াসের, তাপ ও তপস্যার, বারি ও বরিসনের, আঁধার ও আলোর, বায়ু ও আয়ুর, সাধ ও সাধনা, রজনী ও জননীর, মায়াময় গ্রহ এ পৃথিবী। রূপে- রসে, গন্ধে বন্ধে, স্নেহ- মায়া- মমতা, প্রকৃতির প্রতিকূলতায় মানুষের লোভ লালসা, অংশীজনের লোভাতুর বিড়ম্বনা ও বিষাদে, আড়ম্বর ও আশাদের, আবহাওয়া তাপমাত্রার, বহুমাত্রিকতায় পরিপূর্ণ এ পৃথিবী।
বৈচিত্র্যের সম্ভার, বিড়ম্বনার আধার, বিষাদের গহ্বর। প্রাণবৈচিত্র্যের নির্ভরতা থেকে জীবন-জীবিকার বিড়ম্বনায় পরিপূর্ণ এ পৃথিবী। জীববৈচিত্র্যের বিনাশ, অস্থিত্বের বিনাশ। এটি রোধ করতে হবে।
আমাদের এই পৃথিবী জীবনের একমাত্র গ্রহ। জীবিকার একমাত্র নির্ভরতা। আলো-বাতাসের সহনশীলতার একমাত্র আবাসস্থল। মানুষের লোভ-লালসা সুকীর্তি, কুকীর্তি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিপজ্জনক কুরুক্ষেত্র এই পৃথিবী। আহামরি, বাহাদুরী, অভিনয়, অতিশয় মানবীয় সুকর্ম কুকর্মের ক্ষেত্রমঞ্চ এ পৃথিবী। হাজার বছরের ভাঙ্গা-গড়ার, অর্জন-বিসর্জনের, অশ্রু-কান্নার, ইতিহাস-ঐতিহ্যের লালন ক্ষেত্র এই পৃথিবী। কাম-কর্ম বিপর্যয়ের ভারে বিপদগ্রস্ত এ পৃথিবী। বয়সের চেয়েও বয়স্ক। বর্তমান পৃথিবীতে জীবনের জন্য চরম সংকট সৃষ্টি মানুষের কার্যকলাপেই সাধিত হয়েছে। বন উজাড়করণ, জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক বিনাশ, পৃথিবীর উষ্ণায়ন, ওজোনস্তরের ব্যাপক ক্ষতি, মরুময়তা এবং পৃথিবীব্যাপী বাতাসে, স্থলে, জলে, অন্তরীক্ষে বহুমাত্রিক আবর্জনার দূষণ।
পৃথিবীতে প্রাণের পরশ, ঘ্রাণের পরশ, জীবনের পরশ বিপদসংকুল, বিপদাপন্ন। জীবনের টেকসই প্রতিপালনের স্বার্থেই এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। ভোগে, বিলাসে, জীবনাচারে পৃথিবীর সম্পদ-সম্ভারের প্রতি সংবেদনশীল হতে হবে। শত্রুতা মানস পরিহার করতে হবে। বহুমাত্রিক আবর্জনার দূষণ জীবনের স্বাচ্ছন্দকে টুটি চেপে ধরেছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
আমরা ব্যাপক ভাবে সবুজ নিধন করেছি। সবুজের একমাত্র গ্রহ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীকে নির্মূল করার নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়ায় নিবিঢ় ভাবে ব্যস্ত আমরা। জীবাশ্ম জ্বালানির উনুন গ্রহে ৮১% জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হচ্ছে। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে বাতাসে কার্বনের পরিমান ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বহুমাত্রার সংকটের জন্ম দিয়েছে। শিল্পোন্নত দেশগুলো কোন ভাবেই তাদের সংযত করতে এগিয়ে আসছে না। ২০৩০ সালের ভিতর যে পরিমান জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর কথা, বর্তমান বিশ্ব তার চেয়ে ১২০% বেশি ব্যবহার করে চলেছে। মানুষের ক্ষুধা-দারিদ্রকে জিম্মি করে এ সব করা হচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে। কিয়োটো প্রটোকলের শর্ত না মানার অপরাধবোধ উন্নত দেশগুলোকে ভাবিত করেনি। এমন অবস্থায় ২০১৫ সালে উঠিয়ে দেয়া হয় ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন বা এনডিসি। ঐচ্ছিক অপশন দিয়ে ২০৩০ সালের ভিতর পৃথিবীর দেশসমূহকে গ্রীনহাউজ গ্যাস কমাতে বলা হয়েছে। প্রতিটি দেশ নিজেরাই তাদের গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গমনের লেভেল ঠিক করবে। গত পাঁচ বছরে কাজের কাজ কিছু হয়নি। সদিচ্ছার প্রকাশ কেউ ঘটায়নি। উন্নত দেশগুলো এখনও এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ২০২০ সাল পর্যন্ত দুইশত দেশের মধ্যে মাত্র পঁচাত্তর দেশ এনডিসি দাখিল করেছে। অতিমাত্রায় কার্বন নি:সরণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ভারত। অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। অনেকেই আবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছে। চীন চায় ২০৬০ সালের ভিতর কার্বনের নি:সরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ সময়ে ৫৫% এবং যুক্তরাজ্য ৬৮% নি:সরণ কমানোর কথা বলেছে। মনে করা হয় সকল দেশ আন্তরিক হলে, ২০৩০ এর মধ্যে ১% কার্বন নি:সরণ কমানো সম্ভব হতো। আর এ ভাবেই ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নি:সরণ শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হতো। ধনী দেশগুলো বারবার তাদের প্রতিশ্রুতি ভাঙছে সকল ক্ষেত্রেই। এমন প্রেক্ষিতে বাস্তুতান্ত্রিকতার পুনরুদ্ধার কতটুকু বাস্তবে কার্যকর হবে তা ভাবার বিষয়।
বিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের পরিমাণ বর্তমানে ৮১%। এটি কমছে না। এখান থেকে দরিদ্র দেশগুলোকে বের করে আনতে ধনী দেশগুলোর যে প্রতিশ্রুতি, তা রাখা হচ্ছে না। অবশ্য কপ-২৬ এর সভাপতি, যুক্তরাজ্যের জলবায়ু মন্ত্রী ২০২১ সাল শেষে জীবাশ্ম জ্বালানিতে আর কোন বিনিয়োগ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাস্তুতান্ত্রিকতাকে পুনরুদ্ধার করতে হলে নিধন চর্চা বন্ধ করতে হবে। পৃথিবীর উষ্ণায়নকে কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দনকে টিকিয়ে রাখতে হলে, জীব ও জড় স্বাতন্ত্র্যবোধকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
সর্বোপরি প্রাণের পৃথিবীতে আগামী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ, টেকসই জীবনের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য আমাদের পুরনো সব অভ্যাসকে, পথ ও পদ্ধতিকে, জীবনাচার থেকে বাদ দিতে হবে। এ ভাবেই নতুন পথের যাত্রা শুরু করতে হবে। আসুন আমরা আমাদের পরিবর্তন করি। পৃথিবীকে তার সকল প্রকার বাস্তুতান্ত্রিকতাকে পুনরুদ্ধার করে জীবনের কাছে জীবনকে, প্রজাতির কাছে প্রজাতিকে ফিরিয়ে দিতে কাজ করি।
লেখক : মুক্তিযোদ্ধা, কর্ণফুলি গবেষক, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ অধ্যয়ন কেন্দ্রের প্রধান সমন্বয়ক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাবল টেলিস্কোপ : বিদায়ী লাল সালাম
পরবর্তী নিবন্ধভূগোলের গোল