জীবন : হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ!

ইসমত আরা | বুধবার , ২৪ জুলাই, ২০২৪ at ৩:১৯ অপরাহ্ণ

চাওয়াপাওয়া, তৃপ্তিঅতৃপ্তির অপূর্ব সমাহারের নাম জীবন। হাজারো বিচিত্র ঘটনা প্রবাহের সমন্বয়ে লিখিত এক একটা ইতিহাস। কিন্তু জীবন ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায় সুখপাঠ্য নয়। কোথাও আলো ঝলমলে প্রভাতের মতো স্নিগ্ধ, সরল, সমৃদ্ধ। কোথাও কালবৈশাখীর উন্মাতাল ঝড়োহাওয়ার দুমড়ে মুচড়ে দেয়া ধ্বংসাত্মক মধ্যাহ্নের মতো করুণ। কখনও বা কলকল, ছলছল বয়ে চলা নদীর মতো। কোথাও অগুনিত ভয়ানক বাঁক, দুর্দান্ত চড়াইউতরাই বন্ধুর..! জীবন কখনো শ্রাবণের ধারায় প্লাবিত করা অকূল মেঘনা, কখনো বা দারুণ খরস্রোতা তটিনীর মতো। কখনো দিঘির নিটোল জলের মতোই শান্ত, স্নিগ্ধ, তরঙ্গহীন।

জীবন মানেই অনাকাঙ্ক্ষিত বালা মুসিবত, রোগশোক, উত্থানপতনের এক নিরবচ্ছিন্ন পরিক্রমা। সুখ দুঃখের খুনসুটিতে এই পৃথিবীতে মানুষের জীবনএক বিস্ময়কর সফর। যেমন রেলস্টেশন এর অগুণিত যাত্রী নিরন্তর অপেক্ষায় থাকে কখন আসবে ট্রেন। কেউ আসছে, কেউ যাচ্ছে যে যার মতো। নশ্বর এই পৃথিবীতে আমরাও সবাই অপেক্ষমাণ পথিকের মতো। ওপাড়ে পাড়ির ডাকের অপেক্ষায়। এই জাগতিক সফরে হর্ষবিষাদের খেলায় আমরা ক্রিড়নক মাত্র। প্রতিটি খারাপ মুহূর্তের পেছনে ঘাপটি মেরে বসে থাকে সুন্দর সময়ের সমষ্টি। বৈরী সময় সবসময় সুসময়ের পেছনে আড়িপেতে থাকে আচমকা হামলে পড়বে বলে। সুখ দুঃখের খুনসুটিতে পালাবদলের পরিক্রমা এ তো জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রয়োজন অসীম ধৈর্য আর প্রগাঢ় মনোবল। সুখ দুঃখের একচ্ছত্র আধিপত্য মানব জীবনে, এ অবাস্তব! বিপদাপদ দুঃখ কষ্ট আসবেই।

যখন কোনো মানুষের উপর বিপর্যয় আসে সেটা তার জন্য একটি পরীক্ষা। যারা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তারা জান্নাতে পুরস্কার পাবে ইনশাআল্লাহ্‌। তাই এই স্বল্প দৈর্ঘ্যের এই মানব জীবনে হতাশা, ভয়কে অগ্রাহ্য করে মনোবল সুদৃঢ় রেখে চলতে হবে। বিবেকবোধকে কাজে লাগিয়ে সাহসিকতার সাথে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাতে হবে। সব কষ্টের পর সুখ আসবেই, যেমন রাতের আঁধার শেষে ভোরের সূর্যোদয়।

ভয় মানুষকে দুর্বল করে তোলে। জীবন অনিশ্চিতমৃত্যুটা নিশ্চিত। তাই বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্তকে সৃষ্টিকর্তার নির্দেশনা মতো সুপথে পরিচালনা করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআতংকিত নাম ও ব্যাধি কিশোর গ্যাং
পরবর্তী নিবন্ধইচ্ছের প্রগাঢ়তায়